ক্যালকেরিয়া ফসফরিকা (Calcaria Phosphorica)
সাধারণ নাম – ফসফেট অব লাইম।
(ইহা এন্টিসোরিক, এন্টিসাইকোটিক ও এন্টিটিউবারকুলার ঔষধ)।
রাসায়নিক বিশ্লেষণ : ফরমুলা – Ca3 (PO4)2
ক্রিয়াস্থল : বিশেষত : চর্ম, চক্ষু এবং অন্ত্র (intestime)।
ক্যালকেরিয়া ফসফরিকা ঔষধটির বিশেষত্ব :
ইহার শিশু রোগীর অত্যন্ত জীর্ণ শীর্ণ শরীর, অস্থিসার, পেট ডাগরা, অথবা উদরের নিমগ্নতা, কোন না কোন অস্থি পীড়ায় সে ভুগিয়া থাকে। শিশুর মস্তকটি অত্যন্ত বড়, করোটির অস্থি খুব পাতলা, এবং মনে হয় যেন হাত দিয়া স্পর্শ করিলেই উহা ভাঙ্গিয়া যাইবে। ব্রক্ষবন্ধ সমুহ এবং করোটির অস্থি সমূহের সংযোগ স্থান সমুহ বহুদিন পর্যন্ত অযুক্তবস্থায় থাকে, কিংবা যুক্ত হইয়া পুনরায় খুলিয়া যায়। মাথায় খুব ঘাম হয়, অনেকের মেরুদণ্ডের বক্ততা দেখা দেয়, মেরুদণ্ড এত কম শক্তিশালী যে, শিশু সারা দেহের সমস্ত ভার যেন বহন করিতে সক্ষম নয়। সে জন্য দেরীতে হাঁটিতে শিখে। গীবার জোরও কম হয়, মাথার ভাব বহন করিতে সমর্থ হয় না। ফলে মস্তক অবনত হইয়া পড়ে এবং সে জন্যই শুধু ক্রন্দন করে। দন্তোদ্গমকারীন তড়কা, জ্বর, উদরাময় ইত্যাদি যাবতীয় রোগে ইহা অন্ত্র বিশেষ। সর্দি কাশি, প্রমেহ শ্বেত প্রদর, চর্ম্মপীড়া ইত্যাদি যে কোন রোগে অণ্ডলালাবৎ গাঢ়, চটচটে ও স্বচ্ছ স্রাব নির্গত হইলে ইহা নিঃসন্দেহে প্রয়োগ করা চলে। যুবক দিগের স্বপ্নদোষ ও অতিরিক্ত কাম পরিচালনা জনিত যাবতীয় পীড়ায় ইহা অদ্বিতীয়। যক্ষারোগে শীর্ণতা পীড়ায় অথবা বিনা কারণে শীর্ণতা পীড়ায় অথবা বিনা কারণে শীর্ণ হইতে থাকিলে এই ঔষধের নামই প্রথম স্মরণ করিতে হয়।
ক্যালসিয়াম লবণের অভাবে সৃষ্ট পীড়া সমুহ:
রিকেট, রক্তস্রাব প্রবন ধাতু, নিমোনিয়া বা ফুসফু প্রদাহ, মৃগী, টাইফয়েড জ্বরের তরুণাবস্থা, হিষ্টিরিয়া, নিউরেন্থিনিয়া, নানা প্রকার চর্ম্মপীড়া, পায়ের ডিমের আক্ষেপ, মিউকো-কোলাইটিস, যকৃতের রিরোসিস পীড়া, শোথ, পুরাতন ব্রাইট পীড়া, গ্রানুলার কিডনীর পুরাতন অবস্থা, সিউডো এঞ্জাইনা।
রক্তে ফ্রি ক্যালসিয়ামের আধ্যি বশতঃ সৃষ্ট পীড়া সমুহঃ মিগ্রিন নামক শিরঃপীড়া, তরুণ বাত, শ্বাসকাশ, অক্সালিউরিয়া নামক প্রস্রাবের পীড়া।
দেহস্থ কোন কোষ মধ্যে ফিক্সট ক্যালসিয়াম বৃদ্ধি বশতঃ সৃষ্ট পীড়া সমূহঃ গাউট বাত, গলগণ্ড লোকোমোটর এটাক্সি, ব্রঙ্কাইটিস, ধমনীর প্রস্তরাপকৃষ্টতা।
রক্ত এবং কোষ উভয়ের মধ্যে ক্যালসিয়াম ধাতুর আধিক্যবশতঃ সৃষ্ট পীড়াসমুহঃ অতিশয় কোষ্ঠবন্ধ, এঞ্জাইনা, আক্ষেপিক অন্ত্র প্রদাহ।
নিন্ম লিখিত খাদ্য সমূহে ক্যালসিয়াম বর্তমান আছে।
১/ দুগ্ধ এবং দুগ্ধ হইতে প্রস্তুত খাদ্য সমূহ যেমন- পানীয়, ছানা, দহি।
২/ ডিমের কোসা।
৩/ জান্তব জেলি।
৪/ হার্ড ওয়ার্টার।
নিন্ম লিখিত খাদ্যদ্রব্য ক্যালসিয়াম খুব অল্প পরিমাণে আছে।
(১) পাকা কলা (২) অম্লদব্য (৩) অম্লফল সমূহ (৪) এসিড সল্ট যথা- এসিড টার্টারিক, এসিড সাইট্রিক।
