হাত ও পায়ের ক্যানসার (Hand and leg cancer)
হোমিও চিকিৎসায় ক্যানসার আরোগ্য
ডাঃ অরবিন্দ সরকার
হাতের ক্যানসার :- সাধারনতঃ হাতের পিছনে হয়, ফুলে উঠে, টিস্যু সমূহ ফোলে এবং কালছে লালাভ হয়, দুর্গন্ধ চামত স্রাব হতে থাকে। হাতের তালুতে ক্যানসার হলে ভান করা বেশ কষ্টদায়ক কারন রোগটি রক্ত ও টিস্যুর সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে যায়। অনেক সময় হাতটি কেটে বাদ দেওয়া হয় কিন্তু পরে আবার বাহুতে হয়, তখন বাহুটিকে বাদ দিতে হয়। “কোন অবস্থাতেই অপারেশন করা যুক্তিগত নয়” ।
পায়ের ক্যানসার :- এটি অতি বিরল পায়ের ফিমার অস্থির নিম্ন দিকে হয়ে থাকে । এটি কষ্টদায়ক ও এর যন্ত্রনা অত্যন্ত তীক্ষ্ণ, তীব্র ও শ্রীঘ্র বর্ধিত হয়। এটি একটি অর্বুদ সদৃশ, উক্ত অর্বুদ অস্থির মত কঠিন। এই ক্যানসার পীড়া অতিশয় কঠিন, প্রায়ই আরোগ্য হয়না। পীড়িতের বয়স কম, স্বাস্থ্য অব্যাহত হলেও প্রথম আক্রমন অনেক দিনের না হলে আরোগ্য হয়ে থাকে। এটি ওষ্টিওইড শ্রেনীর ।
Bone Sarcoma – ইহা দুই প্রকার- যথা-
(১) অষ্টিওজেনিক (Osteigenic)
(২) ইউইংস(Ewings).
অষ্টিওজেনিক :- কথার অর্থ- হাড় সৃষ্টি হওয়া, এটি একটি খুব মারাত্মক দুষ্ট স্ফীতি, হাড়ের অসম বৃদ্ধিও হয় আবার রক্তে বাহিত হয়ে বিভিন্ন যন্ত্রে ছড়ায়। যে জায়গায় হাড় আক্রান্ত হয় সে স্থানের শিরাগুলো ফুলে উঠে, হাতদিয়ে দেখলে পটলের মত শক্ত হাড়ের স্ফীতি অনুভূত হয়। সময় সময় মাংসপেশী ও চামড়া ইত্যাদি আক্রান্ত হতে পারে।
ইউইংস সার্কোমা :- খুব কম দেখা যায়। টিউমার সৃষ্টি হলে তীব্র আকারে আত্ম প্রকাশ করে, স্থানীয় অঞ্চলে ব্যাথা ।
কোন লম্বা হাড়ের মাঝামাঝি স্থানে পেয়াঁজের মত হাড়ের উপরের স্তরে স্তরে খোসা জমে। এটি হয় সাধারণতঃ ৫-১৩ বৎসর বয়সে। ১২ জনের মধ্যে ১ জনের হতে পারে বলে, সমীক্ষায় বলা হয়েছে। শিশুদের ৫ বছর বয়সে হয়। বাঁচে ৪ জনের মধ্যে ১ জন।
কোমল কলার সারকোমা :- নানা রকম কোমল কলা যেমন- মাংসপেশী, স্নেহ কলা, লসিকা কলা, রক্ত সংবাহন চন্দ্রের কলা, প্রভৃতিতে দুষ্ট স্ফীতি বা সারকোমা হয়। সময় সময় এই টিউমার খুব বড় আকারের হয় ।
হাত ও পায়ের ক্যানসারের চিকিৎসা :-
ডাঃ বরিকের মতে – অরাম, আয়ো, ফস, সিম্ফাইটাম ।
ডাঃ ফাটকের মতে :- সার্কোমা চিকিৎসায়- আর্স, ব্যারাইটা-কার্ব, কার্বো-এ্যানি, ল্যাকেসিস, ল্যাপিস-এ্যালবা, ফস, সাইলি,
সিম্ফাইটাম, থুজা, অষ্টিও-ক্যাল-ফ্লরিকা, হেকলা-লাভা, সিফিলিনাম ।
ডাঃ জে, এইচ, ক্লার্ক এর মতে :- ফস, সিম্ফাইটাম।
ডাঃ সুসলার এর মতে :- ক্যাল-ফ্লুর, ক্যাল-ফস, সাইলিসিয়া।
সিম্ফাইটাম (Symphytum) :- অস্থি ভাঙ্গিয়া গেলে, ভাঙ্গাঅস্থি জোড়া লাগিতে দেরী হইলে ইহা অত্যন্ত কার্যকরী ঔষধ। অস্থিতে কোন ক্ষত বা শক্ত কোন বর্ধন অর্থাৎ কোন ক্যানসার হলে ইহা উপকারী।
