অনিয়মিত ঋতুস্রাবে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা
আরোগ্য হোমিও হল এ সবাইকে স্বাগতম। আশা করছি, সবাই ভালো আছেন। আজ আমরা এখানে আলোচনা করবো মেয়েদের সাদা স্রাবের সমস্যা দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি কি তা নিয়ে আজকের জনবো, এটা সবার জানা জরুরী! তো আর কথা নয় – সরাসরি মূল আলোচনায়।
অনিয়মিত ঋতুস্রাব কী ?
অনিয়মিত ঋতু¯্রাব সাধারণত গ্রীষ্মকালীন আমাদের দেশে ১৩/১৪ বছর বয়সে এবং শীত প্রধান দেশে ১৫/১৬ বছর বয়সে একজন নারীর স্বাভাবিক ঋতুস্রাব প্রক্রিয়ায় শুরু হয়ে থাকে । প্রথম ঋতুস্রাব আরম্ভ হয়ে ৪০/৫০ বছর পর্যন্ত সেটা চলমান থেকে এ ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে এর ব্যতীক্রম ও দেখা যায় । একজন নারীদের সাধারণত প্রতি ২৮ দিন পর পর জরায়ু থেকে নিয়মিত রক্তস্রাব শুরু হয়ে থাকে । সাধারণত ৩ থেকে ৫ দিন পর্যন্ত এই ঋতু স্রাব চলতে থাকে । স্রাবের স্বাভাবিক পরিমান খুব বেশীও নয়, আবার অতি সামান্যও নয় । এই নিয়মের ব্যাঘাত হলেই আপনাকে বুঝতে হবে যে জরায়ুতে কোন না কোন সমস্যা রয়েছে। এ সময়ের কোন পরিবর্তন হলে তাকে অনিয়মিত ঋতুস্রাব বলে। এ ঋতু স্রাব সংক্রান্ত বিষয়টি সাধারণত শারীরিক গঠনের সংগে সংযুক্ত। সময় মত না হলে বা বন্ধ হয়ে গেলে তাকে রজঃরোধ বলা হয় ।
অনিয়মিত ঋতুস্রাবে লক্ষণ সমূহ :
(ক) ঋতুস্রাব হঠাৎ বন্ধ হয়ে ২/৩ মাস পর্যন্ত থাকে আবার কখনও কখনও ৪ থেকে ৫ মাস পর্যন্ত বন্ধ থাকে , আবার হঠাৎ অধিক পরিমাণেও হতে থাকে অথবা ১০ থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত অল্প অল্প রক্ত স্রাব হতে থাকে। হঠাৎ বন্ধ হয়ে আবার হঠাৎ আরম্ভ হতে পারে ।
(খ) কখনও কখনও ১৫/২০ দিন বন্ধ থেকে আবার ফোঁটা ফোঁটা করে আরম্ভ হয় এবং কখনও ফের ঠিকমতো চলে আবার কখনও গোলযোগ শুরু হয় ।
(গ) ঋতু¯্রাবের সঙ্গে তলপেটে প্রচন্ড ব্যাথা, বার বার মল ত্যাগের ইচ্ছা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য ভাব।
(ঘ) ঋতুস্রাব আরম্ভ হলে অনেক সময় বমি ও বমি বমি ভাব আবার কখনও সব যন্ত্রনার উপশম হয়।
(ঙ) কখনও কখনও ঋতুস্রাব শুধু দিনে অথবা বাত্রে দেখা দেয়। ঋতুস্রাবকালে স্তন দুটি প্রদাহিত ও বেদনা করে ।
(চ) অনেক সময়ে শুয়ে থাকলে ঋতুস্রাব হয়, বসলে অথবা হাঁটাচলা করলে বন্ধ হয় । অবার অনেক সময় স্রাবের সাথে ছোট ছোট কালো রক্তের টুকরা পড়ে।
অনিয়মিত ঋতুস্রাবের কারণ :
(১) দেহে হরমোন জনিত কোন সমস্যা হলে।
(২) শরীরে রক্ত শূন্যতা হলে।
(৩) দেহের স্বাভাবিক পরিমাণ পুষ্টির অভাব হলে।
(৪) জরাযুর কোন রোগ থাকলে।
(৫) জরায়ুর ডিম্বকোষ, ডিম্বনালীতে টিউমার সৃষ্টি হলে ।
(৬) গনোরিয়া ও সিফিলিস জাতীয় কোন কঠিন রোগ থাকলে ।
অনিয়মিত ঋতুস্রাবে হোমিওপ্যাতিক চিকিৎসা :
অনিয়মিত ঋতুস্রাবে হোমিওপ্যাথিক ঔষধগুলি লক্ষণভেদে নিম্নের ঔষধ গুলা ব্যবহৃরিত হয়ে থাকে যেমন – হ্যামামেলিস, মিলিফোলিয়ম, এমন কার্ব, কলোফাইলম, একোনাইট, আর্সেনিকাস আইয়োড, ক্যালকেরিয়া কার্ব, পালসেটিলা, এপিস মেল, ব্রাইয়োনিয়া, বেলেডোনা, ক্যালকেরিয়া ফস, কোনিয়াম, ক্রেকাস স্যাটাইভাস, সাইক্লামেন, এরিক থাইটিস, জ্যাবোরান্ডি, ককুলাস ইন্ডিকা, ম্যাগ্নেশিয়া কার্ব, ম্যাগ্নেশিয়া মিউর, নাক্স ভমিকা, সিকেলি কর ইত্যাদি ।
তবে ঔষধ নির্বাচন এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে অবশ্যই এক জন বিজ্ঞ হোমিও চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ খাওয়া বাঞ্চনীয় । কারণ এক জন চিকিৎসকের পারদর্শীতা এবং সঠিক ঔষধ নির্বাচনের উপরই চিকিৎসার সফলতা নির্ভর করে ।
আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করলাম। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। নতুন কোনো স্বাস্থ্য টিপস নিয়ে হাজির হবো অন্য দিন। সবাই সুস্থ্য, সুন্দর ও ভালো থাকুন। নিজের প্রতি যত্নবান হউন এবং সাবধানে থাকুন। যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগে এবং প্রয়োজনীয় মনে হয় তবে অনুগ্রহ করে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না যেন।
আরোগ্য হোমিও হল এডমিন : এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যগুলো কেবল স্বাস্থ্য সেবা সম্বন্ধে জ্ঞান আহরণের জন্য। অনুগ্রহ করে রেজিষ্টার্ড হোমিওপ্যাথিক পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবনে আপনার শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি হতে পারে। প্রয়োজনে, আমাদের সহযোগিতা নিন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। এই ওয়েব সাইটটি কে কোন জেলা বা দেশ থেকে দেখছেন “লাইক – কমেন্ট” করে জানিয়ে দিন। যদি ভালো লাগে তবে “শেয়ার” করে আপনার বন্ধুদের জানিয়ে দিন।