হোমিওপ্যাথিক মানুসিক রোগ ও যৌন চিকিৎসা
ডা: জে. এন. পাত্র
ডি. এম. এস (কলকাতা ) ও
ডা: আর. এন. চন্দ্র
এম, ডি হোমিও প্রাপ্তন চিকিৎসক কলকাতা।
যে কোনো পীড়ার সঙ্গে এইসব মানসিক লক্ষণ থাকলে ওষুধগুলি প্রয়োগে উপকার হবে। তবে লক্ষণানুসারে ওষুধ প্রয়োগ বাঞ্ছনীয় ।
মানসিক অবস্থা
(১) বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করার ভয়, কোনো জন্তু দেখলে ভয় ।
ঔষধ : হয়োসিমাস।
(২) অসহিষ্ণুতা। অন্যের ক্ষতি করার ইচ্ছা। মূর্ছা ও দুর্বলতা।
ঔষধ : ক্যামোমিরা।
(৩) কোনো গোলযোগপূর্ণ স্থানে যেতে ভয়—লোক- সমাকীর্ণ স্থানে যেতে ভয়, মৃত্যুভয়, পড়ে যাবার আশঙ্কা। মনে আঘাত লাগা।
ওষুধ : একোনাইট।
(৪) হাঁটাচলার সময় যেন ধাক্কা খেয়ে পড়তে থাকে, ভয়াতুর, নীরবে বসে থাকে, কথা বলার ইচ্ছা থাকে না, স্মৃতিশক্তি দুর্বল, একা থাকতে চায়, কিছু খেতে বা পান করতে চায় না, শ্রবণশক্তি স্থূল, উদ্দেশ্যহীন দৃষ্টিতে একভাবে তাকিয়ে থাকে, স্বর কম্পিত।
ঔষধ : ইগ্নেসিয়া।
(৫) অত্যন্ত আহ্লাদে মনাসিক উত্তেজনা, উন্মাদ অবস্থার প্রথম দিক, আনন্দপূর্ণ মানসিক অবস্থা, শিরঃপীড়া।
ঔষধ : মার্ক সল।
(৬) মানসিক উত্তেজনা—তারপর শুরু হয় মাথার যন্ত্রণা।
ঔষধ : কোকা।
(৭) ভয়ানক মানসিক পীড়া—তারপর লিভারের পীড়া, মানুষ দেখলে ভয় পায়, একা থাকতে চায়—কিন্তু একা থাকলে ভয়ানক খিটখিটে মেজাজের হয়ে ওঠে, খামখেয়ালী, ক্রুদ্ধ, অবাধ্য।
ঔষধ : লাইকোপোডিয়াম।
(৮) নীরবে কাঁদে, মনে স্ফূর্তি থাকে না, অতিরিক্ত মানসিক পরিশ্রম জনিত ভয়ানক নিদ্রালুতা, শুতে ভয় পায়।
ঔষধ : নাক্স মস্কেটা।
(৯) নীরবে কাঁদে, কাশতে থাকে, রোগীর কম্পন লক্ষণ থাকে।
ঔষধ : মার্ক সল।
(১০) ভবিষ্যৎ ঘটনার জন্য ভয়, মৃত্যুভয়, দারিদ্র্যের জন্য মানসিক বিকৃত অবস্থা, পড়ে যাবার ভয়
ঔষধ : ক্যালকেরিয়া কার্ব।
(১১) জেলে গিয়ে বন্ধ হয়ে থাকার ভয়, ধরে নিয়ে যাবার ভয়।
ঔষধ : রুটা প্রোভি।
(১২)বাড়ির জন্য মন কাঁদে, অতৃপ্তিকর নিদ্রা, দুঃখে নিয়ে কাতর হয়—নীরবে কাঁদে, কোনো বিপদ ঘটবে মনে হয়, নীরবে কাঁদার সময় মনে হয় সে একা আছে।
ঔষধ : ম্যাগ্নেসিয়া মিউর।
(১৩) হৃৎপিণ্ডের কম্পন-সহ ব্যাকুলতা, অসুখকর প্রণয়, নীরবে কাঁদতে চায়, হঠাৎ ক্রোধ, নৈরাশ্য, আত্ম- হত্যা করার ইচ্ছা, মন কখনো আনন্দপূর্ণ—কখনো দুঃখকাতর, ঝগড়াটে স্বভাব, চোখের কাছে জোনাকি পোকা জ্বলছে মনে হয়।
ঔষধ : অরাম মেট।
(১৪) মানসিক দুঃখে কেঁদে ফেলে, রোগী জলে ডুবে মরতে চায়, কিছুতেই শান্তি পায় না, সহজেই রেগে যায়, চিন্তাকুল স্বপ্ন দেখে।
ওষুধ : পালসেটিলা।
(১৫) বিদেশে চলে যাবার ইচ্ছা, খিদে থাকে না — মন্দাগ্নি, কিছুই ভালো লাগে না।
ঔষধ : মার্ক-সল।
(১৫) আনন্দে হাসে, কাঁদে ও স্তম্ভিত হয়।