কোনিয়াম (Conium) :- আঘাত লেগে অস্থির এক শ্রেণীর কনসিড (Concealed) ক্যানসার উৎপন্ন হয়। ইহা খুবই শক্ত ও ফোলা থাকে ।
ক্যালকেরিয়া ফ্লুরিকা (Calcaria fluorica) :- ইহার প্রধান ব্যবহার অস্থিমত (Bony tumore) শত্রু বি-বৃদ্ধিতে। দৈত্য টিস্যু সারকোমা, উপরের ম্যাক্সিলার বিকলতা ঘটায়, যাকে বলে “ফ্রগ ফেস” (Frog face) অত্যন্ত বিশেষ উপযোগী, ক্যাল-ফ্লুর দ্বারা। যদি সাইলিসিয়া দ্বারা চিকিৎসায় অসফলতা আসে। (ক্লার্ক)।
পুরাতন ফাইব্রয়েড পুনরাবর্তক, হাঁটুতে ফাঁপা, যাহা অপারেশন দ্বারা সরানো হইয়াছিল, কিন্তু উহা পুনরায় পূর্বের আকার ধারন করে। পা উপরের দিকে টানা, ৪৫ ডিগ্রী কোনাকার এবং হাঁটু নড়াতে চড়াতে পারেনা। এই লক্ষণের উপর যদি ঔষধের ব্যবস্থাপত্র প্রদান করা হয় এবং টিউমার এর শক্ত অবস্থায়, বিস্মকর আরোগ্যকারী। টিউমার আস্তে আস্তে ক্ষয় প্রাপ্ত হয় এবং অঙ্গটি হয় স্বাভাবিক এবং পূর্বের মত ভাল। রোগীনী জন্ম দিতে পারে সুস্থ শিশু এবং সম্পূর্ন দুঃখ কষ্ট থেকে মুক্ত। (কেন্ট)।
ডালকামরা (Dulcumra):- ডাঃ ক্লার্ক দিতেন ডালকামরা ৩০ শক্তি, মাথার খুলির নিচের হাড়ের সার্কোমাতে যন্ত্রনার সম্পূর্ন উপশম করার জন্য। ছুড়ি ঢোকান যন্ত্রনা, জিহ্বার আংশিক পক্ষাঘাত। (ক্লার্ক)।
ইউফরবিয়া (Euphorbium):- জ্বালা যন্ত্রনা হাড়ের মধ্যে (পেলভিক বোনের বেপরোয়া সার্কোমাতে, কিছুই পারেনা যন্ত্রনার প্রচুর উপশম দিতে, ইউফরবিয়া ৬ শক্তি পুনঃ পুনঃ ভোস দেওয়া অপেক্ষা)।
আরাম-আয়োডেটাম (Arum-lodetum) :- অস্থিদাশে এবং ক্যানসার ক্ষতে বিশেষ উপযোগী। অস্থির প্রচন্ড বেদনা ঔষধটির বিশেষ লক্ষণ, রসাল ঝিল্পী, অস্থি, হাড় এবং যে কোন যন্ত্রে প্রদাহ। শুয়ে থাকলে লক্ষণ বৃদ্ধি। বিশেষ করে গরন বিছানায় শুলে অধিক অসস্থিবোধ। রক্ত দুষ্টি। হাড়ের বেদনা, অস্থির বেদনা, আভ্যন্তরীন ভাবে মোচড়ানো বেদনা, আভ্যন্তরী জ্বালাপোড়া, সূচবিদ্ধের ন্যায় বেদনা, ছিন্নকর বেদনা, আভ্যন্তরীন স্পন্দন। নাড়ী দ্রুত। (কেন্ট)।
আরাম- আর্সেনিকাম (Arum-Arsenicum) :- অস্থিবিনাশে, ইপিথেলিওমা নামক চর্মরোগে এবং ক্যানসার রোগে ইহা বিশেষ উপকারী। গ্রন্থি এবং হাড়ের বেদনা, খনন করাবৎ, মোচড়ানো বেদনা জ্বালাপোড়া, কেটে ফেলার ন্যায় চাপবৎ এ সুচিবিদ্ধ বেদনা । (কেন্ট)।
হেক্লা-লাভা (Hecla-Java) :- রোগী শয্যাপার্শের অভিজ্ঞতায় দেখা, হেক্লা লাভার শক্তিতে আটকাতে পারে অনেক রকমের হাড়ের রোগ, যারমধ্যে অষ্টিওসারকোমা অর্ন্তভূক্ত। এই ফোলা যন্ত্রনা প্রদ এবং স্পর্শাসহিষ্ণু। অধিকতর খারাপ অবস্থা স্পর্শে এবং চাপে। শক্ত অবস্থা এবং চুয়াইয়া ভর্তি(Infiltration) সার্ভাইকাল গ্রন্থিসমূহ, উন্নত গ্রীবার মুক্তার সারির মত। ডান পাশ দেখতে যেন অতিরিক্ত প্রবল ভাবে আক্রান্ত। (ক্লার্ক)।
