মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১২ অপরাহ্ন

পুরুষদের যৌন বাহিত রোগে হোমিওপ্যাথি ঔষধ

আরোগ্য হোমিও হল / ২৮৬ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশ কালঃ বৃহস্পতিবার, ৪ জানুয়ারী, ২০২৪, ১:৫৫ অপরাহ্ন

পুরুষদের যৌন বাহিত রোগে হোমিওপ্যাথি ঔষধ

আরোগ্য হোমিও হল এ সবাইকে স্বাগতম। আশা করছি, সবাই ভালো আছেন। আজ আমরা এখানে আলোচনা করবো পুরুষদের যৌন বাহিত রোগে হোমিওপ্যাথি ঔষধ কি তা নিয়ে আজকে জনবো, এটা সবার জানা জরুরী! তো আর কথা নয় – সরাসরি মূল আলোচনায়।

যৌন বাহিত রোগে হোমিও চিকিৎসা – Homeo treatment of STD (সেক্সুয়ালিট্রান্সমিটেডডিজিস (STD) অথবা যৌন বাহিত রোগ হলো সে সব সংক্রামক রোগ যেগুলো অনিরাপদ যৌন মিলনের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়ে থাকে। সেক্সুয়ালিট্রান্সমিটেডডিজিস মূলত বিভিন্ন ধরনের সংক্রামক ব্যাধি যা অনিরাপদ যৌন মিলনের মাধ্যমে একজন থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়ায়। সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিস বা সেক্সুয়ালিট্রান্সমিটেডডিজিস বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে।

আরও পড়ুন –    যৌন মিলনে নারীর সমস্যার ৫টি কারণ

এর কিছু প্রচলিত বা পরিচিত নাম হচ্ছে যেমন :
(ক) জেনিটাল থহার্পিস (Genital herpes)।
(খ) গনোরিয়া (Gonorrhoea)।
(গ) সিফিলিস (Syphilis)।
(ঘ) ক্ল্যামাইডিয়া (Clamaidya)।
(ঙ) এইচ, আই.ভি/এইডস (HIV)।
(চ) এইচ,পি,ভি (HPV)।
(ছ) হেপাটাইটিসথবি/সি (Hepatitis B / C)।

১০টি যৌন রোগ এবং সেগুলোর সামগ্রিক লক্ষন নিয়ে আলোচনা

যৌন রোগ বলতে অনেকেই এইডস রোগকে মনে করে। এটি ছাড়াও আরও বহু যৌনরোগ রয়েছে যা ঠিকমতো চিকিৎসা না- হলে জটিল আকার ধারণ করতে পারে। এই সব রোগে পুরুষ-মহিলা উভয়েই সমান ভাবে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এইডস সম্পর্কে কমবেশি আনারা সবাই জানেন। এখানে অন্যান্য যৌনরোগের নাম ও লক্ষণ নিয়ে বিষদ ভাবে আলোচনা:

(১) ক্ল্যামিডিয়া : ক্ল্যামিডিয়া একটি মূলত জীবাণু। যৌন মিলনের কারণে একজনের শরীর থেকে অন্যজনের শরীরে প্রবেশ করে। মার্কিন দেশগুলিতে সবচেয়ে বেশি মানুষ এতে আক্রান্ত। সে দেশে প্রতিবছরই ৩০ লক্ষ নারীপুরুষ ক্ল্যামিডিয়ায় আক্রান্ত হয়। ধীরে ধীরে অন্য দেশেও ছড়াচ্ছে পড়ে ক্ল্যামিডিয়া। ২৫ বছরের নীচে যারা, তারাইবেশি আক্রান্ত হয় ।