ঔষধ : হায়োসিয়ামস।
(১৬) রোগী দুশ্চিকিৎসা পীড়ায় আক্রান্ত হবে বলে আশঙ্কা করে।
ঔষধ : লিলিয়াম-টিগ।
(১৭) সব সময় শৃঙ্গার বিষয়ে আলোচনা করে, স্মৃতিশক্তি দুর্বল, নিজের কাজকর্ম করতে নিজেই রেগে যায়, স্নায়বিক দুর্বলতা, ভবিষ্যতের কথা আগে থেকে মনে হয়, কোনো বিষয়ে গ্রাহ্য করে না।
ঔষধ : স্ট্যাফিসেগ্রিয়া।
(১৮) রোগী ভয়োৎপাদক প্রতিমূর্তি দেখে।
ঔষধ : ফসফরাস।
(১৯) কাল্পনিক বিভীষিকা ও মূর্তি দেখার ভয়।
ঔষধ : লাইকোপোডিয়াম।
(২০) একা থাকতে ভয়, বিদ্যুতের ভয়, সন্ধ্যাবেলায় ভূতের ভয়।
ঔষধ : র্যানানকিউলাস।
(২১) সন্ধ্যাবেলায় ভূতের ভয়।
ঔষধ : পালসেটিলা।
(২২) বিভিন্ন রকমের ভয়—কষ্ট সহ্য করার, হঠাৎ চমকে ওঠার, উন্মত্ত হওয়ার প্রভৃতি।
ঔষধ : ক্লোরিন।
(২৩) সন্দেহপ্রবণ মন, অসুখকর প্রণয়, অবিশ্বাসী মন, জীবনে ক্লান্তি, মূর্ছা ও মৃতপ্রায় অবস্থা।
ঔষধ : ল্যাকেসিস।
(২৩) শোক ও সেই সঙ্গে রাত্রে ভয়, ভয়জনক মুখ দেখে, ঘুম ভেঙে যায়, ঝগড়াটে স্বভাব।
ঔষধ : মার্ক-সল।
(২৪) কাল্পনিক অনিষ্টের ভয়।
ঔষধ : ক্যান্থারিস
(২৫) ভয় ও আশঙ্কা থেকে কোনো অসুখের উৎপত্তি।
ঔষধ : ওপিয়াম।
(২৬) পরিচিত ব্যাক্তির সঙ্গে দেখা করতে ইচ্ছা হয় না, যে কখনো তাদরে অপমানিত করেছে মনে করে কিন্ত কখন ও কি ভাবে যে সে অপমান করছে তা সে জানে না, ক্রন্দনশীল ও ব্যাকুল স্বাভাব, মানসিক বিকৃতি।
ঔষধ : আর্সেনিক অ্যালবাম ।
(২৭) পাগল হওয়ার ভয়, কোনো জন্ত কামড়ানোর ভয়, কোনো ভয়াবহ প্রতিমূর্তি দেখার ভয়।
ঔষধ : স্ট্র্যামোনিয়াম।
(২৮) তাড়াতাড়ি হাঁটার সময় ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে ভয় হয়।
ঔষধ : স্ট্যাফিসেগ্রিয়া।
(২৯) ভুতের ভয়, কোনো কাজ ভালো করে করতে অসমর্থ হওয়ার ভয়।
ঔষধ : কার্বো-ভেজ।
(৩০) শোক ও দুঃখের সঙ্গে লজ্জা, নানা ধরনের কাল্পনিক কষ্ট, মাথার যন্ত্রণা, মাথা ঘোরা, সেই সঙ্গে মানসিক কষ্ট।
ঔষধ : ইগ্নেসিয়া।
(৩১) বিষ খেয়ে মরার ভয়।
ঔষধ : ড্রসেরা।
(৩২) ভবিষ্যৎ বিষয়ে ভয়, মানসিক উদ্বেগ।
ঔষধ : ডালকামারা।
(৩৩) কষ্ট সহ্য করতে পারে না—কষ্টের জন্য ভয়।
ঔষধ : কলচিকম।
(৩৪) দিনে ঘুম কিন্তু রাত্রে ঘুম হয় না, মাথার চুল উঠে যায়, দুর্বল ও ক্ষীণ স্বর, ভবিষ্যৎ বিষয়ে ভয়।
ঔষধ : স্ট্যাফিসেগ্রিয়া।
(৩৫) চোর বা সামান্য কোনো তুচ্ছ বিষয়ে ভয়।
ঔষধ : ইগ্নেসিয়া।
(৩৬) মৃত্যুর ভয়।
ঔষধ : ডিজিটেলিস।
(৩৭) কেউ যেন একাকে ফেলে রেখে গেছে—ক্ষুব্ধচিত্ত, তাকে কোনোভাবে শাস্ত করা যায় না।
ঔষধ : কার্বো এনিমেলিস।
(৩৮) বন্ধুদের জন্য শোক বা দুঃখের কারণে শারীরিক পীড়া, চুপচাপ থাকে, কারো সঙ্গে কথা বলে না, নৈরাশ্য।
ঔষধ : কস্টিকাম।
