কিশোরীর অনিয়মিত মাসিক হলে এটা কী সমস্যা?
আরোগ্য হোমিও হল এ সবাইকে স্বাগতম। আশা করছি, সবাই ভালো আছেন। আজ আমরা এখানে আলোচনা করবো কিশোরীর অনিয়মিত মাসিক না হলে কী কী সমস্যা হয় তা নিয়ে আজকের জনবো, এটা সবার জানা জরুরী! তো আর কথা নয় – সরাসরি মূল আলোচনায়।
মাসিক হচ্ছে নারীদের নিয়মিত শারীরবৃত্তীয় একটি অবস্থা। কিন্তু অনেক কিশোরীই অনিয়মিত মাসিকের সমস্যায় ভুগছেন। বিশেষ করে কিশোরীরাই এই সমস্যায় বেশি ভুগেন। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছ থেকে কম বয়সি মেয়ে বা কিশোরীদের অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
একজন কিশোরীর অনিয়মিত মাসিক হয়, এটিকে কখন আমরা অনিয়মিত মাসিক বলব। এক্ষেত্রে কি কি সমস্যা হতে পারে এ বিষয়ে ডা: কিশোয়ার পারভীন বলেন, একজন কিশোরী উঠতি বয়সে প্রথম যখন মাসিক হয়, এটাকে এইজ অব ম্যানারকি বলা হয়। এই সময়টা তার প্রিবায়োটিক শুরু হয়। এই সময় থেকে প্রাপ্তবয়স্ক পর্যন্ত যে সময়টা বুঝায়, এই সময়ের মধ্যে বেশির ভাগ কিশোরীর অনিয়মিত মাসিক হয়। যেমন – প্রথমে মাসিক শুরু হলো। তারপর আর দুই তিন মাস মাসিক হচ্ছে না। হঠাৎ করে মাসিক শুরু হয়ে তখন আর বন্ধ হচ্ছে না। সাত দিনের পরিবর্তে ১০ দিন, ১৫ দিন, এক মাস ও দেড় মাসও নিয়মিত মাসিক চলতে থাকে। যে কারণে ওই কিশোরী রোগী নিজে ও তার পরিবার এ বিষয়টা নিয়ে বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েন। এটি নিয়ে অত্যাধিক দুঃচিন্তায় ভোগেন এবং চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। এ নিয়ে ভবিষ্যত চিন্তার শেষ নেই পরিবারের। এজন্য আমরা তাদের কাউন্সিলিং করি। এটা স্বাভাবিক বিষয় এবং এটি একটি ফিজিওলজিক্যাল সমস্যা। এটা কোনো প্যাথলজি অসুবিধা অথবা রোগ না। আস্তে আস্তে ওই কিশোরীর বয়স বাড়ার সাথে সাথে এটা আপন মনেই ঠিক হয়ে যাবে।
আমরা জানি, একজন মহিলার মাসিক নিয়ন্ত্রণ করে ওভুলেশন বা ডিম্বোস্ফোটন। গর্ভ হওয়া নিয়ন্ত্রণ করে হাইপোথ্যালামাস ও পিটুইটারি দুটো গ্রন্থি। আর ডিম্বাশয় থেকে হরমোনগুলো আসে এবং ডিমগুলো ফুটে। পুরো বিষয়টা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে হাইপোথ্যালামাস ও পিটুইটারি গ্রন্থির মাধ্যমে। এটা আনুষাঙ্গিক পরিপক্ক হতে সময় লাগে। যে কারণে ২০ থেকে ২২ বছর পর্যন্ত অনিয়মিত মাসিক হতে পারে। এটা নিয়ে আতঙ্কিত বা চিন্তার কোনো কারণ নেই।
কখন আপনাকে চিন্তিত হতে হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে ডা: কিশোয়ার পারভীন বলেন, রোগী যদি কয়েকবার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন এবং তার সমস্যা ও অসুবিধা হচ্ছে, তখন তাদের কিছু ইভেস্টিগেশন করতে পরামর্শ দেওয়া হয়। তার মধ্যে একটি হলো স্ত্রী প্রজনন তন্ত্রে বা রিপ্রোডাক্টটিভ সিস্টেমে আল্ট্রা সাউন্ড করে দেখা যে, তার ওভারিতে বা জরায়ুতে কেনো সমস্যা আছে কিনা?। ওভারিতে কিছু কমন সমস্যা থাকে, যার মধ্যে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম এই বয়স থেকে অনেক কিশোরীর শুরু হয়ে যায়। ওভারিতে আরও কিছু সমস্যার মধ্যে এন্ডোমেট্রিওসিস অথবা জরায়ুতে কোনো সমস্যা থাকতে পারে। এজন্য সাথে কিছু হরমোন প্রোফাইল করতে দেওয়া হয়। থাইরয়েডের সমস্যার কারণেও কিছু অনিয়মিত মাসিক হতে পারে। প্রোল্যাকটিন লেভেল বেড়ে গেলে অনেক সময় অনিয়মিত মাসিক হতে পারে। এই রিপোর্টের উপর দেখার পর আমরা সিদ্ধান্তে আসি। রোগীর এটা কী স্বাভাবিক ফিজিওলজি নাকি কোনো সমস্যা।
আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করলাম। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। নতুন কোনো স্বাস্থ্য টিপস নিয়ে হাজির হবো অন্য দিন। সবাই সুস্থ্য, সুন্দর ও ভালো থাকুন। নিজের প্রতি যত্নবান হউন এবং সাবধানে থাকুন। যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগে এবং প্রয়োজনীয় মনে হয় তবে অনুগ্রহ করে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না যেন।
আরোগ্য হোমিও হল এডমিন : এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যগুলো কেবল স্বাস্থ্য সেবা সম্বন্ধে জ্ঞান আহরণের জন্য। অনুগ্রহ করে রেজিষ্টার্ড হোমিওপ্যাথিক পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবনে আপনার শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি হতে পারে। প্রয়োজনে, আমাদের সহযোগিতা নিন। এই ওয়েব সাইটটি কে কোন জেলা বা দেশ থেকে দেখছেন “লাইক – কমেন্ট” করে জানিয়ে দিন। যদি ভালো লাগে তবে “শেয়ার” করে আপনার বন্ধুদের জানিয়ে দিন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।