তুলসী পাতায় রয়েছে ঔষধি গুণাগুণ

তুলসী পাতার গুণাগুণ বলে শেষ করা যাবে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরকে সুস্থ থাকতে প্রতিদিন একটি করে তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়া ভাল। বাসার বারান্দায় যেখানে আলো-বাতাস চলাচল করে, সেখানে লাগিয়ে রাখতে পারেন তুলসীগাছ।

তুলসী পাতার উপকারীতা :
শিশু থেকে শুরু করে যে কোনো বয়সের মানুষের ঠান্ডা, সর্দি-কাশির ক্ষেত্রে তুলসী পাতা মহৌষধ হিসাবে পরিচত। যদি বাচ্চার সর্দি-কাশি হলে তুলসী পাতার রস আধা চাচুামচ মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ালে কাশি থেকে মুক্তি মিলে।

বুকে যদি আপনার কফ বসে যায় তবে সকালবেলা এক গ্লাস পানিতে তুলসী পাতা, আদা ও চা পাতা ভালো করে ফুটিয়ে তাতে মধু ও লেবু মিশিয়ে পান করলে, উপকার পাবেন। এ ছাড়াও মাথাব্যথা কমাতে তুলসীর চা অনেক উপকারী। যদি আপনার গলা ব্যথা করে তবে তুলসী পাতা ফুটিয়ে গড়গড়া করলে গলাব্যথায় আরাম পাবেন।

অনেক দেশে তুলসীকে মানসিক চাপমুক্ত করতে অনেকে ঔষধি হিসেবে ব্যবহার করে। তুলসী পাতায় রয়েছে ভিটামিন সি, অ্যান্টি-ইনফ্লেমটরি ও অন্যান্য অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট যাহার ফলে মানসিক চাপ কমাতে সহায্য করে। এ উপাদানগুলো নার্ভ সিষ্টামকে শান্ত করে শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। তুলসী শরীরে কর্টিসোলের মাত্রা কমিয়ে আনে। এ ছাড়া অতিরিক্ত উত্তেজনা ও চাপ থেকে মুক্তি দিতে পারে।

বৈজ্ঞানিক ভাবে পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে তুলসী পাতায় রয়েছে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা যেমন – অ্যাজমা, ,ব্রঙ্কাইটিস, ফুসফুসের সমস্যা ইত্যাদি। এ ছাড়া জ্বরের সময়ও তুলসী পাতার রস খুব উপকারী। বর্ষাকালে এই তুলসী পাতা ও এলাচ দিয়ে ফোটানো পানি পান করলে নানা রকমের রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। বিভিন্ন সার্জারির পর ক্ষতস্থানে তুলসী পাতা বেটে লাগালে দ্রুত শুকিয়ে ওঠে।

তুলসী পাতা রক্তে সুগারের মাত্রা ও কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে, যার ফলে খুব সহজেই আপনার ওজন বৃদ্ধির হাত থেকে মুক্তি পেতে পারেন। মরণ ব্যধি ক্যানসার প্রতিরোধ করতে তুলসী পাতা খুবই উপকারী। তুলসী পাতায় রয়েছে রেডিওপ্রটেকটিভ উপাদান, যাহার ফলে টিউমারের কোষগুলোকে মেরে ফেলতে সাহায্য করে। তুলসী পাতায় থাকা ফাইটোকেমিক্যাল যেমন – মাইরেটিনাল, রোসমারিনিক অ্যাসিড, লিউটিউলিন এবং এপিজেনিন ক্যানসারের বিরুদ্ধে কাজ করে। অগ্ন্যাশয়ে যে টিউমার দেখা দেয়, তা দূর করতেও তুলসী উপকারী। ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধ করতেও তুলসী পাতা অত্যান্ত কার্যকরী।

