পাকস্থলী ক্যানসার
হোমিও চিকিৎসায় ক্যানসার আরোগ্য
ডাঃ অরবিন্দ সরকার
পৃথিবী জুড়ে যত ক্যানসার রোগে মৃত্যু হয়, পাকস্থলীর ক্যানসার তাদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ন। অনেকে মনে করেন পাকস্থলী স্বাভাবিক থাকলে ক্যানসার বাসা বাঁধতে পারেনা। কেউ কেউ দেখিয়েছেন শতকরা ২০ ভাগ ক্ষেত্রে এটি বংশানুক্রমিক রোগ। ৪৫বৎসর এর উপরের বয়সে সাধারণতঃ পাকস্থলীর ক্যানসার দেখা দেয়। পাকস্থলীতে ক্যানসার হলে শরীর অতিশয় শীর্ন ও অজীর্ন বর্তমান থাকে। পাকস্থলীতে যন্ত্রনা, রক্ত মিশ্রিত শ্লেষ্মা বমন, পাজরের নিম্ন দিকে হাতদিয়ে পরীক্ষা করলে কঠিন অর্বুদ অনুভব করা যায় ।
পাকস্থলী ক্যানসার রোগ নির্ণয় :-
(১) ক্যানসার কোষ খুজে বের করা (Exfoliatives cytology) দ্বারা।
(২) বেরিয়াম এক্স-রে করে ধরা যায় ।
(৩)বর্তমানে (Fiber optic optic gastric photography) এর সাহায্যে সহজে ধরা যায়।
(৪) ৮৪ শতাংশ ক্ষেত্রে পায়খানার সাথে লুকায়িত রক্ত থাকতে পারে যা পরীক্ষা করলে ধরা যায় ।
পাকস্থলী ক্যানসারের চিকিৎসা :-
ডাঃ কেন্টের মতে- এসেটিক এসিড, আর্স, আর্স-আয়োড, ব্যারা- কার্ব, বেল, বিসমাথ, ক্যাডমিয়াম, ক্যাপসি, কার্বো-এসি, কার্বো- এ্যানি, কার্বো-ভেজ, কোনি, কোটেলাস-হরি, কন্ডুরাঙ্গো, মার্ক- কর, মেজি, নাক্স, ফস, প্লাটি, সিপি, সাইলি, স্ট্যাফি, সালফ। ডাঃ বোরিকের মতে- এসে-এসি, আর্স, বিসমাথ, ক্যাড-সালফ, কন্ডুরাঙ্গো, ফর্মিক-এসিড, হাইড্রাস, ক্রিয়োজোট, আর্নিথো গেলাম, ফস, সিকেলি ।
ডাঃ ফাটকের মতে- বিউফো কোনিয়াম, কন্ডুরাঙ্গো, আকাইটিস মার্ক, ফস, সাইলি।
নারের মতে- এসি-এসিড, একটিয়া স্পাই, আর্স, আর্স-আয়ো, বিসমাথ, ক্যাপস, কার্বো-এসি, কার্বো-ভেজ, কার্বো-এ্যানি, কোনি, কন্ডুরাঙ্গো, হাইড্রাস, ক্রিয়োজোট, লাকে, লাইকো, মার্ক- কর, মেজি, ফস, সিপি, সাইলি, স্ট্যাফি, সালফ।
ডাঃ জে, এইচ, ক্লার্কের মতে- এসি-অক্সালিক, এন্টি-ক্রু, এন্টি- স্পাই, বিসমাথ, ম্যাগফস, প্লাটিনাম, মিউর, সিকেলি। ডাঃ রোগারের মতে- লাইকো, ফস।
ডাঃ লিলিয়েস্থান এর মতে- আর্স, আর্স-আয়োড, ব্যারা, বেল, বিসমাথ, কার্বো-এ্যানি, কার্বো-ভেজচ, কোনি, কন্ডুরাঙ্গো, হাইড্রাস, ক্রিয়ো, ল্যাকে, লাইকো, মেজি, ফস, সিপি, সাইলি, স্ট্যাফি, সালফ, এসেটিক এসিড।