রারীর যোনাঙ্গ এবং পুরুষাঙ্গ থেকে অস্বাভাবিক ক্ষরণ এই রোগের লক্ষণ। গড়ে প্রায় ৫০ শতাংশ পুরুষ ও ৭০ শতাংশ নারীদের মধ্যে এই রোগ দেখা যায়। দ্রুত চিকিৎসা নিলে আরোগ্য করা সম্ভব। ক্ল্যামিডিয়ায় আক্রান্ত হলে খুব সহজেই অন্যান্য যৌনরোগ বাসা বাঁধে শরীরে। ক্ল্যামিডিয়া হলো ব্যাকটেরিয়ার হওয়ার ফলে এক ধরণের যৌন রোগ। এই রোগের উপসর্গ হলো পেটের নিচের অংশে অসহ্য যন্ত্রণা করে, প্রস্রাবের সময় যন্ত্রণা করে, যৌনাঙ্গ থেকে ক্রমাগত স্রাব নির্গত হতে থাকে, যৌনক্রিয়ার সময় যৌনাঙ্গে যন্ত্রণা করে ইত্যাদি।

কীভাবে বুঝবেন আপনি ক্ল্যামিডিয়া (Chlamydia) আক্রান্ত : যৌন সংক্রমণের বিষয়ে আমাদের দেশের মানুষের সচেতনা ও জ্ঞান কম, তাই অনেক যৌনরোগ সম্পর্কেই তাদের পরিষ্কার ধারণা নেই। সেই অজ্ঞতার কারণেই কিন্তু রোগ নির্মূল করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। অনেকেই মনে করেন এইচআইভি-ই একমাত্র যৌনরোগ।

(২) গনোরিয়া : গনোরিয়া হলো এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার প্রকোপে সৃষ্টি হওয়া যৌন রোগ। যা যৌনাঙ্গ, মুখ, চোখ, গলা ও অন্ত্রকে আক্রান্ত করে। ইহার উপসর্গ বেদনাদায়ক অন্ত্র, যৌনাঙ্গ থেকে রক্ত নির্গত হয়, প্রস্রাবের সময় জ্বালা-যন্ত্রণা করে, নারীর ক্ষেত্রে মাসিকের সমস্যা ইত্যাদি। ক্ল্যামিডিয়া এবং গনোরিয়া একই সঙ্গে হয়। যোনাঙ্গ বা পুরুষাঙ্গ থেকে অস্বাভাবিক ক্ষরণ হয়, মূত্রত্যাগ কলে যন্ত্রণা ইত্যাদি এই রোগের লক্ষণ। আপনি যদি চিকিৎসা না করান তবে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এই রোগ।

গনোরিয়া (Gonorrhea)  যৌন রোগের মধ্যে ব্যাপকভাবে সংক্রমণ রোগ। ইহা একটি অত্যান্ত ছোয়াচে রোগ এবং এর উৎপত্তি গনোক্কাস নামক জীবানুর দ্বারা এই রোগ হয়ে থাকে। ইহা সাধারনত জননেন্দ্রিয়কে আক্রমন করে। এই রোগের বিস্তার পুরুষের ক্ষেত্রে প্রষ্টেট গ্রন্থি মুত্রথলিকে আক্রমণ করে। এই রোগ প্রধানত যৌন মিলনের মাধ্যমে একজনের দেহ থেকে অন্যজনের দেহে সংক্রমন করে। এই রোগ সংক্রমণের সাধারনত ১ থেকে ১০ দিনের মধ্যে লক্ষন প্রকাশ পায়। প্রস্রাব করার সময় জ্বালা পোড়া করে ও প্রস্রাব নালীতে কিট কিট করে যন্ত্রণা করে।