ত্বকের যত্নে  তুলসী পাতা ব্যবহার করা যেতে পারে। তুলসী পাতায় থাকা ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস, ভিটামিন সি ও এসেনশিয়াল অয়েলগুলো অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের কাজ করে, বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে। কেউ কেউ আবার তুলসী পাতাকে যৌবন ধরে রাখার টনিক হিসাবে ব্যবহার করে। তুলসী পাতা বেটে মুখে লাগিয়ে রাখলে ত্বক সুন্দর ও মসৃণ হয়। ত্বকের কোনো অংশ পুড়ে গেলে তুলসীর রস এবং নারকেলের তেল ফেটিয়ে পুড়া যাওয়া অংশে লাগালে জ্বালা কমবে এবং সেখানে কোনো পুড়ার দাগ থাকবে না।

তুলসীতে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান গুলো চোখের অঞ্জনি, চুলকানি, পিচুটি জাতীয় যাবতীয় সমস্যা সমাধান করতে সাহায্য করে। পুষ্টিগুণে ভরপুর থাকায় তুলসী পাতা, দৃষ্টিশক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি ছানি এবং গ্লুকোমার মতো চোখের রোগকে দূর করতে সাহায্য করে।

রক্তে সুগারের মাত্রা কমাতে প্রতিদিন খাওয়ার আগে তুলসী পাতা খাওয়ার আগে অভ্যাস করেন। নিয়মিত তুলসী পাতা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতাও বাড়ে যাহার ফলে শরীরে সুগারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কোনো আশঙ্কাই থাকে না। এ ছাড়া তুলসীতে থাকা অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি–ব্যাকটেরিয়াল উপাদান শরীরের ভেতর থেকে নানা রকমের বিষক্রিয়া পদার্থ বের কতে সাহায্য করে। ফলে ডিহাইড্রেশন কমে কিডনির কার্যকারিতা সচল অবস্থায় থাকে। এর ফলে কিডনিতে পাথর প্রতিরোধ করে।

তুলসী পাতা হার্টের রোগীদের জন্য খুব উপকারী। কেননা হাইপারটেনশন থেকে হার্টের রোগ জন্ম হয়, উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টরলের। তুলসী পাতার দ্বারা রক্তের জমাট বাঁধার সমস্যা দূর করে ও হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করে। হার্টের অন্যান্য সমস্যাও সহজে প্রতিরোধ করতে পারে তুলসী পাতা।

পেটের সমস্যায় তুলসী পাতা মহৌষধ হিসাবে পরিচিত। পেটব্যথা, অম্বল, গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি দূর করতে তুলসী পাতা খুব কার্যকরী। পেটে আলসারের বিরুদ্ধেও তুলসী পাতা কাজ করে। যদি আপনার পেটে ব্যথা হয় তা হলে ২০ মিলি পানিতে তুলসী পাতা ফুটিয়ে ১০ মিলি কমিয়ে পান করলে পেটব্যথা ও হাইপার অ্যাসিডিটি সহজে কমে যায়। সুত্র- প্রথম আলো।

আরোগ্য হোমিও হল এডমিন : এ ওয়েব সাইটের মুল উদ্দেশ্যে হচ্ছে স্বাস্থ্য সম্পের্ক কিছু দান করা বা তুলে ধরা। সাধার মনুষের উপকার হবে। বিশেষ করে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক ও ছাত্ররা উপকৃত হবেন। এ ওয়েব সাইটে থাকছে পুরুষ স্বাস্থ্য বা যৌনস্বাস্থ্য, গাইনি স্বাস্থ্য, শিশুস্বাস্থ্য, মাদার টিংচার, সিরাপ, বম্বিনেশন ঔষধ, বাইকেমিক ঔষধ, হোমিওপ্যাথিক বই, ইউনানি, হামদর্দ, হারবাল, ভেজষ, স্বাস্থ্য কথা ইত্যাদি। এই ওয়েব সাইটটি কে কোন জেলা বা দেশ থেকে দেখছেন লাইক – কমেন্ট করে জানিয়ে দিন। যদি ভালো লাগে তবে শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের জানিয়ে দিন।