এসেটিক-এসি (Acetic Acidum) :- এটি অত্যন্ত প্রশংসার সাথে আরোগ্য দায়ক। পাইলোরাসের স্কিরাস জাতীয় ক্যানসার, ক্ষতযুক্ত, অবিরাম যন্ত্রনা পাকস্থলীর একটি নির্দিষ্ট স্থানে । মনের দুঃসহ যন্ত্রনা এবং নিস্তেজতাসহ যা ঘুমাতে দেয়না । সব সময় অত্যন্ত তৃষ্ণা। গভীর জ্বালা যন্ত্রনা পাকস্থলীতে। প্রতিবার খাবার পর হলদে গাজলা জাতীয় বমি। ফ্যাকাসে মোমের মত চর্ম, জিহ্বা ফ্যাকাসে এবং শিথিল বা থলে থলে। অত্যাধিক দুর্বলতা, প্রচুর, ফ্যাকাসে প্রস্রাব। জ্বালা যুক্ত পাকস্থলী যা পেট চেপে শুইলে ভাললাগে । পিছনে শুইতে পারেনা। (টি, এস, লায়ার)।
পাকস্থলীর ক্যানসার। ক্ষীনতর, দুর্বল এবং রক্তশূন্যতা সহ। মোমের মত পান্ডুবর্ন মুখমন্ডল। ঠান্ডা পানি অধিক পছন্দ করে। পাকস্থলীর বস্তু মনে হয় গাজাইয়া তোলা হইতেছে। অভ্যন্ত তৃষ্ণা, বমি বমি ভাব এবং বার বার বমি। পাইলোরাসের স্কিরাস জাতীয় ক্যানসার । (ক্লার্ক)।
এটি পাকস্থলীর ক্যানসারে আরোগ্য দায়ক। এটি একটি উত্তম ঔষধ অনেকগুলির মধ্যে যা ক্যানসার এর আকৃতি কমাতে পারে। এটি প্রধান নিদর্শন অতিরিক্ত ক্ষীনতা এবং দুর্বলতা। তৃষ্ণা এবং প্রচুর ফেকাশে প্রস্রাব । (ডাঃ চূগা)।
এমোনিয়াম-মিউরেটিকাম (Ammonium- Muriaticum) :- পাকস্থলীর ক্যানসার। ইপিগ্যাসট্রিয়ামে যন্ত্রনা খাবারের একটু পরেই। টক খাবারের ইচ্ছা। খাবার উ আসে । জল তিতা লাগে। গরম অনুভব । (রিক)।
আর্সেনিক (Arsenic) :- জ্বালাকার যন্ত্রনা পাকস্থলীতে। অত্যন্ত তৃষ্ণা। টক খাবার ইচ্ছা। ঠান্ডা পানিতে রোগের বৃদ্ধি এবং ঠান্ডা খাবারে। গরম পানিতে আরাম। যাহা খায় তাহাই বমি করে। কালচে মত বমি। ভয়ঙ্কর অনুভূতি দুর্বলতার এবং অত্যন্ত ক্লান্তি দুঃচিন্তাসহ পাকস্থলী প্রদেশে এবং অস্থিরতা । (টি,এস, লায়ার)।
পাকস্থলীর ক্যানসার, জলন্ত বেদনাসহ খাবারের পর অথবা রাত্রে (ক্লার্ক)।
বেলেডোনা (Bellodonna) :- পাকস্থলীর ক্যানসার। তীব্র যন্ত্রনাদায়ক ব্যাথা, অবিরাম চাপের প্রকৃতি। পাকস্থলী চাপে সহিষ্ণুতা। সর্বক্ষণ বমি, বিবর্ন মুখমন্ডল। ঠান্ডা ঘর্ম এবং বরফের মত ঠান্ডা হাত এবং পা। বমি অম্লকারক তিতা, টক এবং কখন রক্তের স্বাদ। খাদ্য ও পানিয়ে যন্ত্রনা বৃদ্ধি। এটি প্রয়োজনীয় উপশমের জন্য। ইহা সন্দেহ পূর্ন যে ক্যানসার এই অবস্থায় (টি, এস,হনি) আরোগ্য হতে পারে। পাকস্থলীর ক্যানসার, ফাটা, আচরানো ব্যাথা, বমির ইচ্ছা, গোংগানী এবং বমি । চোখ ঘুরানো, শুখনো মুখ এবং গলা । (টি, এস, লায়ার)।
বিসমাথ (Bismuth) :- পাকস্থলীর ক্যানসার। রাউর উপদেশ দেন প্রচন্ড আক্ষেপ, বেদনা, জলন্ত যন্ত্রনা, তীব্র জ্বালা পাকস্থলী প্রদেশে। পাকস্থলী বড় হয়ে যায় এবং ঝুলে পরে ইলিয়াম ঝুটিতে। শক্ত মাংস বৃদ্ধি নাভি প্রদেশে এবং পাজরের নিচের হাড়ের ডানদিকে। পাইলোরাসের ক্যানসার। এ্যাবডোমেন বায়ুপূর্ন পৃষ্ঠদেশ পর্যন্ত ।
