১০ দিন পর পর মাসিক হওয়া কারণ কি?
আরোগ্য হোমিও হল এ সবাইকে স্বাগতম। আশা করছি, সবাই ভালো আছেন। আজ আমরা এখানে আলোচনা করবো মহিরাদের ১০ দিন পর পর মাসিক হওয়া কারণ কি কোন শারীরিক সমস্যা তা নিয়ে আজকে জনবো, এটা সবার জানা জরুরী! তো আর কথা নয় – সরাসরি মূল আলোচনায়।
প্রশ্নঃ ১০ দিন পর পর মাসিক হওয়া কি কোন শারীরিক সমস্যা?
উত্তর : ১০ দিন পর মাসির হওয়া এটি স্বাভাবিক নয়, যে সব কারনে নারীদের মাসিক অনিয়মিত বা বন্ধ হতে পারে। যেমন- নারিদের শরীরে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোনের তারতম্যের কারণে এটি হয়। বিবাহিত নারীরা হঠাৎ জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধ বন্ধ করে দিলে অথবা জন্মনিয়ন্ত্রন ঔষধ সেবন করলে বিভিন্ন ধরনের মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। শরীরের রক্ত কমে গেলে বা এনিমিয়া হলে অনিয়মিত মাসিক হওয়ার সম্ভবনা থাকে। অনেক ক্ষেত্রে ওজন বেড়ে গেলে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়। এর ফলে জরায়ুর বিভিন্ন জটিলতার কারণে হতে পারে। যৌন মিলনের সময় পুরুষের শরীর থেকে আসা অসুখের কারণে হতে পারে যেমন – যৌনাঙ্গের শুষ্কতা, তাপঝলক, ঘুমের নানা রকম সমস্যা, মানসিক অস্থিরতা, বিষন্নতা, পেটে মেদ জমা এই সব কারনে মাসিক অনিয়মিত বা বন্ধ হতে পারে, এ একজন গাইনি টিকিৎসকের পরামর্শে ঔষধ গ্রহণ করলে সমাধান হয়ে যাবে।
মেয়েদের মাসিক সমস্যা কি?
বয়ঃসন্ধিকালে তথা যৌবন আগমনের শুরুতে প্রত্যেক নারীরই মাসিক বা ঋতুস্রাব হওয়া এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই মাসিক সবার ক্ষেত্রে নিয়মমত নাও হতে পারে। আবার নিয়মিত হলেও সমস্যা হতেই পারে। আমাদের আজকের এই ফার্স্ট লাইফে টেনশন জীবনের অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলশ্রুতিতে প্রবল স্নায়ু চাপ, হরমোনের অসমতা ইত্যাদির ফলে মহিলাদের মাসিক সংক্রান্ত বিবিন্ন সমস্যার প্রকোপ আগের তুলনায় দিন দিন আনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই আজকের আলোচনায় মাসিক সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যায় কারণ ও প্রতিকারের আলোচনা করার চেষ্টা করবো।
প্রথমেই আলোচনা করছি যন্ত্রণাদায়ক মাসিক বা ঋতুস্রাব নিয়ে। এ ধরনের সমস্যাকে ডাক্তারী পরিভাষায় ডিসমেনোরিয়ার বলে । শতকরা ৫০ থেকে ৭০ ভাগ নারীর যন্ত্রণাদায়ক ঋতুস্রাব বা ডিসমেনোরিয়ার সমস্যা হতে পারে। দেশব্যাপী তরুণীদের এটি একটি প্রধান সমস্যা। ডিসমেনোরিয়া সমস্যাকে সাধারণত দু’ভাগে ভাগ করা যায়
(ক) প্রাইমারী ।
(খ) সেকেন্ডারি।
প্রাইমারী ডিসমেনোরিয়া সাধারণত মেয়েদের প্রথম মাসিকের দু’তিন বছর পর শুরু হয়। ১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সের মেয়েদেরই সাধারণত এই সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। ২৫ বছরের পর থেকে এ সমস্যা অনেক কমে আসতে শুরু করে। বিয়ের পর সাধারণত এই সমস্যা আর দেখা যায় না।
প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া কারণ কি সত্যিকার এর কারণ আজো নির্ণয় করা যায়নি তবে এর সাথে কিছু সমস্যার সহাবস্থান বের করা সম্ভব হয়েছে যেমন –
(১) এই সমস্যা প্রধানত ১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সের তরুণীদের মাঝেই দেখতে পায়।
(২) যে সকল তরুণী মাসিকের আগে ও পরে টেনশনে ভোগের তাদের সমস্যা দেখা দেয়।
(৩) বিষণ্ণতা অথবা ডিপ্রেশনজনিত মানসিক সমস্যায় ডিসমেনোরিয়া বেশি হয়।
(৪) মানসিক ও শারীরিকভাবে দুর্বল তরুণীদেরও এই সমস্যা হয়।
(৫) অস্বস্তিকর, অশান্তিপূর্ণ ও কোলাহলময় পারিবারিক পরিবেশে জীবনযাপনে অভ্যস্ত তরুণীদেরও এই সমস্যা হতে পারে ।
(৬) স্বাস্থ্যহীন বা রোগাক্রান্ত মেয়েদের এই সমস্যা বেশি হয়।
