শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:০৯ পূর্বাহ্ন

জেনিটাল হার্পিস মারাত্মক, মায়ের থেকে সন্তানেরও হতে পারে

আরোগ্য হোমিও হল / ১৮৫ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশ কালঃ সোমবার, ১ জানুয়ারী, ২০২৪, ৬:১৯ অপরাহ্ন

জেনিটাল হার্পিস মারাত্মক, মায়ের থেকে সন্তানেরও হতে পারে
আরোগ্য হোমিও হল এ সবাইকে স্বাগতম। আশা করছি, সবাই ভালো আছেন। আজ আমরা এখানে আলোচনা করবোহার্পিস জেনিটাল অবহেলা করলেই বিপদ হতে পারে তা নিয়ে আজকে জনবো, এটা সবার জানা জরুরী! তো আর কথা নয় – সরাসরি মূল আলোচনায়।

যৌন মিলনের কারণে যে সব সংক্রমণ মানুষের হয়ে থাকে, তার অন্যতম হল জেনিটাল হার্পিস। যৌনাঙ্গে এই হার্পিস হওয়ার কারণে একে ‘জেনিটাল হার্পিস’ বলে। প্রসঙ্গত, হার্পিস হলো এক ধরনের ভাইরাল সংক্রমণ, যা অসম্ভব ছোঁয়াচে রোগ। বিশেষ করে যে সময় পুরুষ ও নারী ‘প্রজননক্ষম’ থাকে (সাধারণত ১৪ থেকে ৪৯ বছর), তখন সাধারণত এই সমস্যা বেশি হয়ে থাকে অনেকের। হার্পিস সিমপ্লেক্স ভাইরাসের কারণে গলা, ঘাড়, হাত বা শরীরের অন্য কোনও স্থানে হার্পিস হতে পারে। এর দুইটি ধরন আছে— টাইপ ১ এবং টাইপ ২। এদের মধ্যে টাইপ-২’এর কারণে জেনিটাল হার্পিস বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। যদিও টাইপ-১-এর প্রভাবের ফলেও যে তা একেবারেই হতে পারে না, এমনটা কিন্তু নয়।

জেনিটাল হার্পিস লক্ষণ : জেনিটাল হার্পিসে সাধারণত কোনও লক্ষণ দেখা যায় না। অনেক সময়ে রোগীর ‘অ্যাসিম্পটোম্যাটিক’ আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে। তবে তিন-চার দিনের মধ্যে এর কিছু লক্ষণ শরীরে দেখা গেলে, তা রোগের লক্ষণ হিসেবে বোঝাই যায়। যেমন- প্রথম প্রথম যৌনাঙ্গে, পিছনে হাল্কা ব্যথা ও চুলকানি হয়। জেনিটাল হার্পিসের তিনটি পর্যায় থাকে। এর প্রথমটা লেটেন্ট ফেজ়। হালকা ব্যথা এবং চুলকানি এই পর্যায়ে পড়ে। ঘামাচির মতো কিছু জিনিস দেখা যায়। এই সময় ভাইরাসগুলি শরীরে বাড়তে থাকে। এর পরে আসে সিভিয়ার ফেজ়। আস্তে আস্তে সংক্রমিত স্থানে ঘামাচিগুলি বড় বড় চকচকে, লাল, জলভরা ফোস্কার আকার ধারণ করে। চুলকানির কারণে কাপড়ে ঘষায় মুখ ফেটে রস বাহির হয়, সে রস অন্য কোথাও লাগলে সঙ্গে সঙ্গে সেখানেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। এবং স্থানগুলিতে খুব ব্যথা হয়। অনেক জায়গায় এই হার্পিস হতে দেখা যায়। এর সঙ্গে অনেকের ফ্লু-র মতো জ্বর, গায়ে হাতে ব্যথা, মাথাব্যথা ইত্যাদি থাকতে পারে। খুব তীব্র হলে অনেক সময়ে কুঁচকির লিম্ফ নোডসগুলিও ফুলে যায়। সঙ্গে জ্বালা এবং ব্যথাও থাকে। শেষে আসে হিলিং ফেজ়। সাত-আট দিন পরে এটিসেরে যায়। কিন্তু ব্যথা ও চুলকানি থেকেই যায় কোন পরিবর্তন হয় না।

রোগ শুরুর আগে অনেক সময়ে হিলিং ফেজ়-এর পরেও আর একটি সমস্যা এই রোগের ক্ষেত্রে দেখা যায় পোস্ট হার্পেটিক নিউরালজিয়া। অর্থাৎ, নার্ভের ব্যথা। এই ক্ষেত্রে বছরখানেকও ব্যথা থাকতে পারে। যে সব জায়গায় সংক্রমণ ছিল সেই সব জায়গাতেই এই ব্যথা হয়ে থাকে। নিউরোপ্যাথির জন্য যে ওষুধ দেওয়া হয়, তা না দিলে এই ব্যথা প্রশমিত হয় না।