অত্যন্ত গুর গুর শব্দ বাতাসের কলোন পর্যন্ত যাহা সাধারণতঃ দুর্লভভাবে বের হয় এবং হলেই উপশম হয়। বমি হয় কয়েদিন পর পর, যখন পাকস্থলী খাদ্যে পূর্ন হয়। প্রচুর পরিমানে বমি হয়, সারাদিন। (টি, এস, লায়ার)।
পাকস্থলীর ক্যানসার। বমি অধিক পরিমানে এবং অত্যন্ত তৃষ্ণা, জল পান করলে সাথে সাথে বহিষ্কার করে ফেলে। শক্ত খাদ্য কিছু সময় থাকে। (ক্লার্ক)।
ইহা উপকারী পাকস্থলীর ক্যানসারে যখন বমি প্রচুর পরিমানে হয় সারাদিন ব্যাপি। এই রকম অবস্থায় যেখানে প্রচুর দহন এবং যন্ত্রনা। ইহার অস্থিরতা এবং তীব্র দৈহিক যন্ত্রনা যাহা আর্সেনিকে রয়েছে। সবসময় ঘুরতে ইচ্ছা করে, এক জায়গায় দাড়াতে পারে না বেশী সময় । (ই, বি, ন্যাস)।
পাকস্থলীর ক্যানসার বমিসহ, সারাদিন অধিক পারিমানে খাদ্য বমি যাহা পাকস্থলীতে অবস্থান করছিলো। অত্যাদিক অনুভূতি ভিতরের অংশে এটি হচ্ছে একটি নিদর্শন, ৩ জনে সুপারিশ করেছেন। (ডাঃ ছুগা)।
কার্বো-এ্যানিমেলিস (Carbo Animalis) :– পাকস্থলী ক্যানসার। পাকস্থলী থেকে লবণাক্ত জল উঠে মুখ পর্যন্ত। যাহার সাথে বমি করার ইচ্ছা এবং যাহা অনুসরণ করে তীব্র খালি ঢেকুর, ঠান্ডা পা এবং হিক্কা । চাপ, আচরানো, পেট কামরানো এবং জ্বালা পাকস্থলীর মধ্যে। সামান্য শক্ত পায়খানা, মাংস বৃদ্ধি। তামার রং এর উদ্ভেদ মুখমন্ডলে । (টি, এস, লায়ার)।
কার্বো-ভেজিটেবলস্ (Carbo-Vegetables) :- পাকস্থলীর ক্যানসার। দহন যন্ত্রনা সম্প্রসারিত পাকস্থলীর গভীর গর্ভে এবং সামান্য পিছনে। উদ্বেগ, প্রান্তদেশ ঠান্ডা, ঠান্ডা চট চটে ঘর্ম । মাঝে মাঝে থেমে যাওয়া নাড়ী । (টি, এস, লায়ার)।
পাকস্থলীর ক্যানসার। রোগী দুর্বল, কৃষ, ক্ষীন নারী, প্রান্তদেশ ঠান্ডা এবং ঠান্ডা চট চটে ঘর্ম, দহন যন্ত্রনা, পাকস্থলীর সামান্য পিছনে। (টি, এস, লায়ার)।
পাকস্থলীর ক্যানসার অতিরিক্ত ফাঁপা সহ ঐ অঙ্গ। পাকস্থলীতে অত্যন্ত ব্যাথা গ্যাসের জন্য, যাহা বৃদ্ধি পায় শুইলে। রোগ প্রতিসেধক এর খারাপ প্রতিক্রিয়া গলিত মাংস গলিত মাছ, পচা চর্বী এবং পারদ ঘটিত রোগের ফলে। গলিত মাংস ইত্যাদি বলা হয় ক্যানসার এর কারণ। রোগী ঠান্ডা হয়ে যায়, কিন্তু বাতাস চায় রক্তে অসম্পূর্ণ অক্সিজেনের জন্য। (ডাঃ চূগা)।