(৭) মা-বাবার আদরের মেয়ে অথবা যে সকল মায়েরও এই সমস্যা ছিল তাদের মেয়েদেরও এই সমস্যা দেখা যায়।
১০ দিন পর পর মাসিক হওয়া রোগীর লক্ষণ :
ডিসমেনোরিয়া ব্যথার একটি নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে যাহা অন্য রোগের ব্যথা থেকে আলাদা। এই ব্যথা মাসিক শুরু হবার কয়েক ঘণ্টা আগে থেকে শুরু হয়। এ ব্যথা ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা স্থায়ী হয়। আবার কখনও পুরো একদিনও স্থায়ী হতে পারে। ব্যথা প্রথমে পেটের দিকে থাকে পরে উরুর ভিতরের দিকে ছড়িয়ে পড়তে পরে। ব্যথার তীব্রতায় রোগীনির চেহারা ফ্যাকাসে দেখায়, ঘাম নির্গত হয়। বমি বমি ভাব, তীব্র ব্যথায় বমি অবশ্যই হবে। এর সাথে পাতলা পায়খানাও হতে পারে। কখনও কখনও পায়খানা/প্রস্রাব করতে কষ্ট হয় ।
১০ দিন পর পর মাসিক প্রতিরোধ :
(ক) স্বাস্থ্যহীনতা ভগ্নস্বাস্থ্য অথবা অপুষ্টির শিকার হয়ে থাকলে তা দূর করা হবে। (খ) বিষণ্ণতায় মানসিক কষ্ট, কুসংস্কার, ভুল ধারণা দূর করতে হবে।
(গ) আক্রান্ত তরুণীদের বোঝাতে হবে যে মাসিক বা ঋতুস্রাব কোন রোগ নয় বরং প্রত্যেক নারীরই শরীরবৃত্তিক প্রক্রিয়া।
(ঘ) ঘরে-বাইরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ দূর করতে হবে।
১০ দিন পর পর মাসিক রোগীর চিকিৎসা :
মাসিক শুরু হলে ও স্বল্প ব্যথা হলে রোগীকে বুঝিয়ে আশ্বস্ত করতে হবে। উপশম না হলে ঔষধ খেতে হবে । তবে ডিসমেনোরিয়া স্থায়ী সমাধান হলে বিয়ে এবং সন্তান প্রসবের পর এ সমস্যা আর থাকে না। তবে আপনি যদি দাম্পত্য জীবন অসুখী হলে এই সমস্যা থেকে যেতে পারে। এতসব ব্যবস্থার পর যদি সমস্যা থেকেই যায় ওষুধের পাশাপাশি সার্জিকেল ট্রিটমেন্টেরও প্রয়োজন হতে পারে।
১০ দিন পর পর মাসিকের সম্পূর্ণ যন্ত্রণামুক্ত :
দ্বিতীয় আরেকটি সমস্যা অনিয়মিত পিরিয়ড- এই সমস্যাটিকে অনেক নারী গুরুত্বের সাথে নেন না। কিন্তু অনেক সময় পলিসিসটিক ও ভারী সিনট্রামের জন্য পিরিয়ড অনিয়মমত হতে পারে বা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। একমাসে একাধিক মাসিক হতে পারে। যাহার ফলে ক্রমাগত বিল্ডিংয়ের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাছাড়া ওজন বেড়ে যাওয়া, শরীরের বিভিন্ন স্থানে অবাঞ্ছিত লোম দেখা দিতে পারে। মনের অস্থিরতা দেখ দিতে পরে। প্রেগনেন্ট অবস্থায় অনিয়মিত ঋতুচক্র ক্ষতিকারক এমনকি গর্ভপাতও হতে পারে। তাই এ সময়ে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। জীবন ধারার পরিবর্তন করতে পারলে উপরিল্লিখিত সিনড্রোমকে প্রতিরোধ করার জন্য। সুষম ডায়েট ও এক্সারসাইজ খুব জরুরি। আপনাকে পলিসিমটি ওভারি সিনড্রোম চিকিৎসায় করতে হবে।
আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করলাম। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। নতুন কোনো স্বাস্থ্য টিপস নিয়ে হাজির হবো অন্য দিন। সবাই সুস্থ্য, সুন্দর ও ভালো থাকুন। নিজের প্রতি যত্নবান হউন এবং সাবধানে থাকুন। যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগে এবং প্রয়োজনীয় মনে হয় তবে অনুগ্রহ করে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না যেন।
আরোগ্য হোমিও হল এডমিন : এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যগুলো কেবল স্বাস্থ্য সেবা সম্বন্ধে জ্ঞান আহরণের জন্য। অনুগ্রহ করে রেজিষ্টার্ড হোমিওপ্যাথিক পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবনে আপনার শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি হতে পারে। প্রয়োজনে, আমাদের সহযোগিতা নিন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। এই ওয়েব সাইটটি কে কোন জেলা বা দেশ থেকে দেখছেন “লাইক – কমেন্ট” করে জানিয়ে দিন। যদি ভালো লাগে তবে “শেয়ার” করে আপনার বন্ধুদের জানিয়ে দিন।