ক্যানসার এর প্রতিরোধ
হোমিও চিকসায় ক্যানসার আরোগ্য
ডাঃ অরবিন্দ সরকার
ক্যানসার এর প্রতিরোধ : Deward Henty Smalpage M.B.C,H.M (Syd) FRCS (Eng) মশাই এর লেখা Cancer its Cause prevention and cure নামক পুস্তক থেকে কিছু মুল্যবার তথ্য এখানে তুলে দিচ্ছি, তিনি নিজে একজন খ্যাতনামা এ্যালোপ্যাথিক সার্জন, সুতরাং তার তরফ থেকে হোমিও প্যাথিক দৃষ্টিকোণ বিচার করে সব কথা বলা হয়েছে সেনা সকলেরেই প্রনিধানযোগ্য। তিনি তার প্রবন্ধ যাথা – Cancer the greatest scourge of mordern civilization অর্থাৎ “ক্যানসার বর্তমানে সভ্যতাই হলো ক্যানসার সৃষ্টি প্রবণতার প্রধান কারণ। আজকের দিনে আগে চিন্তা করতে হবে কেমন করে ক্যানসারকে প্রতিরোধ করা যায়। ক্যানসার হবার কারণ সম্বন্ধে অজ্ঞতা পরবর্তী ক্যানসার আক্রমণ প্রতিরোধের অন্তরায়। প্রথমিক ক্যানসার উৎপন্ন হওয়া এবং তাকে ধ্বংস সাধন করা অপ্রতিরোধ্য, কারণ, মানুষ প্রকৃত কারণ পূর্ব হতে প্রতিরোধ করা বা সর্তক হওয়া সম্বন্ধে অবহিত নয়। অথবা মানব দেহে মেটাষ্টেটিক গ্রোথ বা স্থানান্তরিত বৃদ্ধি হওয়া সম্বন্ধে অজ্ঞাতা একটা কারণ। ক্যানসার এর কারণ সম্বন্ধে যদি অজ্ঞতা থেকেই যায তাহলে সমস্ত উপদেশই বৃথা হবে। মানবজাতি অবশ্যই ক্যানসারকে জয় করতে পারে, কিন্ত পূর্বে যে ক্যানসার বিধ্বস্তকারী শিখাকে এই কাজে নানা ভাবে চেষ্টা করা হয়েছে তার দ্বারা সংগ্রাম করে কিছু হবে না। ক্যানসার সৃষ্টির জ্ঞান বৃক্ষের চারা রোপন করতে হবে এবং জল সিঞ্চন করতে হবে এবং সমগ্র মানবজাতির ফল লাভের জন্য তাদের বাঁচার জন্য অংশগ্রহণ করতে হবে।
প্রকৃত প্রতিরোধ করতে হলে প্রতিটি মানুষকে প্রকৃতিক নিয়ম-শৃংখলা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে, তাহলে আর এই রোগের প্রবণতা বা অক্রমনের আশঙ্কা থাকেনা। অজ্ঞতা বশতঃ প্রকৃতির নিয়ম লঙ্ঘন করলে তার শাস্তি প্রতিরোধ করা যায় না। একমাত্র প্রকৃতিক নিয়মনীতি সম্বন্ধে বিশেষভাবে জ্ঞান অর্জন করতে পারলে তবেই এই শাস্তি থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে। ক্যানসার গ্রোথ হলে এক ধরণের কোষ নয় সেল সমুহের অস্বাভাবিক সংখ্যা বৃদ্ধি দ্বারা বৃদ্ধি সাধান ও প্রসাব সাধন হয় মানুষ্য দেহ মধ্যে। অস্বাভাবিক এই হেতু যে, এগুলি মানুষের দেহে মধ্যে স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে না। এই নিওপ্লাজম অথবা নুতুন গ্রোথ উপস্থিত তার কারণ অবশ্যই উপস্থিত, অতএব সাধারণ মানব দেহে থেকে তুলনামুলক ভাবে ক্যানসার বহনকারী দেহের পার্থক্য থাকবেই।
হোমিও বিজ্ঞানের মতে :- কোন কোন মিশু জন্মিবার সাথেই ক্যানসার রোগে প্রবনতা নিয়ে জন্মে। যদিও রোগ আস্তে আস্তে বৃদ্ধি হয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক হলেই প্রকাশ পায়। কখন কখনও আঘাত প্রাপ্তির ফলে বা অধিক উত্তেজক কারণে অল্প বয়স্ক হলেও ক্যানসার হতে পারে।