কস্টিকাম (Causticum) :- পাকস্থলীর ক্যানসার যখন মাংস খুব কোমল ঐ যন্ত্রের উপর। যাহা বহণ করতে পারেনাএমনকি কাপরের স্পর্শ পর্যন্ত সহ্য করতে পারেনা। হালকা খাদ্য অথবা সমান্য খাদ্য পাকস্থলীতে ছুরি ঢুকানো যন্ত্রনা সৃষ্টি করে। ৩× দিনে তিন বার সুপারিশ । (ডাঃ চূগা)।
চেলিডোনিয়াম (Chelidonium) :- কুৎসিত হলদে রং তৈরী হয় গাত্র চর্মের উপর চেলিডোনিয়ামে এবং অন্য লক্ষণ শুকনা, শক্ত যাহা বিশেষ ভাবে ক্যানসার ইঙ্গিত করে। ক্যানসার অব স্টমার্ক ইজ রেকোডলী কিওয়ড বাই সি, এম, ফস, উইথ দি ইউস অব দিস রিমেডি। পাকস্থলীর উপর কোমলতা তীব্র দৈহিক যন্ত্রনা খাদ্যে উন্নতী । ৬× শক্তি সুপারিশ করেন। (ক্লার্ক)।
পুরাতন পচনশীল ক্ষতে (বিস্তার) কার্সিনোমাতে। পাকস্থলীর যন্ত্রনা অবিরাম যাহা খনন করার মত। পাকস্থলীতে গরম অনুভব বমির ইচ্ছা। জ্বালা পাকস্থলীর মধ্যে। সমান্য পূজ, ক্ষতিকারক এবং তিক্ত। বৃদ্ধি-সকালে, মুক্ত বাতাসে হাটতে এবং উপশম-চাপে। (লিলিয়েস্থাল)।
কলোসিন্থ (Colocynth) :- তীব্র ছুরি বিদ্ধ যন্ত্রনা, গুলিছোরা বেদনা নিচের দিকে অন্ত্রের মধ্যে, পাইলোরিক অরিফিশ পাকস্থলীর গোটা পেটেই। ভাজ করলে, চাপদিয়ে ধরলে উপশম । রোগের বৃদ্ধি মানসিক আবেগ যেমন রাগ, বিরক্তীবোধ, ঘৃনা ইত্যাদিতে। (ডাঃ চূগা)।
কন্ডুরাঙ্গো (Condurango) :- ডাঃ স্মলপেজ এটির খুব উপকারীতা স্বীকার করেছেন। পাকস্থলীর ক্যানসার প্রচন্ড যন্ত্রনা, কালচে মাটির রং এর বমি। পাইলোরাস শক্ত, বড়, ফোলা, সম্পূর্ন ক্ষুধা হীনতা, শীর্নতা, রুগ্ন দেখতে, কোষ্ঠ কাঠিন্য। ইসোফ্যাগাসের স্টীকচার জ্বলন্ত ব্যাথা স্টারলাম এর পিছনে । বাম হাইপো কন্ড্রিয়াম শক্ত সর্বদা জ্বালা যন্ত্রনা । (টি, এস, পায়ার)।
এটির সাফল্য অসামান্য ‘খ্যাতিপূর্ন পাকস্থলীর এবং অন্যান্য ক্যানসারে। অনেক রোগী আরোগ্য হয়েছে ১×দেওয়াতে। উন্মূক্ত ক্যানসার এবং ক্যানসার এর ক্ষতে। ইহা ব্যাথা কমায়। Bernstein, বিশ্বাস করেন এর আরোগ্য বিস্তার এপিথেলিওমা বিশেষ করে উন্মূক্ত এবং ক্ষতপূর্ন প্রকারেও। তিনি ৬× শক্তি সুপারিশ করেন । (দ)।
পাকস্থলীর ক্যানসার। ফলস রিবে ঘা যাহা হাতের মত বড় দৃশ্যত ক্যানসারে। (ক্লার্ক)।
ইসোফেগাস, পাকস্থলী এবং ইনটেসটাইনাল ক্যানসার। সর্বদা জ্বলন্ত যন্ত্রনা এবং বমি এর মূল্যবান বাহিরের চিহ্ন (যাহা দেখা যায়)। লোবিয়াল কমিশার ফাটা। ইহা কাজ করে ক্যানসার অবস্থিত শ্লৈষ্মিক ঝিল্লির যোগাযোগ স্থানে যেমন ঠোঁটে,পায়খানার দ্বারে, চোখের পাতায় । (এফ, জে, মাষ্টার)।