(৩) যৌনাঙ্গে হার্পিস : জেনিটাল হারপিস সাধারণত খুব তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়ে। এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ। এই রোগের উপসর্গ হলো – নিতম্বে লাল লাল ফুসকুড়িতে ভরে যায়। আবার যৌনাঙ্গে একাধিক ফুসকুড়ি বের হয়, যৌনাঙ্গে জ্বালা ও চুলকুনি হয়। ৮০ শতাংশ মানুষে যৌনাঙ্গে হার্পিসে আক্রান্ত। তাঁরা জানেন না যে তাঁদের শরীর একটি বিশেষ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত। অজান্তেই তাঁরা সঙ্গী অথবা সঙ্গিনীর শরীরে সংক্রামিত করেছেন এই ভাইরাস। যৌনাঙ্গে ছোট ছোট ফোস্কার মতো র‌্যাশ দেখা দেওয়া এই রোগের লক্ষণ। ফোস্কা গুলো বের হওয়ার বেশ কয়েক ঘণ্টা আগে থেকে যৌনাঙ্গে চুলকানির অনুভূতি হয়। একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর বার বার র‌্যাশগুলি বের হয়।

আরও পড়ুন –   জেনিটাল হার্পিস মারাত্মক, মায়ের থেকে সন্তানেরও হতে পারে

(৪) সিফিলিস : ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবে সিফিলিস নামের যৌন রোগটি হতে পারে। এই রোগের কারণে যৌনাঙ্গ, ত্বক এবং শ্লেষ্মা উৎপাদনকারী গ্রন্থিকে আক্রান্ত করতে পারে। এর উপসর্গ হলো ত্বকে কালশিটে দাগ পড়ে, অ্যালার্জি, সবসময় ঘুম ঘুম ভাব, লিম্ফ নডের আকার বেড়ে যায়। বাড়াবাড়ি হলে এই রোগে রোগী অন্ধও হয়ে হতে পারে, অথবা শরীরের আংশিক পক্ষাঘাত হতে পারে। প্রাচীনকাল থেকে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে আসছে মানুষ। ঠিক সময়ে ধরা পড়লে সহজেই এই রোগ সারানো যায়। কিন্তু এই রোগ বেড়ে গেলে তা সাঙ্ঘাতিক যন্ত্রণাদায়ক। যৌনাঙ্গ, পায়ু ও মুখে আলসার হয়, এমনকী চোখেও। তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো প্রাথমিক অবস্থায় এই রোগের লক্ষণ শরীরে চট করে ধরা পড়ে না।

(৫) জনিটাল ওয়ার্ট : ভাইরাসের প্রভাবে নারীদের ক্ষেত্রে এই যৌনরোগের আধিক্য বেশি। তবে পুরষদেরও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে । মহিলাদের ক্ষেত্রে এই সংক্রমণ ক্রমেই সার্ভিকাল ক্যান্সারে পরিণত হতে পারে। এটি মূলত, যৌনাঙ্গ ফুলে যাওয়া, যৌনাঙ্গে একাধিক আঁচিল জন্মানো, যৌন মিলনকালে রক্তক্ষরণ, যৌনাঙ্গে অস্বস্তি বোধ ইত্যাদি লক্ষণ গুলি দেখা যায়।

(৬) হেপাটাইটিস বি : অনেকেই মনে করেন হয়তো হেপাটাইটিস একটি লিভারের রোগ, এটি যৌনরোগ নয়। কিন্তু আসলে এটি ভাইরাস বাহিত যৌন রোগ। এই রোগ সবক্ষেত্রে না হলেও তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ছোঁয়াচেও বটে। এই রোগের উপসর্গ গুলি হলো – প্রচন্ড ক্লান্তি, বমি বমি ভাব, খাওয়ার ইচ্ছে নষ্ট হয়ে যায়, জ্বর, গাঁটের ব্যথা ও ত্বকের অ্যালার্জি দেখা যায়। একই ভাবে ছড়াতে পারে হেপাটাইটিস “এ” ও হেপাটাইটিস “সি” তবে আক্রান্তর সংখ্যা খুবই কম। লিভার সংক্রান্ত জটিলতা, মূত্রের রং পরিবর্তন, গা বমি ভাব ইত্যাদি এই রোগের লক্ষণ ।

