সাইকুটা ভিরোসা (Cicuta Virosa)
চলতি নাম – জলের হেমলক (Water Hemlock)
ডা: ইউলিয়াম বরিক।
এই ঔষধটি ক্রিয়া স্নায়ুমণ্ডলে। বিবিধ আক্ষেপিক অবস্থা, যথা, হিক্কা হনুস্তস্ত, ধনুষ্টঙ্কার, আক্ষেপ প্রভৃতি ক্ষেত্রে ইহার প্রয়োজন হইয়া থাকে, বিশেষতঃ যখন অন্যান্য আনুষঙ্কিক লক্ষণ ইহার প্রয়োগ সমর্থন করে। এই সকল লক্ষণের মধ্যে প্রধান- মাথা, ঘাড় ও মেরুদণ্ড পিছন দিকে বাঁকাইয়া পড়া, ভীতিপ্রদ হাত পা মোচড়ানর সহিত আক্ষেপের উগ্রতা, উগ্র প্রকৃতির অদ্ভুত অদ্ভুত ইচ্ছা, আভ্যন্তরিক শীত শীত, কাতরানি ও উচ্চ চীৎকার, অদ্ভুত অদ্ভুত কাজ করা। চর্মের উপর ইহার বিশেষ ক্রিয়া আছে।
মন : প্রলাপ, তৎসহ গান, নৃত্য, কৌতুকজনক অঙ্গভঙ্গী। সব বস্তই অদ্ভুত এবং ভয়ঙ্কর বোধ হয়। শিশুর ন্যায় অতীত ও বর্তমানকে গোলাইয়া ফেলে। বোকার মত বোধ। বিমর্ষতার সঙ্গে উদাসীনতা, সন্দিগ্ধ। মৃগী রোগের সঙ্গে কাতরানি এবং ক্রন্দন। উজ্জল স্বপ্ন।
মস্তক : মস্তক একদিকে বাঁকিয়া যায়। মস্তিস্ক মেরুমমজ্জার প্রদাহ। গ্রীবাপেশীর সঙ্কোচন। শিরঃঘুর্ণনের সহিত পাকাশয়প্রদাহ ও পেশীর আক্ষেপ। আকস্মাৎ মাথার মধ্যে বাঁকি অনুভূত হয়। কোন বস্তুর দিকে এক দৃষ্টে তাকাইয়া থাকে। মস্কিস্কে আঘাত লাগিবার পর আক্ষেপ। মাথার উপর পুর হলুদবর্ণ মামড়ি। বাতকর্মে মাথার উপসর্গ কম থাকে।
চক্ষু : পড়িবার সময় অক্ষরগুলি অদৃশ্য হইয়া যায়। তারকাদ্বয় বিস্ফারিত, বক্র দৃষ্টি কিন্ত তাহা বুঝিতে পারে না। বস্ত সকল একবার দৃষ্টিপথে আসে আবার সরিয়া যায়, ঐগুলি দ্বিগুণিত বলিয়া মনে হয়। বিস্ফোরিত চক্ষু। মাথা বাঁকাইলে তারকাদ্বয় চক্ষু ও চক্ষু সংলগ্ন অন্যান্য অঙ্গের আক্ষেপ। ট্যারা দৃষ্টি। পড়িয়া যাওয়া অথবা আঘাত লাগার পরবতী আক্ষেপজনক তির্যক দৃষ্টি।
কর্ণ : কানে কম শোনে। গিলিবার সময় হঠাৎ কানে বোমা ফাটার মত শব্দ হয়। কান হইতে রক্তস্রাব।
মুখমণ্ডল : মাথার উপর, মুখের উপর, ওষ্ঠের কোণে, চিবুকে অনেকগুলি পুঁজবটী একত্রিত হইয়া পুরু হরিদ্রাবর্ণ মামড়ির সৃষ্টি করে। উহাতে জ্বলা কর বেদনা। মুখমণ্ডল লাল। হনুস্তস্ত। দাঁত কড়মড় করিবার প্রবৃত্তি।
গলগহ্বর : শুস্ক, যেন সঙ্কুচিত হইয়া গিয়াছে। অম্লনলীর আক্ষেপ, লিখিতে পারে না। কোন তীক্ষ্ণ হাড় গিলিয়া ফেলিবার ফলে গলনলীর পীড়া।
পাকস্থলী : পিপাসা, জ্বালাসহ প্রচাপন বোধ, হিক্কা। পাকাশয়-গহ্বরে দপদপানি, উহা ঘুষি মারার ন্যায় হইয়া উঠে। কয়লা প্রভৃতি অদ্ভুত জিনিষে স্পৃহা (এলু, ক্যাক্লে) অজীর্ণতা, উহার সহিত অনুভূতির অভাব, মুখে ফেনা উঠে।