কেমনে এই প্রবণতা আসে। যে শিশু জন্মিবার সাথে সাথে সোরা, সাইকোসিস, সিফিলিস এবং টিউবারকুলার এর যে কোন দুই বা ততোধিক দোষ লব্দ অবস্থায় পায় তার মধ্যেই রোগের সুপ্ত প্রবনতা বিরাজ করে। এর যে কোন তিনটি দোষ একত্রিত হলেই ক্যানসার হয়। শিশুকালে প্রবণতা না থাকলেও কখনও কখনও যৌবনে সাইকোটিক এবং সিফিলিটিক অর্জিত দোষের কারণে রোগের প্রবণতা সৃষ্টি করে।
ক্যানসার শরীরে তৈরী হতে হলে সোরা, সাইকোসিস, সিফিলিস এবং টিউবার কুলার এর যে কোন তিনটি দোষ একত্রিত হতে পারে। সাইকোসিসের প্রাধাণ্য হেতু যে ক্যানসার হয় যেখানে পচনক্রিয়া প্রায়ই থাকে না। সিফিলিসের প্রধান্য হেতু যে ক্যানসার হয় সেখানে প্রথম হতেই পচন ক্রিয়া দেখা যায়। এই দুই দোষ একত্রিত হলে ক্যানসার মারাত্নক আকার ধারণ করে এবং অতিশ্রীঘ্র রোগীর মৃত্যু ঘটে। যেহেতু হোমিও বিধান মতে সোরা, সাইকোসিস, সিফিলিস এবং টিউবারকুলার দোষই বিভিন্ন রোগের স। কাজেই শরীরের রোগ প্রবণতা দুর করার জন্য বা শরীর রোগমুক্ত করার জন্য একটি একটি করে ধাতুগত দোষ চিকিৎসা করে শরীরকে দোষমুক্ত করা। যদি অল্প বয়সে প্রতিটি দোষ মুক্ত করা জন্য ঔষধ সেবন করা হয় তা হলে কোন সুরারোগ্য রোগ হতে পারে না।
এখন প্রশ্ন হলো ক্যানসার প্রবণতার লক্ষণ কি কি? যে শিশুটি ক্যানসার রোগের প্রবণতা নিয়ে জন্মিবে তার মানসিক লক্ষণ থাকবে অবাধা, গোয়ার, ঝোকাল, কাঁদুনে, প্রচন্ড ক্রোধী, খুব সাহসী, অতিবুদ্ধিমান, অতিচঞ্চল অথবা মরমরা, বোকাবকেশ্বর এবং অভিভীতু। অনিদ্রায় ভুগা, বিছানায় দীঘদিন প্রস্রাব করা এবং অত্যান্ত মুল্যবান সার্বদৈহিক লক্ষণ হলো – হাটু দুইটি গুটিয়ে হাটু ও কুনই এক সঙ্গে জড় করে শোয়া।
শিশুকালে ধাতু দোষ যত সহজে অপসারিত করা যায় একটু বেশী বয়সে সেটা সারানো অত সহজ হয় না। পিতা মাতার একান্ত প্রয়োজন শিশি অবস্থায় তার সন্তানটিকে হোমিও চিকসার দ্বার লব্দ দোষের চিকসা করানো। কোন স্ত্রীলোক যখন সন্তান সম্ভবা ন তখন তার শরীরের যে কোন ধাতুদোষ প্রকাশ পায়। তখন হোমিও পদ্ধিতিতে লক্ষণ অনুযায়ী চিকৎসা করলে সন্তানটিা রোগ মুক্ত অবস্থায় জন্ম গ্রহণ করবে এবং পরবর্তী কালে তার কোন কঠিন রোগ হবে না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) প্রদত্ত ক্যানসার প্রতিরোধের সংঙ্গা হলো :- যে সমস্ত হেতু ক্যানসার সৃষ্টি হয় বলে জানা গেছে সেই সব হেতু দুর করা। তাদের বিরুদ্ধে সতর্কতামুলক ব্যবস্থা অবলম্বণ করা এবং ক্যানসারের বিষয়ে শিক্ষা জনগণের কাছে প্রচার, নানা ভাবে পুস্তিকা, দেওয়াল লিখন, সভা সমিতি। সেমিনার মিটিং প্রভৃতির দ্বারা জনসাধারণকে সজাগ করিয়ে দেওয়া খবরের কাগজ, রেডিও টিভি-িই মাধ্যমে প্রচার। ক্যানসারের বিরুদ্ধে আশাব্যঞ্জক সেব চিত্র তােই তুলে ধরতে হবে জনমানুষের সামনে। জনসাধারণ যে জানতে পারেন যে ক্যানসার একটা মাত্র রোগ নয়। ক্যানসার একটি পরিবার। সব ক্যানসারের পরিণতি এক নয়। কোন কোন ক্যানসার এখন নির্ণয় করা দুরহ হলেও অন্য অনেক ধরণের ক্যানসার ধরা যায় এবং সাফল্য জনক ভাবে চিকিৎসা করে ধীর্ঘ জীবনের অধিকারীও হয় মানুষ।
