সিনা (Cina)
ডা: ইউলিয়াম বরিক।
শিশুদিগের ঔষধ- দীর্ঘ দেহ, মোটাসোটা, উজ্জল বর্ণ, গণ্ডমালাধাতুর শিশুর বহুপ্রকার রোগ, যাহার সহিত আন্ত্রিক গোলযোগ থঅকে। ক্রিমি রোগ ও তাহার আনুষঙ্গিত অন্যান্য উপসর্গ। অথ্যান্ত খিটখিটে মেজাজ, রকম বমক খাদ্যের স্পৃহা, দাঁত কড়মড় করা, এমন কি আক্ষেপের সহিত চিৎকার এবং হাত পা ছোঁড়া সিনার লক্ষণ। সিরার রোগী বেশী ক্ষধার্ত, একগুঁয়ে, বিশ্রী চেহারা এবং সর্বদা দোল খাইতে চায়। আকস্মিক স্পর্শে বেদনা, চর্মে স্পর্শকাতরতা।
মন : বদ মেজাজ, শিশু অত্যান্ত ঘ্যানঘেটে প্রকৃতির। স্পর্শ, আদর অথবা কোলে উঠিতে চায় না। অনেক কিছূ চায় কিন্ত দিলে সব কিছুই ছুঁড়িয়া ফেলে। অদ্ভুত ধারণা, মনে করে সে যেন কোন অন্যায় কাজ করিতেছে।
মস্কক : শিরঃপীড়া ও তলপেটে বেদনা পর্য্যায়ক্রমে আসে। অবরত হইলে উপশমিত হয় (মেজের)। চক্ষ কাজ করিলে মাথায় ব্যথা করে।
চক্ষু : বিস্ফরিত তারকা, সব কিছু হলদে দেখে হস্তমৈথুনের জন্য ক্ষীর্ণ দৃষ্টিশক্তি। তলপেটের উত্তেজনা হইতে ট্যারা দৃষ্টি। চোখে জোর দিতে হয় যখন দুরের জিনিষটি স্পষ্ট দেখে কিন্ত নিকটেরটি দেখে না। চক্ষ পাতার স্পন্দন।
কর্ণ : কানের মধ্যে গর্ত করার মত ও আচড়ানর মত বেদনা।
নাসিকা : সব সময়েই নাক চুলাকয়। নাক ঘষে, নাক খোঁটে। নাকের ভিতর খুঁটিতে খুঁটিতে রক্ত বাহির করিয়া ফেলে।
মুখমণ্ডল : গণ্ডস্থল সীমাবদ্ধ স্থানে রক্তিম আভা। মুখমণ্ডল বিবর্ণ উত্তপ্ত, চক্ষুর চারিধারে চক্রাকার কৃষ্ণবর্ণ রেখা। শীতল ঘর্ম। ঔষ্ঠ সাদা ও নীলাভ। ঘুমের মধ্যে দাঁত কড়মড় করে। মুখমণ্ডল ও হাতের তাণ্ডব রোগের ন্যায় অনৈচ্ছিক সঞ্চালন।
পাকস্থলী : আহারের পরক্ষণেই আবার ক্ষুধা পায়। ক্ষুধা পাইলে উদরে খনন করার মত ও খাশচানর মত বেদনা বোধ করে। আহার অথবা পানের পরই বমন এবং উদরাময় দেখা দেয়। বমি করে কিন্ত জিহ্বাটি পরিস্কার। ভিন্ন ভিন্ন প্রকারের বহু জিনিষ খাইতে চায়। মিষ্টদ্রব্রে স্পৃহা।
উদরগহ্বর : নাভির নিকট মোচড়ান ব্যথা (স্পাইজি)। তলপেট স্ফীত এবং শক্ত।
মল : চিমটি কাটার ন্যায় বেদনার পর, শস্য-চুর্ণের ন্যায় সাদা সাদা আম। গুহ্যদ্বার চুলকায় (টিউক্রি)। ক্রিমি (স্যাব্যাড, ন্যাপথ, নেট্রাম ফস)।
মুত্র : ঘোলাটে, সাদা কিছুক্ষণ থাকিলে ধুধের মত সাদা হইয়া যায়। রাত্রে বিছানায় মুত্রত্যাগ করে।
স্ত্রী-জননেন্দ্রিয় : যৌবন উগ্মমের পূর্বেই জরায়ু হইতে রক্তস্রাব।
শ্বাসযন্ত্র : প্রাতঃকালে শ্বাসরোধক কাশি। হুুপিং কফ। পুনঃপুনঃ ভয়য়ানক কাশির আবেশ, যেন গলারম মধ্যে একটা পালক আটকাইয়া আছে। আক্ষেপ অসিয়া কাশির নিবৃত্তি হয়। কাশি এতই তীব্র যে চক্ষে জল আসে, বক্ষস্থালে বেদনা করে, মনে হয় যেন বক্ষের মধ্যে কিছু ছিঁড়িয়া যাইতেছে। সময় ধরিয়া কাশি আসে – বসন্তকালে এবং বর্ষাকলে পড়িলে। কাশির পর ঢোঁক গিলিতে হয়। কাশির পর গলা হইতে পাকস্থলী পর্যন্ত স্থানে কুলচুচা করার ন্যায় শব্দ করে। শিশু কাশির ধমক আসিবার ভয়ে, কথা বলিতে ও নাড়িতে চড়িতে ভয় পায়। কাশির আবেগের পর কাতরায়, বাুর জন্য খাবি খায় এবং বিবর্ণ হইয়া পড়ে।
