মেডোরিণাম (Medorrhinum)
গণোরিয়া রোগে বিষজাত ঔষধ (The Gonorrheal Virus)
ডা: উউলিয়াম বরিক।
একটি শক্তিশালী ও গভীর ক্রিয়াশীল ঔষধ। গণোরিয়া চাপা পড়িয়া পুরাতন রোগ দেখা দিলে, অনেকক্ষেত্রে ইহার উপযোগিতা দেখা যায়। বস্তিপ্রদেশের প্রচীন পীড়াগ্রাস্ত বমনীদের পক্ষে উপযোগী। পুরাতন বাতরোগ। স্নায়ুমণ্ডলের অতীব বিকৃত ক্রিয়া এবং উপদাহ। বেদনা অসহ্য, টানপড়ার মত স্নায়ুগুলি কাঁপে ও ঝিন ঝিন করে। শিশু খর্বাকৃতি ও অপরিপুষ্ট। শিশুদের পুরাতন সর্দি রোগ। নাসিকা অপরিস্কার , টনসিলদ্বয় স্ফীত, নাসাপথে ঘন হরিদ্রাবর্ন শ্লেম্মাস্রাব, ওষ্ঠদ্বয় পুরু হইয়া উঠে, মুখ দিযা শ্বাস গ্রহণ করে। হিমাঙ্গ অবস্থা এবং সর্বাঙ্গীণ কম্বন। গণোরিয়া বিষয়ক ইতিবৃত্ত। অনেক ক্ষেত্রে গণোরিয়ার স্রাব পুনঃ প্রকাশিত করে। অনুভুতি মাত্রেই অত্যাধিক। অঙ্গ-প্রত্যাঙ্গের স্ফীতি, স্নৈহিক কোষসমুহের শোথ। দেহের স্থানে স্থানে কাঠিনতা।
মন : দুর্বল, স্মৃতিশক্তি কোষসমুহের শোথ। দেহের স্থানে স্থানে কঠিনতা। কথা বলিতে পানে না। সময় ধীরে ধীরে চলে বলিয়া মনে হয় (ক্যানাবিস ইণ্ডিকা, আর্জ নাই)। সব কিছতেই তাড়াতাড়ি। আরেগ্য সম্বন্ধে নিরাশ। মনঃসংযোগ করিতে পারে না। পাগল হইয়া যাইবার ভয় (ম্যান্সিনেল্লা)। অনুভব শক্তি বৃদ্ধিপ্রাপ্ত। স্নায়বিীয়, অস্থির। অন্ধকারে থাকিতে ভয় মনে হয় কে যেন পিছনে রহিয়াছে। বিমর্ষতা, তৎসহ আত্নহত্যা বিষয়ক চিন্ত।
মস্কক : মস্কিস্ক মধ্যে জ্বালাকর বেদনা, মস্তকের পশ্চাৎদিকে অধিক। মস্কক ভারি এবং পিছন দিকে হেলান। গাড়ীতে বসিয়া ধাক্কা লাগা, পরিশ্রমজাত ক্লান্তি এবং কঠোর শ্রমের জন্য শীরঃপীড়া। মস্তক-শীর্ষে চাপ বোধ এবংকোন ভারি জিনিষ রহিয়াছে এরুপ অনুভুতি। চুল শুস্ক, কোঁকড়ান। মস্তক-ত্বকে চুলকানি, খুসকি।
চক্ষু : যেন একদৃষ্টে তাকাইযা আছে এরুপ অনুভূতি। চক্ষুতারকায় টাটানি। মনে হয় যেন, চক্ষু মধ্যে কাঠি পড়িয়াছে। চক্ষুপাতার প্রদাহ।
কর্ণ : আংশিক বধিরতা, কনের মধ্যে দপ্ দপ্ করে। দক্ষিণ কর্ণে তীব্র চিড়িকমারা বেদনা।
নাসিকা : অত্যান্ত চুলকানি। নাসিকাগ্র শীতল। নাসিকার পশ্চাৎরন্ধ্র অবরুদ্ধ। পুরাতন নাসিকা ও গলকোষের সর্দি।
মুখমণ্ডল : মলিন, বায়:ব্রণ, লাল লাল দাগ ঋতুকালে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ফোঁড়া দেখা দেয়।
মুখগহ্বর : জিহ্বায় বাদামিবর্ণ লেপ, পুরু ও ফোস্কাযুক্ত। পচা ক্ষত। ওষ্ঠ ও চোয়ালের ভিতর দিকে ফোস্কা পড়ে।
পাকস্থলী : তামার মত আস্বাদ, গন্ধকের গন্ধ উদ্গার। আহারের পর ক্ষণেই আবার রাক্ষুসে ক্ষুধা। অত্যান্ত পিপাসা। মদ্য, লবণ, মিষ্টান্ন প্রভৃতি খাইতে চায়, উষ্ণ পানীয় পছন্দ করে। গর্ভকালে অনিষ্টকর বমন।
উদরগহ্বর : প্লীহা ও যকৃৎস্থানে তীব্র বেদনা। উপুড় হইয়া শয়নে উপশম বোধ করে।
মল : কেবলমাত্র পিছনদিকে হেলিয়া বসিয়া মলত্যাগ করিতে পারে। মলদ্বার পেশীর উপরে একটি গোলা রহিয়াছে-এরুপ বেদনা। দুর্গন্ধ রস গড়ায়। গুহ্যদ্বারে তীব্র জ্বালা।
মুত্র : প্রস্রাব কালে কষ্টকর কোঁথানি। রাত্রিকালে অসাড়ে মুত্রপাত। মুত্রশূল (বার্বেরিস, ওসিমানম প্যারিয়া), মুত্র অতি ধীরে ধীরে নির্গত হয়।