গ্যাস্ট্রিক ক্যানসার, সর্দি এবং সিফিলিস পাকস্থলীর শক্ততা, সর্বদা জ্বালা যন্ত্রনা, খাদ্য বস্তু বমি, বাম হাইপোকন্ড্রিয়ার শক্ত অবস্থা। (বরিক)।
কোটেলাস-হরি (Caotalus Horridus) :- পাকস্থলীর ক্যানসার, লালা যুক্ত বা রক্তাভ, অধিক রক্তস্রাব, অধিক শেখা বমি খালি বোধ সহ কস্ট। উত্তেজক পদার্থের আকাঙ্খা। কম্পিত হওয়া, কম্পন ইপিগ্যাসট্রিয়ামের নিচে। (বরিক)।
ইউক্যালিপটাস (Eucalyptus) :- পাকস্থলীর মারাত্মক ক্যানসার, রক্ত বমি এবং টকবমি। (ডাঃ চূগা)।
ফরমিক এসিড (Formic Acid) :- টিউবার ক্লোসিস, পুরাতন নেফ্রাইটিস, ম্যালিগন্যান্ট টিউমার, পালমোনারী টিউবার ক্লোসিস এর তৃতীয় অবস্থায় নয়। লিউপাস কার্সিনোমা স্তনের এবং পাকস্থলীর ক্যানসারে এটি ব্যবহার্য । (ডাঃ চূগা)।
জিরেনাম-ম্যাকুলেটা (Geranum Maculatum) :- এটি পাকস্থলী থেকে রক্ত যাবে একটি উৎকৃষ্ট ঔষধ যখন পাকস্থলীতে ক্যানসার হয়। ডাঃ জোন্স বলেছেন এর টিংচার ১ ড্রাম মাত্রায় প্রতিমাত্রায় দিতে ১ঘন্টা অন্তর যতক্ষণ রক্ত বন্ধ না হয়। আমরা সাধারনতঃ ৪/৫ ফোটা মাত্রায় অথবা ১২১ ফোটা মাত্রায় জলসহ ব্যবহার করি ঐ অবস্থায় আসন্ন বিপদ নিরসনের জন্য ।
হাইড্রাসটিস (Hydrastis) :- পাকস্থলীর ক্যানসার সবই বমি করে জল আর দুধ ছাড়া। পাকস্থলীর মধ্যে যন্ত্রনা। শীর্নতা, রুটি এবং সর্বজি খেতে পারেনা। বদহজম এবং গ্যাসট্রিক। (টি, এস, লায়ার)।
হাইড্রাস, ক্যানসার প্রবনতার সদৃশ্য, দেখতে শ্রান্ত অবস্থা, গায়ের চর্ম পিঙ্গল বর্ণ, চামড়া শুকনা অবস্থা, ক্ষীন জীবনীশক্তি, খাদ্যে অনিহা, কোষ্ঠ কাঠিন্য এবং ক্ষতের প্রবনতা। ইহা ভাল করতে পারে লিউপাস, এপিথেলিওমা, এবং মারাত্মক বা। পাইপোরাস এবং পাকস্থলীর টিউমার অদৃশ্য হয়ে যায় হাইড্রাসটিসের ব্যবহার চলতে থাকলে। (দে)।
আয়োডিয়াম (Iodine) :- পাকস্থলীর ক্যানসার, যখন অভিক্ষুধা, অতি শীর্ণতা, অতি অস্থিরতা, দুর্বলতা, গরম কাতরতা এবং আহারে উপশম। প্রচন্ড বমি পাকস্থলীর মধ্যে দপদপানি অনুভব হয় প্রভৃতি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যসমূহ স্মরনে রাখতে হবে। শক্তি ৬,১২,৩০,২০০ থেকে উচ্চতর (ডাঃ চূগা)।
ক্রিয়োজোটাম (Kreosotum) :- ক্রিয়োজোটের সমান বা সমমানের কোন ঔষধ নেই পাকস্থলীর ক্যানসার এর চিকিৎসা ক্ষেত্রে। গ্যাস্টিক কার্সিনোমার বমির ক্ষেত্রে ৩০ শক্তি । (ডাঃ কসটিস)।