উদরগহ্বর : উদরস্ফীতি, তৎসহ উদ্বেগ ও বদমেজাজ। উদর মধ্যে গড়গড় করে। তলপেটে ফোলা ও বেদনাযুক্ত। শূলবেদনার সহিত আক্ষেপ।
সরলান্ত্র : প্রবল মুত্রবেগ সহ প্রাতঃকালীন উদরাময়। গুহ্যদ্বারে চুলকানি।
বাসযন্ত্র : বুকে কষিয়া ধরার ন্যায় বোধ, শ্বাস লইতে পারে না। বক্ষপেশীতে আক্ষেপ। বক্ষে উত্তাপ বোধ।
পৃষ্ঠদেশ ও হস্ত পাদাদি : গ্রীবাদেশের পেশীর আক্ষেপ ও খিঁচুনি, মস্কক আক্ষেপিক ভঅবে পশ্চাৎ দিকে বাঁকিয়া যায়। বাঁকা অঙ্গকে সোজা করিতে পারে না, সোজা অঙ্গকে বাঁকাইতে পারে না। পিঠ ধনুকের মত পিছন দিকে বাঁকান। মেরুদণ্ডের নিন্মতম অস্থির ঝাঁকি লাগে, ছিঁড়িয়া ফেলার মত বোধ হয়, বিশেষতঃ ঋতুকালে।
চর্ম : একজিমা, উহাতে চুলকানি থাকে না। পুঁজ জমিয়া শক্ত হরিদ্রাবর্ণ মামড়ি সৃষ্টি করে। উদ্ভেদ চাপা পড়িলে মস্তিস্ক রোগ জন্মে। পুঁজবটীগুলি উঁচু উঁচু মটরের মত বড়। পুরাতন চর্ম রোগ।
উপচয়, উপশম : স্পর্শে, বায়ু প্রবাহে, মস্তিস্কে আঘাত লাগার ফলে, তামাকের ধোঁয়ায় বৃদ্ধি।
সম্বন্ধ : দোষঘ্ন – ওপিযাম, আর্নিকা।
তুলনীয় : সাইকুটা ম্যাকুলেটা (প্রায় সমগুণ ঔষধ, প্রধান লক্ষণ অজ্ঞান হইয়া পড়ে, ধনুষ্টঙ্কারের মত আক্ষেপ। সারাদেহ ঘামে ভিজা। মৃগীরোগ ও ধনুষ্টকার রোগে ইহার কথা বিবেচনা করিবে। মুল অরিষ্ট ও নিন্মশক্তি ব্যবহার্য)।
আরও তুলনীয় : হাইড্রোসি এসিড, কোনায়াম, ওন্যান্থ, ষ্টিকনিয়া, বেলেডোনা।
মাত্রা : ৬ষ্ঠ হইতে ২০০তম শক্তি।
আরোগ্য হোমিও হল এডমিন : আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করলাম। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। নতুন কোনো স্বাস্থ্য টিপস নিয়ে হাজির হবো অন্য দিন। এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যগুলো কেবল স্বাস্থ্য সেবা সম্বন্ধে জ্ঞান আহরণের জন্য। অনুগ্রহ করে রেজিষ্টার্ড হোমিওপ্যাথিক পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবনে আপনার শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি হতে পারে। প্রয়োজনে, আমাদের সহযোগিতা নিন। এই ওয়েব সাইটটি কে কোন জেলা বা দেশ থেকে দেখছেন “লাইক – কমেন্ট” করে জানিয়ে দিন। যদি ভালো লাগে তবে “শেয়ার” করে আপনার বন্ধুদের জানিয়ে দিন। সবাই সুস্থ্য, সুন্দর ও ভালো থাকুন। নিজের প্রতি যত্নবান হউন এবং সাবধানে থাকুন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।