(৭) এইচআইভি ও এইডস : এইডস সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই। এইচআইভি/এইডস হলো সবচেয়ে ভয়ঙ্কর যৌনরোগ। এই রোগের চিকিৎসা নেই। কোন ব্যাক্তিকে যদি এইডস আক্রান্ত তবে তার মৃত্যু হতে পারে। এই রোগের উপসর্গ বলতে ক্লান্তি বোধ, কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা, চূড়ান্ত পেটের সমস্যা, মাথা যন্ত্রণা, সংক্রমণ, রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা ক্রমশ কমতে থাকা প্রভৃতি।

(৮) যৌন কেশে উকুন : যৌন কেশে উকুন খুব সাধারন একটি সমস্যা, তবে সতর্ক থাকা ভাল। মাথার চুলের মতো যৌনাঙ্গের কেশেও উকুন বাসা বাঁধে এবং যৌন মিলনের সময়ে তা অন্যের শরীরে সংক্রামিত হয়। যৌনাঙ্গের আশপাশে চুলকানির কারণে হতে পারে।

(৯) ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস : যোনি থেকে দুর্গন্ধ নিঃসরণ এই রোগের লক্ষণ। অন্যান্য রোগের তুলনায় এই রোগ খুব সহজেই ভাল হয়।

(১০) ট্রাইকোমোনিয়াসিস : যৌনাঙ্গ থেকে অস্বাভাবিক ক্ষরণ, যৌন মিলনের সময় যৌনাঙ্গে যন্ত্রণা এবং মূত্রত্যাগের সময় যন্ত্রণা এই রোগের লক্ষণ। এই সঠিক চিকিৎসায় দ্রুত সেরে যায়। উপরোক্ত রোগগুলো সম্পর্কে সাধারন ধারনা দেওয়ার চেস্টা করেছি। তবে চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রতিটি রোগ আলাদা আলাদা লক্ষণ প্রকাশ করে তাই চিকিৎসা পদ্ধতিও ও ঔষধ ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।

কীভাবে বুঝবেন সঙ্গীর ক্ল্যামিডিয়ায় আক্রান্ত : মূলত পুরুষরা যদি ক্ল্যামিডিয়ায় আক্রান্ত হয়ে থাকে। তাদের মধ্যে ৭০-৯৫ শতাংশ পুরুষের মধ্যে ক্ল্যামিডিয়ার কোনও উপসর্গ লক্ষ্য করা যায় না। সত্যি বলতে ক্ল্যামিডিয়ার তেমন কোনও উপসর্গই নেই। কোন নারী-পুরুষকে সংক্রমণের ৫-১০ দিনের মধ্যে বোঝাই যায় না আপনার শরীরে এর জীবাণু প্রবেশ করেছে। তবে কিছু কিছু লক্ষণের দিকে খেয়াল রাখা উচিত।

পুরুষ ক্ল্যামিডিয়ায় আক্রান্ত নির্নয় বুঝবেন :
(ক) প্রস্রাবের সময় পুরুষাঙ্গে যন্ত্রণা।
(খ) পুরুষাঙ্গ থেকে পুঁজ বের হয় ।
(গ) টেস্টিকলস্ বা শুক্রাণু ফুলে যায়।
(ঘ) মলদ্বার ফুলে যায়।

আররও পড়ুন –    পুরুষদের যৌনাঙ্গে হারপিসের হোমিওপ্যাথিক ঔষধ

পুরুষ-মহিলাদের মধ্যে কিছু কমন উপসর্গ আছে, জেনে নিন সেগুলি কী কী?
(১) আগেই বলেছি, মলদ্বার ফুলে যায়। সেই সঙ্গে চুলকুনি ও রক্তপাতও হতে পারে। আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে ডায়ারিয়াও হয়।
(২) ক্ল্যামিডিয়া চোখেও আক্রমণ করতে পারে, চোখ লাল হয়ে যেতে পারে। চুলকাতে পারে। চোখ থেকে জল ঝরতে পারে। গলায় যন্ত্রণা করে।