স্ত্রী-জননেন্দ্রিয় : তীব্র চুলকানি। ঋতুস্রাব দুর্গন্ধ, প্রচুর, কালবর্ণ চাপ চাপ কাপড়ের দাগ সহজে উঠে না, ঋতুকালে পুনঃপুনঃ মুত্রবেগ। জরায়ুর মুখে বিশেষ স্থানে স্পর্শদ্বেষ। প্রদরস্রাব – পাতলা, বিদ্রাহী, ক্ষতকার, আঁশটে গন্ধ। জননেন্দ্রিয় সাইকোসিস দোষদুষ্ট আঁচিল। ডিম্বাশয়ে বেদনা, বাম পার্শ্বে অধিক, এক ডিম্বাশয় হইতে অপর ডিম্বাশয় পর্যন্ত বিস্তৃত বেদনা। বান্ধ্যাত্ব। অতি-স্রাব। তীব্র ঋতুশূল। স্তনদ্বয় শীতল বেদনার্ত ও স্পর্শ কাতর।
পুং-জননেন্দ্রিয় : নৈশ রেতঃপাত, তৎপর অতীব দুর্বলতা। ধ্বজভঙ্গ। লালামেহ, সমগ্র মুত্রপথে বেদনা। মুত্রনলীর প্রদাহ। প্রষ্টেটগ্রন্থিদ্বয় বদ্ধিত ও বেদনাযুক্ত, পুনঃপুনঃ মুত্রবেগ ও ক্ষ্টকর মুত্রস্রাব।
শ্বাসযন্ত্র : বাধাপ্রাপ্ত শ্বাস ক্রিয়া। পড়িবার কালে গলা ভাঙ্গিয়া যায়। বক্ষে ও স্তনদ্বয়ে বেদনা ও টাটানি। হাঁপানি। যক্ষা রোগের সুচনা। শ্বরযন্ত্রে টাটানি ব্যথা। শ্বাসকষ্ট, নিঃশ্বাস ত্যাগ করিতে পানে না (স্যাঙ্গু)। কাশি, উপুড় হইযা শুইলে উপশম।
হস্ত-পদাদি : দাহকর উত্তাপসহ পৃষ্ঠে বেদনা। পদদ্বয় ভারি, সারারাত্রি কামড়ানি, কিছুতেই পদদ্বয় স্থির রাখিতে পারে না (জিঙ্ক)। চলিবার সময় গোড়ালি সহজেই ঘুরিয়া যায়। হাতে ও পায়ে জ্বলা। অঙ্গুলি-সন্ধিগুলি বদ্ধিত ও ফোলা ফোলা। বাতগুটি । গোড়ালি ও পায়ের তলা স্পর্শকাতর (থুজা)। পায়ের তলায় ক্ষতবৎ বেদনা। অস্থির, হাত মোচড়াইলে উপশম।
চর্ম : হলুদবর্ণ। তীব্র ও অবিরত চুলকানি। রাত্রে অথিক, ঐ বিষয়ে চিন্তা করিলে বৃদ্ধি। শিশুদের গুহ্যদ্বারে আগুনের মত লাল লাল পীড়কা। আম্রবর্ণ দাগ। মধুচক্রার অরুংষিকা। অর্বুদ, বিশ্রী মাংসবৃদ্ধি।
জ্বর : সর্বক্ষণ পাখার বাতাস চায়। পিঠের উপর দিয়া শীত উপর-নীচ করে। পদদ্বয়, হস্তদ্বয় ও বাহুদ্বয়ের শীতলতা। মুখে ও ঘাড়ে উত্তাপের ঝলকা। নৈশ ঘর্ম এবং বিলাপী জ্বর।
নিদ্রা : রোগিণী স্বপ্ন দেখে যে সে পান করিতেছে (আর্স, ফস), বক্ষে হাঁটু, আনিয়া শয়ন করে।
উপচয়, উপশম : বৃদ্ধি – রোগের বিষয়ে চিন্ত করিলে, সকাল হইতে সুর্য্যস্ত পর্যন্ত, উত্তাপে, স্থলভাগে।
উপশম : সমুদ্রতীরে, উপুড় হইযা শুইলে, স্যাঁৎসেঁতে আবহাওয়ায় (কষ্টিকাম)।
সম্বন্ধ : তুলনীয় – (স্তন্য দুগ্ধের রোগে – গ্যালেগা, ল্যাকটুকা) সালফ, সিফিল, জিঙ্ক।
মাত্রা : কেবলমাত্র অত্যুচ্চ শক্তিতেই ফল হয়। পুনঃপুনঃ ব্যবহার করিবেন না।
আরোগ্য হোমিও হল এডমিন : আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করলাম। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। নতুন কোনো স্বাস্থ্য টিপস নিয়ে হাজির হবো অন্য দিন। এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যগুলো কেবল স্বাস্থ্য সেবা সম্বন্ধে জ্ঞান আহরণের জন্য। অনুগ্রহ করে রেজিষ্টার্ড হোমিওপ্যাথিক পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবনে আপনার শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি হতে পারে। প্রয়োজনে, আমাদের সহযোগিতা নিন। এই ওয়েব সাইটটি কে কোন জেলা বা দেশ থেকে দেখছেন “লাইক – কমেন্ট” করে জানিয়ে দিন। যদি ভালো লাগে তবে “শেয়ার” করে আপনার বন্ধুদের জানিয়ে দিন। সবাই সুস্থ্য, সুন্দর ও ভালো থাকুন। নিজের প্রতি যত্নবান হউন এবং সাবধানে থাকুন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।