হস্ত-পাদাদি : অঙ্গ-প্রত্যাঙ্গ মোড়ায়, এবং ঝাঁকি দেয়। কাঁপে। পক্ষাঘাতিক সংঘাত, রোগী হঠাৎ বিছানা হইতে লাফাইয়া উঠে, যেন সে ব্যথা পাইয়াছে। শিশু এক পাশ হইতে আর এক পাশে হাত ছুঁড়িতে থাকে। রাত্রিকালীন আক্ষেপ ডান হাতের আঙ্গুলগুলি আকস্মাৎ ভিতর দিকে আক্ষিপ্ত হয়। শিশু আকস্মাৎ পা ছড়াইতে থাকে। বাম পায়ে অবিরত আক্ষেপজনক সঞ্চালন।
নিদ্রা : শিশু ঘুমের মধ্যে হাতে ও হাঁটুতে ভর দিয়া উচুঁ হইয়া উঠে, উপুড় হইয়া শোয়। শিশু রাত্রিকালে ভয় পায়, চিৎকার করিয়া উঠে, কাঁদিয়া উঠে , ভয় পায় পাইয়া জাগিয়া উঠে। হাই তুলিতে কষ্ট হয়। ঘুমের মধ্যে কাঁদে ও কথা বলে। দাঁত কড়মড় করে।
জ্বর : শীত অল্প। যথেষ্ট উত্তাপ, তৎসহ জিহ্বাটি সম্পর্ণ পরিস্কার অত্যান্তে ক্ষুধার্ত, শূলের ন্যায় ব্যথা, শীত শীত ভাব, পিপাসা। কপালে, নাকে ও হাতে শীতল ঘর্ম। সিনাজ্ঞাপন জ্বরে মুখমণ্ডল শীতল কিন্ত হস্তদ্বয় গরম।
উপচয়, উপশম : বৃদ্ধি – কোন কিছু দিকে একদৃষ্টে তাকাইলে ক্রিমি বাড়িলে, রাত্রিকালে, সুর্যতাপে এবং গ্রীস্মকালে।
সম্বন্ধ : তুলনীয় – স্যান্টোনিন (ক্রিমিরোগে সিনার চেয়েও ভাল ঔষধ। সিনার সমলক্ষণ। দৃষ্টিবিভ্রম, সবকিছু হরিদ্রাবর্ণ দেখে, ভায়লেট রং দেখিতে পায় না, রংগুলি ঠিক চিনিতে পারে না। মুত্র-গাঢ জাফরানের ন্যায় হলদে। আক্ষেপ ও হাত-পা মোচড়ান। পুরাতন পাকাশয়ে-অন্ত্রের রোগ। কখন কখন এক মাত্রা স্যান্টোনিনেই উপকার হয় – ডালকে)। হেলমিন্থোকর্টোন (অন্ত্রের ক্রিমিতে বিশেষ উপযোগী, বিশেষতঃ কেঁচো ক্রিমি )। ট্রিউক্রিয়াম, ক্যাম্ফর, স্পাইজে।
দোষঘ্ন :ক্যাম্ফর, ক্যাপসি।
মাত্রা : ৩য় শক্তি। স্নায়বিক প্রকৃতি উত্তেজনাপ্রিয়া শিশুর জন্য ৩০শ এবং ২০০ শক্তি। স্যান্টেনিন ১ম (সাবধানতার সহিত) এবং এবং ৩য় বিচুর্ণ।
আরোগ্য হোমিও হল এডমিন : আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করলাম। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। নতুন কোনো স্বাস্থ্য টিপস নিয়ে হাজির হবো অন্য দিন। এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যগুলো কেবল স্বাস্থ্য সেবা সম্বন্ধে জ্ঞান আহরণের জন্য। অনুগ্রহ করে রেজিষ্টার্ড হোমিওপ্যাথিক পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবনে আপনার শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি হতে পারে। প্রয়োজনে, আমাদের সহযোগিতা নিন। এই ওয়েব সাইটটি কে কোন জেলা বা দেশ থেকে দেখছেন “লাইক – কমেন্ট” করে জানিয়ে দিন। যদি ভালো লাগে তবে “শেয়ার” করে আপনার বন্ধুদের জানিয়ে দিন। সবাই সুস্থ্য, সুন্দর ও ভালো থাকুন। নিজের প্রতি যত্নবান হউন এবং সাবধানে থাকুন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।