জেনিটাল হার্পিস মারাত্মক, মায়ের থেকে সন্তানেরও হতে পারে

জেনিটাল হার্পিস পরীক্ষা পরামর্শ : পরীক্ষার মাধ্যমে এই রোগ নির্ণয় করা যায় না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে লক্ষণ দেখেই এই রোগ নির্ণয় করতে হয় । শরীরের প্রাইভেট পার্টসে হওয়ার কারণে মানুষ চিকিৎসকের কাছে এই সমস্যা দেখাতে যেতে চান না। এর ফলে রোগীকে কষ্ট ভোগ করতে হয়। যখন ব্যথা-জ্বালা অসহ্য হয়ে ওঠে, তখন চিকিৎসকের পরামর্শ করেন, কিন্তু তত দিনে রোগটির মূল পর্বটি হয়তো পেরিয়ে গিয়েছে। যে সব স্থানে বড় বড় ঘামাচির মতো হয়েছে, সেই সব জায়গায় কিছু অ্যান্টি-ভাইরাল মলম লাগাতে দেন তাঁরা। একই সঙ্গে কিছু ব্যাথার ওষুধও খেতে হতে পারে। যেখান থেকে ঘন রস বেরোচ্ছে সময়ে সময়ে সংক্রমিত জায়গা, পরিষ্কার করা উচিত। যতই কষ্ট হোক সংক্রমিত জায়গায় চুলকানো বা হাত লাগানো উচিত নয়। অসুস্থতার দিনগুলিতে ঢোলা জামাকাপড় পরলে উপশ্রম হয়।

আরও পড়ুন –  পুরুষদের যৌনাঙ্গে হারপিসের হোমিওপ্যাথিক ঔষধ

জেনিটাল হার্পিস শিশুদের বিপদ : প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে যদিও এটা প্রাণঘাতী না হলেও সদ্যোজাতদের জন্য এটা প্রাণসংশয় কারণ করতে পারে। সন্তান জন্মের সময় যদি মায়ের এই সমস্যা হয়ে থাকে, তবে এই সংক্রমণ ছড়াতে পারে সন্তানের শরীরে। সংক্রমণ যদি গুরুতর হয়, তবে শিশুটির অন্ধত্ব, ব্রেন ড্যামেজ, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। স্বামী-স্ত্রী যদি জেনিটাল হার্পিস হয়ে থাকে, তিনি যেন সন্তান জন্মের সময়ে চিকিৎসককে জানিয়ে রাখেন। সন্তান জন্মের আগে চিকিৎসক উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন। সন্তান জন্মের সময় নর্মাল ডেলিভারির বদলে সিজ়ারিয়ান করতে পারেন। এই ক্ষেত্রে সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা বহু গুণ কমে যাবে। সমস্যা হল, যেহেতু পরবর্তী কালে কোনও উপসর্গ থাকে না তাই, মানুষ এই জরুরি বিষয়টি সাধারণত অনেকে ভুলে যান। সে ক্ষেত্রে অজানতেই সে রোগটি অন্যের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। মনে রাখবেন, হার্পিস কিন্তু নির্মূল হয় না। এই রোগ কোনও ভাবে এক বার শরীওে প্রবেশ করলে, কোষের মধ্যে সেটা থেকে যায়। সাধারণত কোষ নিজেদের সংখ্যাবৃদ্ধি করতে থাকে, তখন ভাইরাসগুলি বাড়তে থাকে। কোনও কারণে যদি এর আউটব্রেক হয় তা হলে চিকিৎসকরা অ্যান্টি ভাইরাল ব্যবহার করেন সেই বৃদ্ধিকে প্রতিরোধের জন্য তবে, ভবিষ্যতে এই সংক্রমণ যত হবে, তত এর তীব্রতা কমবে। কিন্তু, যাঁদের অটোইমিউন ডিজ়িজ় রয়েছে- ক্যানসারে আক্রান্ত বা ডায়াবেটিক, তাঁদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাল সংক্রমণের তীব্রতা কম হবার সম্ভবনা নেই।

আরও পড়ুন –  জরায়ু ইনফেকশনের লক্ষণ, করনীয় ও হোমিওপ্যাথি ঔষধ

জেনিটাল হার্পিস নিরাময় :
এই ধরনের ভাইরাস সাধারণত মানুষের থুতু, ‘ভ্যাজ়াইনাল সিক্রিশন’, সিমেন-এ পাওয়া যায়। ফলে সুস্থ জীবনযাপন করলে এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে, এই সমস্যা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে চলাচল করতে পারে। এ ধরনের কোনও লক্ষণ দেখা দিলে, সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।


আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করলাম। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। নতুন কোনো স্বাস্থ্য টিপস নিয়ে হাজির হবো অন্য দিন। সবাই সুস্থ্য, সুন্দর ও ভালো থাকুন। নিজের প্রতি যত্নবান হউন এবং সাবধানে থাকুন। যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগে এবং প্রয়োজনীয় মনে হয় তবে অনুগ্রহ করে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না যেন।

আরোগ্য হোমিও হল এডমিন : এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যগুলো কেবল স্বাস্থ্য সেবা সম্বন্ধে জ্ঞান আহরণের জন্য। অনুগ্রহ করে রেজিষ্টার্ড হোমিওপ্যাথিক পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবনে আপনার শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি হতে পারে। প্রয়োজনে, আমাদের সহযোগিতা নিন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। এই ওয়েব সাইটটি কে কোন জেলা বা দেশ থেকে দেখছেন লাইক – কমেন্ট” করে জানিয়ে দিন। যদি ভালো লাগে তবে “শেয়ার” করে আপনার বন্ধুদের জানিয়ে দিন।

 


এ জাতীয় আরো খবর.......
Design & Developed BY FlameDev