সাদা স্রাব নারীদের শারীরিক কি কি ক্ষতি করে
আরোগ্য হোমিও হল এ আপনাকে স্বাগতম, এখানে আজ সাদা স্রাব শারীরিক কি কি ক্ষতি করে আলোচনা কররো। এটা সবার জানা দরকার চলেন কথা না বাড়িয়ে মুল আলোচনায় যায়।
নাম: মোসা : শারমীন, বয়স বাইশ, অনার্সের ছাত্রী। রোগী শারমীনের মতে তেরো-চৌদ্দ বছর বয়স থেকেই মাসিকের আগে ও পরে আবার অনেক সময়ে পুরো মাসই সাদা স্রাব যেতে থাকে। স্রাব কোন কোন সময় লালচে রঙের দেখা যায়। তলপেটে ব্যথাও করে। অনেক সময় পাজামায় দাগ পড়ে যায়। বাইরে গেলে পাজামা ভেজে যায় সঙ্কোচ বোধ অনুভূতি হয়। তার জন্য বাইরে গেলে মাসিক ছাড়াও প্যান্টি পরতে হয়। সারাক্ষণ অস্বস্তি লেগেই থাকে। শরীর দুর্বল লাগছে। পানির পিপাসা ঘন ঘন, একটু পরিশ্রম করলেই বুক ধড়ফড় ও মাথা ঘোরে। তলপেটে ব্যথা আনেক সময় দু’দিন থাকে না, আবার অনেক সময় এক নাগাড়ে সাত দিনও থাকে।
এ কথা বড় আপুকে বলতেই একটা ধমক দিলেন। বড় আপু বল্লেন মেয়েদের তো সাদা স্রাব হয়েই থাকে। তুই এটা নিয়ে বেশি মাথা ঘামাস কেন?। একদমই পাত্তা দিবি না। কিন্তু বড় আপুর মুখের কথায় শারমীনের সমস্যা তো দুর হবে না। ইদানীং প্রস্রাব করার সময়ও তলপেটে চিনচিন ব্যথা করে। প্রস্রাবের সময়ও ঝপ করে একগাদা সাদা স্রাব বেড় হচ্ছে স্রাব ঘন, মাঝে মাঝে দুর্গন্ধযুক্ত) করে। তবে শারমীন ভয় পায়। গোপনে বান্ধবীদের সাথে সমস্যা নিয়ে শেয়ার করলেন। এর পর অনলাইন ঘাঁটার পর শারমীনের চোখ খোলে। আর দেরি না করে, বান্ধবীকে সাথে নিয়েই একদিন মহিলা ডাক্তারের কাছে গেলেন। ডাক্তার সবকিছু বিস্তারিত শোনার পর শারমীন আশ্বস্ত করেন। পরে সাদা স্রাবের নমুনা ও প্রস্রাবের পরীক্ষাও পরামর্শ দেন।
শারীরিক দুর্বলতার জন্য ভিটামিন, ক্যালসিয়াম খাবার দেন ডাক্তার এবং বিস্তা মাসিকের ইতিহাস জেনে নেন। দেখা গেল, মাসিকের রক্তক্ষরণ ও পরিমাণের চেয়ে অধিক বেশি হয়, শারীরিক দুর্বলতার এটাও একটা কারণ। ডক্টর বললেন, ময়েদের অল্প স্রাব হতে পারে। তবে যদি অতিরিক্ত হয় তবে সেটা শারীরিক ক্ষতির কারণ হতে পারে এবং কখনো যদি স্রাবের সাথে মাসিকের পথে এবং আশপাশে চুলকানি থাকে তবে অবশ্যই চিকিৎসা নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে কয়েক ধরনের জীবাণু থাকতে পারে। এ জীবাণুর নাম ট্রাইনোমোনিয়াসিস। আবার ছত্রাক যার নাম ক্যানডিজ দিয়েও সংক্রমণ হতে পারে। ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস নামেও কিছু জীবাণু দিয়েও সংক্রমণ হতে পারে।
আবার দু-তিন ধরনের জীবাণু একত্র হয়েও ইনফেকশন হতে পারে। তবে ঘাবড়ানোর কোন করণ নেই। সমস্যা থাকলে তো সমাধানও আছে । আসল কথা হলো সচেতন হতে হবে। বাঁচতে গেলে নিজের জীবনটাকে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কোনো রোগ-জীবাণু শরীরে যেন বাসা বাঁধতে না পারে। দীর্ঘদিনের ইনফেকশন থাকলে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হতে পারে। বিবাহিত মেয়েদের ক্ষেত্রে এ ধরনের কোন সমস্যা থাকলে এর পাশাপাশি স্বামীকেও অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসা নিতে হয়। কারণ এটা যৌনবাহিত রোগের মধ্যে গণ্য করা হয়। এ জন্য বলছি, যদি স্রাব যেতেই থাকে, পাজামা-প্যান্টি ভিজে যায়, গন্ধযুক্ত স্রাব কিংবা যদি অস্বাভাবিক চুলকানি থাকে এবং শরীর দুর্বল লাগে কিংবা জ্বর আসে তাহলে আর বসে থেকে চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করবেন। নিজে নিজে চিকিৎসা নেবেন না কিংবা এ রোগকে অবহেলা করবেন না। কারণ এটা আপনার শারীরিক ক্ষতির বড় কারণ হতে পারে।
ডা: স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়।
আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করলাম। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। নতুন কোনো স্বাস্থ্য টিপস নিয়ে হাজির হবো অন্য দিন। সবাই সুস্থ্য, সুন্দর ও ভালো থাকুন। নিজের প্রতি যত্নবান হউন এবং সাবধানে থাকুন। যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগে এবং প্রয়োজনীয় মনে হয় তবে অনুগ্রহ করে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না যেন।
আরোগ্য হোমিও হল এডমিন : এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যগুলো কেবল স্বাস্থ্য সেবা সম্বন্ধে জ্ঞান আহরণের জন্য। অনুগ্রহ করে রেজিষ্টার্ড হোমিওপ্যাথিক পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবনে আপনার শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি হতে পারে। প্রয়োজনে, আমাদের সহযোগিতা নিন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। এই ওয়েব সাইটটি কে কোন জেলা বা দেশ থেকে দেখছেন “লাইক – কমেন্ট” করে জানিয়ে দিন। যদি ভালো লাগে তবে “শেয়ার” করে আপনার বন্ধুদের জানিয়ে দিন।