ল্যাকেসিস (Lachesis) :- পাকস্থলীর ক্যানসার চাকু ঢোকান যন্ত্রনাসহ এবং সর্বক্ষন যন্ত্রনা দায়ক অনুভূতি, দুর্বলতা খোরাভাব বাম কাধে এবং হাতে। উম্মুক্ত ক্যানসার দেখতে কালচে নিলাভ লাল রক্তে কালচে ডোরাসহ যা জমাট বাধেনা । (লিলিয়েস্থাল) পাকস্থলির ক্যানসার। তার সাথে চিবান যন্ত্রনা চাপে, আহারে উপশম । কিন্তু কয়েক ঘন্টা পরেই ফিরে আসে যন্ত্রনা এবং পাকস্থলি যত খালি হয় যন্ত্রনা ততই বারে। স্পর্শাসহিষ্ণুতা বিশেষত কাপড় বাধার চাপ সহ্য করতে পারে না। মাদকাশক্ত । (টি, এস, লায়ার)।
লোবেলিয়া (Lobelia) :- পাইলোরাসের ক্যানসার। পাইলোরাসের ক্যানসারে বেদনা, পাকস্থলীর স্ফীতিসহ সারা বিকাল পর্যন্ত। অত্যন্ত নিস্তেজতা মানসিক এবং দৈহিক যা অনুসরন করে তখন হইতে সকাল পর্যন্ত এবং পরের দিন রোগীর স্নায়ুবিক যন্ত্রনা ডান হাত হতে অঙ্গুল পর্যন্ত নামে। তৃতীয়দিন অসম্ভব যন্ত্রনা ডান হাটুতে যা দুইদিন পর্যন্ত থাকে। বদহজমে অভ্যস্ত, হজমের শক্তি হীনতা । (ক্লার্ক)।
লাইকোপোডিয়াম (Lycopodium) :- কার্সিনোমা ভেন্ট্রিকুলি পাকস্থলীর ক্যানসার আহারের পর ঘন সবুজ বমি, বায়ুজনিত পাকস্থলী ও পেটের ফোলা এবং বায়ুর শক্ত। পিত্ত বমি পূজ এবং জমা রক্ত বমি। হাইপোকন্ড্রিয়াতে টান টান বোধ, অত্যন্ত শীর্নতা সহ দূর্বলতা। স্তনের স্কিরাসসহ আপেক্ষিক ও ছুচ ফুটানো যন্ত্রনা মুখে গোলাকার দাগ। যন্ত্রনার সময় বেড়াতে বাধ্য হয় এবং ক্রন্দন করে, মুক্ত বাতাসে উপশম। বিকাল ৪টা হইতে ৮টা পর্যন্ত বৃদ্ধি । পেটে বায়ু গরম পানিয়ে ও খাদ্যে আকাঙ্খা, মিষ্টিতে আকাঙ্খা ইত্যাদি চরিত্রগত লক্ষণগুলি মনে রাখা দরকার । এটি লিভার ক্যানসারে ও উপযোগী। শক্তি- ১২,৩০,২০০থেকে উচ্চতর শক্তি।
ম্যাগনেসিয়াম-ফস (Magnesium Phosphoricum) :- পাকস্থলীর ক্যানসার। অসহ্য জ্বালা, যন্ত্রনা, বমি এবং হিক্কা, ক্ষেচুনিযুক্ত ফোঁপান, তিনদিন পর্যন্ত। বমি করা বস্তু জমানো দুধ রস এবং শ্লেস্মা। অত্যন্ত বেদনা বিলাপ সহ । জ্বালা, স্বাদহীন, ঢেকুরতোলা, সর্বক্ষণ বমিভাব। গ্যাস, স্পর্শাসহিষ্ণু অধিকতর ইপিগ্যাসট্রিয়ামে স্পর্শে। ক্ষেচুনি যুক্ত যন্ত্রনা পাকস্থলীতে, সঙ্কোচনশীল বেদনা, গরমে ভালো লাগে, ভাল লাগে ভাজ হইলে। ঠান্ডা পানি পান করলে কলিক বেদনা শুরু হয় পাকস্থলীতে যাহা অন্ত্রে বিকীর্ন হয়। অত্যন্ত তীব্র যন্ত্রনা, ভালো লাগে ভাজ করলে, হাটলে, বিশ্রামে এবং বক্রতায় ।