ক্ল্যামিডিয়া কি ভাবে ছড়ায় : ক্ল্যামিডিয়া ছড়ানোর প্রধান রাস্তা হল অনিরাপদ যৌন মিলন। তা সে যেই পদ্ধতিতে এবং যে রাস্তাতেই যৌন মিলন করুক না কেন। অনেক সময় যৌনাঙ্গ ক্ল্যামিডিয়া আক্রান্ত কোন যৌনাঙ্গের সংস্পর্শে আসলেই ক্ল্যামিডিয়া ছড়াতে পারে। এমনকি যৌনকার্যে ব্যবহৃত বস্তু দ্বারাও ক্ল্যামিডিয়া ছড়াতে পারে একজন থেকে আরেকজনের শরীরে।

ক্ল্যামিডিয়ার চিকিৎসা : এটা জেনে রাখা ভাল, ক্ল্যামিডিয়া সহজেই নির্মূল হয় না। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের নিয়ম মেনে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে। ক্ল্যামিডিয়া ৭ দিনে সারতে পারে। আবার সময় লেগে যেতে পারে।
(১) চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধ নিয়ম মেনে খেয়ে যেতে হবে। উপসর্গ চলে যাওয়ার পরেও শরীরে থেকে যেতে পারে রোগের জীবাণু। ফলে যতদিন না জীবাণুগুলো ধ্বংস হচ্ছে, ওষুধ বন্ধ করা যাবে না ।
(২) সঙ্গীর সঙ্গে যৌনমিলনের করার আগে পরীক্ষা করিয়ে নিন। নিশ্চিত হয়ে নিন সংক্রমণ পুরোপুরি চলে গেছে কিনা।
(৩) নিজের ওষুধ অন্য কারও সঙ্গে ভাগাভাগি করে সেনব না করা।
(৪) প্রতি ৩ মাস অন্তর পরীক্ষা করানো উচিত।

ক্ল্যামিডিয়ার প্রতিকার: যদি আপনার সঙ্গী ক্ল্যামিডিয়া আক্রন্ত হয় তবে সে পুরোপুরি সুস্থ না যাওয়া পর্যন্ত যৌন মিলন করা যাবে না। আর যদি যৌন মিলন করেন তবে তার থেকে আপনার শরীরেও ছড়াবে ক্ল্যামিডিয়ার জীবাণু। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই কন্ডোম ব্যবহার করতে পারেন। মহিলাদের জন্যেও বিশেষ ধরনের কন্ডোম পাওয়া যায়। যৌন মিলনের সময় সেটিও ব্যবহার করতে পারেন।

আরও পড়ুন –   পুরুষদের ক্ল্যামিডিয়া STD এর রোগ লক্ষণ, কারণ ও হোমিওপ্যাথি ঔষধ

ব্যালানাইটিস বা পেনাইলথইনফ্লামেশন কি? ব্যালানাইটিস বলতে সাধারণত গ¬ান্স পেনিসের (লিঙ্গের মাথার অংশ) প্রদাহকে বোঝানো হয়। আনসার্কামসাইল্ড (ফোরস্কিন অস্ত্রোপচার করে সরানো হয়নি) পুরুষদের ক্ষেত্রে খুব সাধারণ ঘটনা। যা খারাপ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অথবা ফোরস্কিনের নিচে ইস্ট ও অন্যান্য অণুজীব জমে যাওয়ার কারণে হয়। এর ফলে ব্যালানোপসথাইটিস (গ¬ান্স এবং ফোরস্কিনের প্রদাহ) হয়। এর ফলে পার্শ্ববর্তী পেনাইল টিস্যুর প্রদাহ বাড়ে। এটি সাধারণত ইমিউনোকম্প্রোমাইসড ব্যক্তি, বিশেষ করে যাদের এইচআইভি, ডায়াবেটিস এবং ক্যান্সার আছে তাদের মধ্যে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

