সাল এমোনিয়াক (Sal Ammoniac)
অপর নাম – এমোনিয়াম মিউরিয়াটিকাম (Ammonium Muriaticum)
ডা: ইউলিয়াম বরিক।
এই ঔষধ সান্নিপাতিক অবস্থায় ন্যায় একপ্রকার অবসাদের সৃষ্টি করে। সর্বপ্রকার শ্লৈষ্মিক ঝিল্পীর ভাব বর্ধিত হয় কিন্তু উহা আটক থাকে। ঔষধটি শ্বাসযন্ত্রের পীড়াগ্রস্ত মোটা সোটা অলস ব্যক্তিগণের পক্ষেই সমধিক উপযোগী। প্রতিশ্যায় লক্ষণযুক্ত কাশি ও সেই সঙ্গে যকৃৎ-পীড়া। অনিয়মিত রক্ত সঞ্চালন-প্রবণতা, রক্তসংক্রান্ত গোলযোগ লাগিয়াই থাকে। স্পন্দন প্রভৃতি লক্ষণ অনুভূত হয়। বহু প্রকার লক্ষণের সহিত কাশি, প্রভৃতি চক্চকে শ্লেষ্মা নির্গত হয়। শরীরের আক্রান্ত বিবিধ অঙ্গের সহিত ইহার বৃদ্ধি- কালের সংযোগ আছে— যেমন মস্তক ও বক্ষে রোগলক্ষণ প্রকাশ পাইলে বুদ্ধি হয় প্রাতে; উদরের উপদ্রব বৃদ্ধি হয় অগরাহে, অঙ্গ-প্রতাপে বেদনা, চর্মরোগ এবং জ্বর বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয় সন্ধ্যাকালে। ভিতরে কোন কিছু ফুটিতেছে এরূপ অনুভূতি ।
মন : বিমর্ষ, আশঙ্কাযুক্ত, যেন ভিতরে কোন শোক চাপা রহিয়াছে । কাঁদিতে ইচ্ছা করে, কিন্তু পারে না। শোকের মন্দফল।
মস্তক : মাথার চুল গড়িয়া যায়, তৎসহ চুলকানি ও ধুসকি। মাথায় পূর্ণতাবোধ, আকুঞ্চনবোধ। প্রাতে বৃদ্ধি ।
চক্ষু : চক্ষুর সম্মুখে কুয়াসা, ছানি রোগের প্রারম্ভিক অবস্থায় ছায়া- মূর্তি সকল দর্শন করে। উপসেটকযুক্ত ছানিরোগ।
নাসিকা : অবিরত তীব্র উষ্ণ জলবৎ সর্দি নিঃসরণে ওঠে ক্ষত হইয়া যায়। নাসিকা স্পর্শ করিলে ব্যথা লাগে, নাসারন্ধ্র বেদনান্বিত। ঘ্রাণশক্তি লোপ পায়; নাসবিরোধ, মনে হয় নাকটি খুঁজিয়া আছে, নাসাপথ পরিষ্কার করিতে অবিরত ব্যর্থ চেষ্টা করে। চুলকানি ।
মুখমণ্ডল : মুখ ফোলা, কামড়ানি ব্যথা। মুখের অভ্যন্তর ও ঠোঁটে বেদনা এবং হাজিয়া যায়।
গলগহ্বর : টনসিল ফোলা এবং দপদপানি ব্যথা, তজ্জন্য গিলিতে কষ্ট বোধ। আলজিহার পিছনে টাটানি, আহারে উপশম। গলগহরের ভিতরে ও বাহিরে ফোলা, ঐ স্থানে চট্চটে স্লোম্মাসঞ্চয়। স্লোম্মা এতই আঠা আঠা যে উহা কাশিয়াও তুলিয়া ফেলিতে পারে না। টনসিল প্রদাহ, অন্ননালীর অবরোধ।
পাকস্থলী : লেমনেড পানের ইচ্ছা । খাদ্যবস্তু বমি করিয়া ফেলে, মুখ দিয়া জল উঠে, উহা তিক্ত। বমিবমি ভাব, পাকস্থলীতে খোচানবং বেদনা। আহারের পরক্ষণেই ঊর্ধ্ব উদরপ্রদেশে বেদনা। পাকাশয়ের ক্যানসার।
উদরগহ্বর : প্লীহা প্রদেশে সূচীবিদ্ধবৎ বেদনা। বিশেষতঃ প্রাতঃকালে অতিকষ্টে শ্বাস লইতে হয়। নাভির চারিদিকে বেদনা। তলপেটের লক্ষণটি বামাগণের গর্ভকালে উপস্থিত হয়। যৎপ্রদেশে বহুদিনের রক্তসঞ্চয়। তলপেটের চারিদিকে প্রচুর চবি সঞ্চয়। যথেষ্ট অধঃবায়ু নিঃসরণ। কুঁচকি-স্থানে মচকানবৎ বেদনা।
সরলান্ত্র : কণ্ডুয়ন ও অর্শবলি, উহাতে টাটানিসহ পুঁজসঞ্চয়। শক্ত মনে চক্চকে আম জড়াইয়া থাকে, উহা ভাঙ্গিয়া-ভাগিয়া নির্গত হয়। গুহা- দ্বার ও জননেন্দ্রিয়ের মধ্যবর্তী স্থানে হল ফোটান ব্যথা। সবুজ শ্লেষ্মাযুক্ত মন ও কোষ্ঠবদ্ধতা পর্যায়ক্রমে আসে। বাহ্যের সময় ও বাহ্যের পরে দ্বারে জ্বালা ও চিড়িক-মারা বেদনা। শ্বেতপ্রদর লোপ পাইলে অর্শবলি দেখা দেয়।