মেজেরিয়াম (Mezereum) :– মেজেরিয়ামের বিশেষ কাজ হাড়ের এবং পেরিঅষ্টিয়ামের উপর। মনের স্বাভাবিক অবস্থায় অথবা ধাতুগত গঠনে মূল্যবান আরোগ্য, পূজকোষ অধিএবং, টিউমার অব ফ্রোনটাল এবং মোলারবোন এবং ফোড়া আর অংশের। ক্রেনিয়াল বোনের ফোলা। স্বতন্ত্র স্ফীতি গুটিগুলো বুলির মধ্যে, দমনকৃত সিফিলিসের ফল। (লিলিয়েন্থাল)।
নাইটিকাম-এসিডাম (Nitricum Acidum) :- টিউমার পারদের বিষ বা সিফিলিসের পরবর্তি অবস্থায় । (লিপিয়েন্থাল)।
ফসফরাস (Phosphorus) :- হাড়ের ক্যানসার। ফিসারের এক্সোসটসিস (Exostosis) এবং টিবিয়া। পায়ের চারিদিকে ফুস্ফুরীসহ। রক্তক্ষরণ সমস্ত গহার হইতে, ভাছাড়াও নরম ক্যানসার হইতে। এক্সোসটসিস বিশেষ করে বুলির পেরিঅষ্টিয়ামের টিবিয়াতে পঁচা ঘা, জ্বরসহ, পেরিঅধিয়ামের ছাল ছাড়ানো হাঁটু পর্যন্ত, খালি হাড় কর্কস বা অমসৃন । (ক্লার্ক)।
হাড়ের ক্যানসার, ফিমার এবং এক্সোটসিস। যন্ত্রনা নালীক্ষতের মত। যন্ত্রনা কক্সোফিমোরাল জয়েন্ট, রাইট হিপ জয়েন্টে এবং ঐরূপ হাঁটুতে এবং পায়ে, বাহিরের গরম সহ। এক্সোসটোসিস অব টিবিয়া। পায়ের ক্ষত চারিদিকে ক্ষুদ্র ফোস্কাসহ। রক্তক্ষরন সমস্ত গহার হইতে, তাছাড়াও নরম (ক্লার্ক) ক্যানসার হইতে । (ক্লার্ক)।
এসাফিটিডা (Asafoetida) :– অস্তি ক্ষত, গর্ী পীড়া কিংবা পারদ সেবা জনিত কোনও অস্তিতে ক্ষত হইলে বিশেষতঃ টিবিয়া অস্তিতে ক্ষত হইলেও সেই ক্ষতে ভয়ানক দপদপানি ও প্রসাবে দুগন্ধ থাকিলে এসফিটিডা উপকারী। ইহার ক্ষত এত বেদনা থাকে যে কাহাকেও একটু স্পর্শ করতে দেয়না, বেদনা রাত্রিতে বাড়ে।
ক্যাল ফস (Cal Phos) :- অস্থির রোগের প্রধান ঔষধ। হাড় দুর্বল ও নরম হলে ইহা প্রয়োগ করতে হয়। অস্তি ক্ষত এবং মাথার অস্থির খুব দুর্বল অবস্থায় ইহা প্রযোজন্য। এস্কেলে নালীক্ষত হলে এবং তা থেকে দুর্গন্ধ পুজ নির্গত হলে এই ঔষধ বিশেষ প্রযোজ্য।
সাইলিসিয়া (Sillacea) : হাড়ের ক্যানসারে ইহা আরোগ্য দেয় হাড়ের ঘা থেকে দুর্গন্ধ পূজ নির্গত হয় এটিই হার প্রধান লক্ষণ।
আরোগ্য হোমিও হল এডমিন : আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করলাম। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। নতুন কোনো স্বাস্থ্য টিপস নিয়ে হাজির হবো অন্য দিন। এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যগুলো কেবল স্বাস্থ্য সেবা সম্বন্ধে জ্ঞান আহরণের জন্য। অনুগ্রহ করে রেজিষ্টার্ড হোমিওপ্যাথিক পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবনে আপনার শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি হতে পারে। প্রয়োজনে, আমাদের সহযোগিতা নিন। এই ওয়েব সাইটটি কে কোন জেলা বা দেশ থেকে দেখছেন “লাইক – কমেন্ট” করে জানিয়ে দিন। যদি ভালো লাগে তবে “শেয়ার” করে আপনার বন্ধুদের জানিয়ে দিন। সবাই সুস্থ্য, সুন্দর ও ভালো থাকুন। নিজের প্রতি যত্নবান হউন এবং সাবধানে থাকুন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।