পুরুষদের যৌন বাহিত রোগে হোমিওপ্যাথি

সাধারণত ব্যালানাইটিসে প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলো কি কি?
(১) চুলকানি।
(২) নরম ভাব।
(৩) আক্রান্ত জায়গায় ব্যথা।
(৪) বেদনাদায়ক ইরেক্শন।
(৫) লালভাব এবং ফুসকুড়িও ফোলাভাব।
(৬) তীব্র গন্ধ যুক্ত ডিসচার্জ ।

ব্যালানাইটিসে দেখা লক্ষণগুলি যেসব ক্ষেত্রে দেখা যায় সেগুলি হল: ফিমোসিস (ফোরস্কিনের শত্রুতা) প্যারাফিমোসিস (সরে যাওয়া ফোরস্কিনকে যখন তার আসল অবস্থায় টেনে নিয়ে যাওয়া যায় না) তীব্র গন্ধ যুক্ত ডিসচার্জ। এর প্রধান কারণ গুলো কি কি? এটি সাধারণত গ্লান্সের ত্বকে উপস্থিত অণুজীবদের অতিবৃদ্ধির কারণেই ঘটে। তবে উষ্ণ আর্দ্র পরিবেশ এইসব প্রাণীর বৃদ্ধির পরিবেশকে আরও উপযুক্ত করে তোলে। এটি মূলত ছত্রাক ক্যানডিডা অ্যালবিকান্স দ্বারা সংক্রমণের কারণেই হয়। ডায়াবেটিস ও কিছু চামড়ার রোগের ক্ষেত্রেও ব্যালানাইটিস হতে পারে। যা এটিকে আরও খারাপ পর্যায়ে নিয়ে যায়। অপরিষ্কার স্বাস্থ্যবিধির করণেও ব্যালানাইটিস হতে পারে। ফোরস্কিনের নিচে ঘাম, ব্যাকটেরিয়া, নোংরা এবং মৃত চামড়া জমে চুলকানি এবং অস্বস্তি বোধ করে। টাইট ফোরস্কিনের উপস্থিতি এই সমস্যাটিকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে, কারণ এটিকে ভাল ভাবে ধোয়া যায় না।

আর যে কারণগুলো হতে পারে :
(ক) ডার্মাটাইটিস/অ্যালার্জিক অবস্থা : সাবান, সুগন্ধি, ডিটার্জেন্টস ও স্পেরমিসাইডসের মধ্যে থাকা রাসায়নিকের জন্য ত্বকে প্রদাহ, যার ফলে ফুসকুড়ি ও অস্বস্তি হয়বোধ হয়।
(খ) সংক্রমণ : কিছু যৌন সংক্রামিত রোগ যেমন – গনোরিয়া, হারপিস এবং সিফিলিস ব্যালানাইটিসের মতো উপসর্গ দেখা যায়।

কিভাবে ব্যালানাইটিস  নির্ণয় :
(১) ক্লিনিকাল লক্ষণ : এরিথেমেটাস ফুসকুড়ি সঙ্গে চুলকানি এবং ব্যথা করে।
(২) চেহারা : লাল প্যাচ এবং তার সাথে ছোটো প্যাপুলা অথবা চকচকে কিন্তু ফ্যাকাসে লাল।

(৩) মাইক্রোস্কোপি : সংক্রমণের জন্য দায়ী জীবকে সনাক্ত করা।
(৪) ত্বকের বায়োপসি : শুধুমাত্র যদি রোগ নির্ণয় তবে অস্পষ্ট থাকে।
(৫) মূত্র বিশ্লেষণ : গ্লুকোজের উপস্থিতি পরীক্ষা করা উচিত।