সতর্কতা :-
কয়েকটি বিপদ সঙ্কেতের কথা শরীরে যেগুলোর কোন একটা দেখা গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। যাথা :-
(১) স্তনে কোন একটা দলা বা শক্ত এলাকা।
(২) হজম ও পায়খানার গন্ডোগোল যখন দীর্ঘদিন ধরে একই রকম থাকে, সারে না।
(৩) মেয়েদের যোনি পথে মাসিকের সময় বা অন্য সময় অথ্যাধিক রক্তপাত বা অনিয়িত রক্তপাত।
(৪) যে কোন দ্বার দিয়ে রক্ত পাত-মুখ, কান, নাক, পায়খানা ও প্রস্রাব ইত্যাদি যার কোন ব্যথা পাওয়া যাচ্ছে না।
(৫) দীর্ঘদিনের কাশী বা গলার স্বর ভেঙ্গে যাওয়া।
(৬) ওজন কমে যাচ্ছে যা কনে ব্যথা পাওয়া যাচ্ছে না।
(৭) কোন আঁচিল বা তিলের হঠাৎ পরিবর্তন।
(৮) কোন স্ফীতি বা যা যা ভাল হচ্ছে না এবং দ্রুত বেড়ে চলছে।
আরও কয়েকটি বিষয় সমন্ধে সতর্ক খাকা এবং আগেই চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন যেমন – জরায়ু মুখ ছিড়ে যাওয়া (সন্তান জন্মের পর) অন্ত্রের পলিপ (Gastointestinal polyposis) আাঁচিল, দীর্ঘস্থায়ী জরায়ু মুখে প্রদাহ, শিষ্ট এডোমোনা (Benign adcnoma) প্রভৃতি। অনেক সময় আকচার এক-রে পরীক্ষা করানো হয়। যেখানে ধুবই অপরিহার্য সেক্ষেত্রে এক্স-রে ছাড়া এর ব্যবহার সীমিত করা যেতে পারে। আণবিক রশ্মি শরীরে যত কম যায় ততই ভাল।
এই তত্ত্ব ও তথ্য সমুহ সংক্ষিপ্তভাবে গ্রহণ করা হয়েছে ১৩৯২ সালে রবীন্দ্র পুরুস্কার প্রাপ্ত ডাঃ অমির কুমার হাটিমশাই এর “ক্যানসার” নামক পুস্কক থেকে। এখানে গ্রন্থকারের কোন মন্তব্য নাই। আছে এই পুস্তকের পক্ষে উপযোগী হবে এমন বিষয়গুলি।
আরোগ্য হোমিও হল এডমিন : আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করলাম। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। নতুন কোনো স্বাস্থ্য টিপস নিয়ে হাজির হবো অন্য দিন। এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যগুলো কেবল স্বাস্থ্য সেবা সম্বন্ধে জ্ঞান আহরণের জন্য। অনুগ্রহ করে রেজিষ্টার্ড হোমিওপ্যাথিক পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবনে আপনার শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি হতে পারে। প্রয়োজনে, আমাদের সহযোগিতা নিন। এই ওয়েব সাইটটি কে কোন জেলা বা দেশ থেকে দেখছেন “লাইক – কমেন্ট” করে জানিয়ে দিন। যদি ভালো লাগে তবে “শেয়ার” করে আপনার বন্ধুদের জানিয়ে দিন। সবাই সুস্থ্য, সুন্দর ও ভালো থাকুন। নিজের প্রতি যত্নবান হউন এবং সাবধানে থাকুন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।