মেজেরিয়াম (Mezerium) :- পাকস্থলীর ক্যানসার সহ জ্বালাকর ক্ষতকর যন্ত্রনা, অত্যন্ত শীর্নতা, মুখের মাংসপেশী কুঞ্চিত, টেনে জড় করার মত। পাকস্থলীর অভ্যান্তরিক শৈল্পিক আভরন ক্ষত যুক্ত বোধ, খাদ্য যেন পাকস্থলীতে দীর্ঘকাল পরিপাক বিহীন অবস্থায় আছে তেমন বোধ; সর্বদাই বেশ খানিকটা চকলেট রং এর বমিসহ প্রচন্ড জ্বালা গলার মধ্যে, প্রচন্ড বমি ভাবসহ নিদারুন মৃত্যু যন্ত্রণা, নিদ্রাহীনতা, দুর্বলতা, পাকস্থলী স্থানে শক্ত ডেলামত, রোগ রোগ আতঙ্ক ও বাতিক। কোষ্ঠকাঠিন্য। রক্তবমি। শক্তি – ৬x,৬,১২,৩০,২০০ ।
অর্নিথো-গেলাম (Ornitho – Galum) :- এটি পাকস্থলীর ক্ষত এবং ক্যানসারে একটি মূল্যবান ঔষধ। অসহ্য যন্ত্রনা কিছুই পেটে থাকেনা, গরম খাবারে উপশম, ঠান্ডা খাবারে বৃদ্ধি। যন্ত্রনা পাকস্থলীতে আরম্ভ হয়ে হাত এবং স্কন্দদেশ পর্যন্ত বিস্তারিত হয়, যেন লোহার ইট জোর করে পাকস্থলীতে এবং বক্ষে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পাকস্থলী ও পেটে বায়ুজনিত ফোলা তার সংগে প্রচুর দূর্গন্ধ উদ্গার, কোমরের কাপড় ঢিলা করে পরতে বাধ্য হয়, জীবনে বিতৃষ্ণা,আত্মহত্যার প্রবনতা, পরিপূর্ন দুর্বলতা এবং যন্ত্রনাদায়ক খালিবোধ বুকপর্যন্ত। কস্টের জন্য সারা রাত্রি জেগে থাকে। যখন আহার করে তখন পাকস্থলী বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মনে হয়। পাকস্থলীতে যন্ত্রনা ২/৩ বার বমি প্রচুর বায়ু কোন সময় বুকের নীচে ফোলা বোধ হয়। গলা বুক জ্বালা, খাবার গলা দিয়ে উঠা। কোষ্ঠ বদ্ধতা উদরাময়ে উপশম। এর মাদার টিংচার ১ ফোটা ১মাত্রা দিয়ে যতদিন কাজ চলবে অপেক্ষা করতে হবে। প্রায় ক্ষেত্রে ঔষধ খাবার পর কয়েকদিন বেশ বৃদ্ধি পায় পরে উপশম আসে। মাদার টিংচার না পাওয়া গেলে ৬Xশক্তির গ্লোবিউল ব্যবহার করলে কাজ পাওয়া যাবে।
ফসফরাস (Phosphorus) :- পাকস্থলীর ক্যানসার। পাকস্থলীর স্থানে স্পর্শাসহিষ্ণু, সর্বদা বমিভাব, পাকস্থলী ভর্তি আহারে, সামন্য মাত্র জলপানেও টকমত বমি করে, অথবা দূর্গন্ধ তরল বমি দেখতে কালি মেশানো জলের মত এবং মাটির মত। সমগ্র পেটে কাটার মত যন্ত্রনা, চাপে ও সঞ্চালনে বৃদ্ধি, ঢুকে যাওয়া পেটের চারদিকে পরিবেস্টিত শক্ত ফোলা । আহারের পর প্রচুর পরিমাণে ঢেকুর উঠে, পেটের মধ্যে সুক্ষ ধরনের নানা শব্দ, রক্ত বমি, ফ্যাকাসে, মাটির মত দেহের বর্ণ এবং শীর্নতা ।
সিপিয়া (Sepia) :- পাকস্থলীর ক্যানসার। খাবারের পর টক স্বাদ। শ্লেস্মা বমি সামান্য খাবারের পর। বমির পরে যন্ত্রনা যাহা পিট পর্যন্ত ছড়ায়। সহ উদ্বেগ, বুকের কষ্ট, ঠান্ডা ঘর্ম সহ, পাইলোরাস প্রদেশ শক্ত, কোষ্ঠ কাঠিন্য। পাকস্থলীতে পাক খায় এবং গলা দিয়ে উঠে। জিহবা শক্ত হয়ে যায়। কথা বলতে পারে না। কিছুক্ষন পরে শরীর শক্ত হয়ে যায় । (টি, এস, লায়ার)।