নিজেকে যত্ন করার কিছু টিপস :
(ক) ব্যথা সম্পূর্ণরূপে না কমা পর্যন্ত, যৌন মিলন এবং হস্তমৈথুন এড়িয়ে চলুন।
প্রয়োজন হলে খাওয়া যেতে পারে এমন ব্যথা কমানোর ওষুধগুলির তালিকা তৈরি করুন।
.(খ) প্রদাহের জায়গাটায় বরফের প্যাক দিলে ব্যথা ও ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে।
(গ) মোটামুটি চাপা অন্তর্বাস ব্যথার জায়গাটায়একটি সাপোর্ট দিতে পারবে।
(ঘ) লিঙ্গের চারপাশে বা প্রস্রাবে কোন রক্তের চিহ্ন আছে কিনা পরীক্ষা করানো উচিত, কারণ এটি গুরুতর প্রদাহ এবং আঘাতের ইঙ্গিত দেয়, এই ক্ষেত্রে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।
(ঙ) সাবানের মতো প্রখর রাসায়নিক ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। সাবান মুক্ত জিনিস ব্যবহার করতে পারেন।
.(চ) জায়গাটি ভালো ভাবে পরিষ্কার করতে হবে, প্রস্রাব করার সময় ফোরস্কিন সরানোর চেষ্টা করুন যাতে করে ভবিষ্যতে সংক্রমণের আর কোনও সম্ভাবনা না থাকে।
(ছ) সাধারণত লক্ষণ দুর না হওয়া পর্যন্ত সঙ্গীদের চিকিৎসা চালিয়ে যান।

আরও পড়ুন –    যোনির ক্যান্ডিডায়াসিস বা সংক্রমণের ৫টি হোমিওপ্যাথিক ঔষধ

ব্যোলানাইটিস রোগের জন্য হোমিওপ্যাথি ঔুষধ :
(১) এভেনা স্যাটাইভা (Allium Sativa)।
(২) হিপার সালফার (Hepar Sulph)|
(৩) মোডোরিয়াম (Medorrhinum)|
(৪) মার্কিউরিয়াস (Mercurius)|
(৫) সেম্পারভিভাম টেক্টোরাম (Sempervivum Tectorum)।
(৬) সিফিলিনাম (Syphilinum)।
(৭) থুজা অক্সি (Thuja Occi)।

সিফিলিস রোগের লক্ষণ প্রতিরোধ :
(ক) যৌন সঙ্গীর সিফিলিস আছে কিনা তা নিশ্চিত হন।
(খ) সিফিলিস থাকলে অবশ্যই, জোর করে হলেও চিকিৎসা করাতে হবে।
(গ) সিফিলিস আক্রান্তদের সাথে কোন ধরনের যৌন মিলন করা যাবেন না। কনডম ব্যাবহার করেও না।
(ঘ) কমার্শিয়াল সেক্স ওয়ার্কারদের কাছে যাওয়া যবে না ।
(ঙ) রোগীকে ঘৃণা করবেন না, প্রয়োজনে রোগকে ঘৃণা করুন।
(চ) এই রোগ কোন ক্রমেই পুষে রাখা যাবে না।
(ছ) চিসিকের পরামর্শ ছাড়া কোন ওষুধ খাওয়া যাবে না।
আপনার যদি কোন রকম যৌন অথবা কোন গুপ্ত সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আমাদের সাথে নির্দ্বিধায় যোগাযোগ অথবা কথা করতে পারেন।