স্ত্রী-জননেন্দ্রিয় : নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পূর্বে, বহু পরিমাণে কাল চাপ- চাপ জমাট বাঁধা রজঃস্রাব। স্রাব রাত্রিকালেই অধিক। গর্ভাবস্থায় তল- পেটের বামদিকে বেদনা, যেন ঐ স্থানটি মচকিয়া গিয়াছে। ঋতুকালে সবুজ আমমিশ্রিত মল এবং নাভিদেশে বেদনা । ডিম্বের শ্রেত অংশের ন্যায় প্রদর- স্রাব (এলুমিনা, বোরাক্স, ক্যাল্কে ফস) ঐ সঙ্গে নাভিস্থানে বেদনা। প্রত্যেক বার মূত্রত্যাগের পর আঠা আঠা বোধ ।
শ্বাস-প্রশ্বাস : স্বরভঙ্গ এবং গলনলীতে জ্বালা। শুক হক্হক শব্দ-যুক্ত ও চাঁচিয়া তোলার ন্যায় কাশি, চিৎ হইয়া বা দক্ষিণপার্শ্বে শুইলে উহার বৃদ্ধি। বক্ষে সূচীবিদ্ধবৎ বেদনা। বৈকালের দিকে ঢিলা কাশি, প্রচুর শ্লেষ্মাস্রাব এবং বুকে ঘড়ঘড় শব্দ। বুকের মধ্যে অস্বস্তিবোধ, স্থানে স্থানে জ্বালা। সামান্য মাত্র গয়ার উঠে। কাশির সহিত প্রচুর লালাস্রাব।
পৃষ্ঠদেশ : কন্ধদ্বয়ের মধ্যে বরফবৎ শীতলতা, গরম কাপড় দিয়া ঢাকিলেও কমে না, তারপর চুলকানি। উপবেশনকালে মেরুদণ্ডের সর্বনিম্ন অংশে ছড়িয়া যাওয়ার ন্যায় বেদনা। উপবেশনকালে পৃষ্ঠবেদনা, যেন সাঁড়াশি দ্বারা চাপিয়া ধরিয়াছে।
হস্ত-পদাদি : আঙ্গুলের ডগায় ছড়িয়া যাওয়ার ন্যায় বেদনা। হাতে ও পায়ের আঙ্গুলের ডগায় চিড়িক-মারা ও ছিড়িয়া ফেলার ন্যায় বেদনা। হাতের ও পায়ের তলায় ক্ষতবৎ বেদনা। কনুইয়ে সঙ্কোচনবোধ। সায়েটিকা-বেদনা উপবেশনে বৃদ্ধি, শয়নে উপশম। অস্ত্রোপচার দ্বারা কাটিয়া ফেলা অঙ্গে স্নায়ুশূল বেদনা । পদতলে দুর্গন্ধ ঘৰ্ম । ঋতুকালে পায়ের পাতায় বেদনা ।
চর্ম : সাধারণতঃ সন্ধ্যাকালে চুলকায়। দেহের বিভিন্ন অংশে ফোস্কার উদ্ভেদ উঠে। ভয়ানক জ্বলা, ঠাণ্ডা প্রয়োগে উপশম।
জ্বর : সন্ধ্যাকালে শয়নের পর শীতবোধ এবং জাগরিত হইলে শীতবোধ কিন্তু পিপাসা থাকে না। হাতের ও পায়ের তালু গরম। অস্বাস্থ্যকর আব হাওয়ার জন্য অগ্রবল জ্বর। সর্বনিম্নশক্তি ব্যবহার্য ।
উপচয়, উপশম : খোলা বাতাসে উপশম। প্রাতঃকালে মস্তক ও বক্ষের উপদ্রবসমূহের বৃদ্ধি, উদর লক্ষণের বৃদ্ধি অপরাহে।
সম্ভন্ধ : দোষঘ্ন – কফিয়া, নাক্স, কষ্টিকাম।
তুলনীয় : ক্যালকেরিয়া, সেনেগা, কষ্টিকাম।
মাত্রা : ৩য় হইতে ৬ষ্ঠ শক্তি।
আরোগ্য হোমিও হল এডমিন : আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করলাম। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। নতুন কোনো স্বাস্থ্য টিপস নিয়ে হাজির হবো অন্য দিন। এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যগুলো কেবল স্বাস্থ্য সেবা সম্বন্ধে জ্ঞান আহরণের জন্য। অনুগ্রহ করে রেজিষ্টার্ড হোমিওপ্যাথিক পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবনে আপনার শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি হতে পারে। প্রয়োজনে, আমাদের সহযোগিতা নিন। এই ওয়েব সাইটটি কে কোন জেলা বা দেশ থেকে দেখছেন “লাইক – কমেন্ট” করে জানিয়ে দিন। যদি ভালো লাগে তবে “শেয়ার” করে আপনার বন্ধুদের জানিয়ে দিন। সবাই সুস্থ্য, সুন্দর ও ভালো থাকুন। নিজের প্রতি যত্নবান হউন এবং সাবধানে থাকুন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।