পাকস্থলীর ক্যানসার। অজীর্নতা, হলুদ রং এর জিন নাকের উপর। শক্ত, কষ্টে পায়খানা, গুজ্জদ্বারে ভারিবস্তুর অনুভূতি । পাইলোরাস প্রদেশ শক্তমত। শ্বেত প্রদর, রজ স্বল্পতা, পাকস্থলী প্রদেশে জীবন্ত কিছুর অনুভূতি যা উপরে উঠে এবং নরছে। গলায় কিছুর অনুভূতি যা উপরে উঠে (টি, এস, হনি)।
সাইলিসিয়া (Silicea) :- পাকস্থলীর ক্যানসার। জ্বালা, মনে হয় পাকস্থলীর উপর কিছু প্রবেশ করেছে। পাকস্থলীর অভ্যান্তর স্পর্শাসহিষ্ণু । বিষাদগ্রস্থ। সর্বদাই বমি ভাব বিশেষতঃ যখন পান করে। চাপ, যেন অতিরিক্ত খাওয়া হয়েছে। পাইলোরাস শক্ত, দৃঢ় । পাকস্থলীর উপর তীব্র যন্ত্রনা । (টি, এস, লায়ার)
স্টেফিসেগ্রিয়া (Staphysagria) :- পাকস্থলীর ক্যানসার। মনে হয় যেন পাকস্থলী ঝুলে নিচে নেমে গেছে। আলগা হয়েছে। সিফিলিস ও টিউবার কুলার ধাতুর লোকদের ভাল কাজ করে । (টি, এস, লায়ার)।
সিকেলী-করটাম (Secale cornutum) :- পাকস্থলীর ক্যানসার। অত্যন্ত দুর্বলতাসহ, সহজে খাদ্য বমি। বমির সাথে পিত্তরস, শ্লেষ্মা এবং মেটে কফি রং এর তরল, সবরকম খাদ্য এবং পানীয়। পাকস্থলী থেকে রক্ত ক্ষরন। যন্ত্রনা দায়ক অনুভূতি, ছিন্নকর কষ্ট এবং তীব্র দৈহিক যন্ত্রনা পাকস্থলী গভীর গর্তে নিষ্ফল বমির ইচ্ছা। জ্বালাকর অনুভূতি পাকস্থলীর গভীর গর্তে এবং ইপিগ্যাস্ট্রিয়ামে। প্রদাহ, গ্যাংগ্রীন এবং পাকস্থলীর ক্যানসার। বিরাগ বা অনিহা, বিশেষত মাংসে এবং চর্বি জাতীয় খাদ্যে। বমি বমি ভাব চলতেই থাকে যা বৃদ্ধি পায় পানি পানের পর ।
আরোগ্য হোমিও হল এডমিন : আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করলাম। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। নতুন কোনো স্বাস্থ্য টিপস নিয়ে হাজির হবো অন্য দিন। এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যগুলো কেবল স্বাস্থ্য সেবা সম্বন্ধে জ্ঞান আহরণের জন্য। অনুগ্রহ করে রেজিষ্টার্ড হোমিওপ্যাথিক পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবনে আপনার শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি হতে পারে। প্রয়োজনে, আমাদের সহযোগিতা নিন। এই ওয়েব সাইটটি কে কোন জেলা বা দেশ থেকে দেখছেন “লাইক – কমেন্ট” করে জানিয়ে দিন। যদি ভালো লাগে তবে “শেয়ার” করে আপনার বন্ধুদের জানিয়ে দিন। সবাই সুস্থ্য, সুন্দর ও ভালো থাকুন। নিজের প্রতি যত্নবান হউন এবং সাবধানে থাকুন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।