পুরুষাঙ্গের রোগ, ফাইমোসিস এর কারণ ও প্রতিকার : পুরুষাঙ্গের-সম্মুখে ঝুলতে থাকা বাড়তি চামড়াটুকু (Prepuceal skin) অনেক সময় লিঙ্গের শীর্ষদেশের (Glans_penis) সাথে আটকে যে সমস্যা করে ফাইমোসিস বলা হয়। বিশেষ করে ছোট্ট ছেলেদের বাবা-মা অনেক সময়ই এই নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোগেন। প্রচলিত ভাষায় এটিকে বলা হয় লিঙ্গ না ফোটা। মনে রাখবেন শিশুর ৬ বছর বয়স পর্যন্ত পুরুষাঙ্গ প্রাপ্ত বয়স্কদের মতো নাও ফুটে উঠতে পারে তাই এই নিয়ে দুশ্চিন্তার কোন করণ নেই তবে প্রসাব করার সময় যদি ঐ বাড়তি চামড়া সহ লিঙ্গের শীর্ষ ফুলে উঠে অথবা চামড়া ফেটে যাবার উপক্রম হয় কিংবা শিশুর মূত্রত্যাগ এ কষ্ট হয় তবে ধরে নিতে হবে সেটা স্বাভাবিক নয়। বয়স্কদের ও ফাইমোসিস হয়ে থাকে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা ব্যালানাইটিস (Balanitis) রোগের কারনে হয়ে থাকে। বয়স্কদের এমনটি হলে লিঙ্গ নিয়মিত পরিস্কার করা সম্ভব হয়না, তা থেকে অনেক সময় পুরুষাঙ্গের ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। ছোটো অথবা বড় যারই ফাইমোসিস হোক না কেনো এর একমাত্র চিকিৎসা হলো পুরুষাঙ্গের বাড়তি চামড়া টুকু ফেলে দেয়া বা খাতনা করে নেয়া উচিত।

আরও পড়ুন –   এইচ আর – ১৮ (পুরুষ বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় কার্যকর)

ফাইমোসিস এর কারণ: যখন ফাইমোসিস জন্মগত কারণেই হয়। এই রোগ শিশুর জন্মের সময়ই দেখা যায়। সাধারণত এটি পুরুষাঙ্গের প্রান্তীয়ভাগে ত্বকের সাথে চামড়া জোড়া লেগে গেলে এই সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও যে সব কারণে এই রোগ হয়ে থাকে সেগুলো নিন্মে দেওয়া হলো।

অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্নতা থাকা : ব্যালানাইটিস অথবা ব্যালানোপস্থাইটিসের পুনরাবৃত্তি ঘটে। সাধারণত এই ইনফেকশন থেকে পুরুষাঙ্গের ত্বকে ক্ষতের সৃষ্টি হয় এবং এর থেকে প্যাথোলজিক ফাইমোসিস হয়। পুরুষাঙ্গের প্রান্তীয়ভাগের চামড়া জোরপূর্বক পিছনের দিকে টানলে ক্ষত অথবা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র ও ফাইমোসিস হয় । প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষদেরও এই রোগ হতে পারে যদি সে পুরুষাঙ্গের স্থিতিস্থাপকতা এবং ইরেকশন কমে আসে। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার মাধ্যমে আপনি স্থায়ীভাবে আরগ্য লাভ করতে পারেন।

আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করলাম। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। নতুন কোনো স্বাস্থ্য টিপস নিয়ে হাজির হবো অন্য দিন। সবাই সুস্থ্য, সুন্দর ও ভালো থাকুন। নিজের প্রতি যত্নবান হউন এবং সাবধানে থাকুন। যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগে এবং প্রয়োজনীয় মনে হয় তবে অনুগ্রহ করে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না যেন।

আরোগ্য হোমিও হল এডমিন :  এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যগুলো কেবল স্বাস্থ্য সেবা সম্বন্ধে জ্ঞান আহরণের জন্য। অনুগ্রহ করে রেজিষ্টার্ড হোমিওপ্যাথিক পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবনে আপনার শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি হতে পারে। প্রয়োজনে, আমাদের সহযোগিতা নিন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। এই ওয়েব সাইটটি কে কোন জেলা বা দেশ থেকে দেখছেন “লাইক – কমেন্ট” করে জানিয়ে দিন। যদি ভালো লাগে তবে “শেয়ার” করে আপনার বন্ধুদের জানিয়ে দিন।


এ জাতীয় আরো খবর.......
Design & Developed BY FlameDev