(৩৯) সব সময় ঘুমাতে ইচ্ছা, অল্প বয়সে চুল পাকে, কথা বলতে অক্ষম, শরীর ক্ষীণ, বাড়িতে মন পড়ে থাকে, নীরবে কাঁদে, রাত্রিশেষে ঘাম হয়।
ঔষধ : ফসফরিক এসিড।
(৪০) দুর্বলতা, ক্লান্তি, মূর্ছা—সেই সঙ্গে প্রস্রাবজনিত উদ্বেগ, সবাই বাড়িতে থাকা সত্ত্বেও বাড়ির জন্য চিন্তা।
ঔষধ : ইউপেটোরিয়াম পাপিউরা।
(৪১) প্রতিহিংসা-সহ ভয়ানক রাগ ও খিটখিটে স্বভাব, প্রতিবার খাওয়ার পর বমি।
ঔষধ : কলোসিন্থ।
(৪২) মানসিক উদ্বেগজনিত উদরাময়, থিয়েটারে বা অন্য কোথাও যাবে—এমন সময় মলত্যাগের বেগ উপস্থিত হয়, মিষ্ট দ্রব্য খেতে ইচ্ছা।
ঔষধ : আর্জেন্ট নাইট্রিকাম।
(৪৩) মলত্যাগের পর আরাম বোধ হয়, কিন্তু ভয় ও ব্যাকুলতা থাকে, দিনে গরম ও রাতে শীত এবং ভয় কিংবা রাগের কারণে পীড়ার উৎপত্তি।
ঔষধ : একোনাইট নেপিলাস।
(৪৪) মাংসে অরুচি, তলপেটের মধ্যে ঢেলা বা গোঁজ পোতা আছে মনে হয়।
ঔষধ : এলাজ।
(৪৫) মানসিক কারণে ও ভয় থেকে পীড়ার উৎপত্তি ও সেই সঙ্গে কপালে ঠাণ্ডা ঘাম।
ঔষধ : ভিরেট্রাম এলবাম।
(৪৬) পুরাতম উদরাময়—রোগীর লবণ খাবার নিতান্ত ইচ্ছা।
ঔষধ : নাট্রাম মিউর।
(৪৭) পেটে সেঁটে ধরার মতো বেদনা, ঘুম পায় কিন্তু ঘুমাতে পারে না, ঘুমোতে ঘুমাতে হঠাৎ চমমে ওঠে।
ওষুধ : বেলেডোনা।
(৪৮) মন বা শরীর একটু চঞ্চল হলে মুখখানা লাল হয়ে ওঠে।
ঔষধ : ফেরম-মেট।
(৪৯) হঠাৎ শোক, ভয়, দুঃসংবাদ, মনঃক্ষুণ্ণতা প্রভৃতি থেকে উদরাময় পীড়ার উৎপত্তি, রোগী চুপ করে থাকতে চায়।
ঔষধ : জেলসিনিয়াম।
(৫৯) রোগী নাক খোঁটে, অস্থির নিদ্রা, বার বার এপাশ ওপাশ করে ও চিৎকার করে কেঁদে ওঠে।
ঔষধ : সিনা।
(৫০) ঝিনুকের মাংস ও ঠান্ডা দ্রব্য খেতে ইচ্ছা, শারীরিক ব্যায়াম সম্বন্ধে রাত্রে স্বপ্ন দেখে।
ঔষধ : রাস টক্স।
(৫১) টক দ্রব্য খেতে ভয়ানক ইচ্ছা, সব জিনিসই মিষ্টি মনে হয়।
ঔষধ : স্কুইলা।
আরোগ্য হোমিও হল এডমিন : আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করলাম। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। নতুন কোনো স্বাস্থ্য টিপস নিয়ে হাজির হবো অন্য দিন। এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যগুলো কেবল স্বাস্থ্য সেবা সম্বন্ধে জ্ঞান আহরণের জন্য। অনুগ্রহ করে রেজিষ্টার্ড হোমিওপ্যাথিক পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবনে আপনার শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি হতে পারে। প্রয়োজনে, আমাদের সহযোগিতা নিন। এই ওয়েব সাইটটি কে কোন জেলা বা দেশ থেকে দেখছেন “লাইক – কমেন্ট” করে জানিয়ে দিন। যদি ভালো লাগে তবে “শেয়ার” করে আপনার বন্ধুদের জানিয়ে দিন। সবাই সুস্থ্য, সুন্দর ও ভালো থাকুন। নিজের প্রতি যত্নবান হউন এবং সাবধানে থাকুন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।