ক্যালকেরিয়া ফসফরিকা ঔষধটির পরিচায়ক লক্ষণাবলী :
১/ ফসফেট অব লাইমের অভাব বশতঃ যে সমস্ত পীড়া উৎপন্ন হয়, তাহাতেই ইহা উপযোগী।
২/ অণ্ডলালাবৎগাঢ়, চটচটে ও স্বচ্ছ স্রাবই ইহার বিশেষ লক্ষণ। যে কোন রোগে এই প্রকার স্রাব লক্ষিত হইবে, দ্বিধা না করিয়াই এই ঔষধ প্রয়োগ করা যাইবে।
৩/ যে সমস্ত শিশুর শরীর অত্যন্ত শীর্ণ কঙ্কালসার, পেট ঢোকা, মস্তকটি বৃহৎ, মস্তকের হাড়ের জোড়গুলি বহুদিন হইতে অযুক্তবস্থায় থাকে, যাহাদের মস্তকে প্রচুর ঘর্ম হয় এবং কোন না কোন প্রকার অস্তিপীড়ায় ভোগে, তাহাদের পক্ষে ইহা একমাত্র মহৌষধ (সাইলিসিয়া)। সত্যই গণ্ডমালা (Scrofulous) ও বালাস্থি বিকৃত (rachitic) ধাতুর রোগীর পক্ষে ইহা মৃত-সঞ্জীবনী সুধাবিশেষ। স্ক্রোফলাধাতু হেতু মেরুদণ্ডের বক্রতাও এই ঔষধের বিশেষ পরিচায়ক লক্ষণ।
৪/ যে সমস্ত শিশু গৌণে হাঁটিতে শিখে ও বিলম্বে কথা বলে।
৫/ শিশুর দন্ত উঠিতে বিলম্ব এবং দন্তাদ্গমকালীন বিবিধ উপসর্গে, যেমন- জ্বর, কাশি, উদরাময়, তড়কা প্রভৃতিতে ইহা অব্যর্থ।
৬/ যে সমস্ত যুবক-যবতী দ্রুত বর্ধিত হয়, অর্থাৎ লম্বা হয়।
৭/ শিশু অতিশয় খিটখিটে ও ভীতচিত্ত।
৮/ শোক, দুঃখ, বিরক্তি ও প্রেম নৈরাশ্যবশতঃ যে সকল পীড়া হয়।
৯/ যাহাদের স্মরণশক্তি অত্যন্ত হ্রাস হইয়াছে, মানসিক পরিশ্রম করিতে অসমর্থ হয় এবং যাহাদের পীড়ার বিষয় চিন্তা করিলেই পীড়ার বৃদ্ধি হয়।
১০/ যাহাদের উৎসাহ উদ্যম একেবারে নিভিয়া যায়, কোন কার্য করিতে ইচ্ছা করে না।
১১/ যাহারা অতিশয় দুর্বল, রক্তহীন, ফ্যাকাশে- তাহাদের যে কোন রোগে টাইফয়েড ইত্যাদি কোন প্রকার রোগ ভোগের পর ক্ষয়ের পূরণার্থে ইহার ব্যবহার আবশ্যক।
১২/ যে সমস্ত স্ত্রীলোক বহু সন্তান প্রসব করিয়া অথবা অধিক দিন ধরিয়া সন্তানকে স্তন্যদানে দুর্বল হইয়া পড়িয়াছেন।
১৩/ রক্তাল্পতা পীড়ার প্রধান ঔষধ, বিশেষতঃ যদি উহা পরিপাক ক্রিয়ার বিশৃঙ্খলাবশতঃ জন্মিয়া থাকে।
১৪/ কোন কারণ ব্যতীত যাহারা ক্রমশঃ শীর্ণ হইয়া পড়িতেছে, তাহাদের পক্ষে ইহা বিশেষ উপযোগী। শিশু উদরপুর্ণ করিয়া আহার করে, তত্রাচ শীর্ণ (marasmus) ইহতে থাকে।
১৫/ যাহাদের অতি সহজেই ঠাণ্ডা লাগে এবং সর্দি হয় (ফেরাম ফস সহ পর্য্যায়ক্রমে)।
১৬/ যক্ষ্মারোগীর অত্যাধিক নৈশঘর্ম, বিশেষতঃ মস্তকে। শরীর ক্রমশঃ শীর্ণ হইতে থাকিলে ইহা অতি সুন্দর ঔষধ।
১৭/ শিরঃপীড়ায় মস্তক বরফের ন্যায় শীতল অনুভব করে এবং কেহ হাত দিলেও ঐরুপ শীতলতা অনুভূত হয়। মস্তকের অস্থিনিচয়ের সংযোগস্থলে অধিকতর বেদনা হয়।
১৮/ ইহা বয়ঃব্রণের খুব ভাল ঔষধ। লাল ব্রণে সমস্ত মুখ পুর্ণ হইয়া যায়।
১৯/ উদরাময়ে সবুজবর্ণ, পিচ্ছিল, তরল, উষ্ণ মল বায়ুসহ নির্গত হওয়া অতিশয় নির্দিষ্ট।
২০/ ভূক্তদ্রব্য সমীকরণের অভাববশতঃ যে কোন পীড়ায় ইহার ব্যবহার স্বতঃসিদ্ধ।
২১/ অজীর্ণ পীড়ায় শীতল পানীয় ও খাদ্য, আইসক্রীম সেবন, সবুজ ও সরস ফল ভক্ষণ এবং গুরুপাক দ্রব্যাদি সহ্য হয় না- খাইলেও পেটকামড়ানি, বমন ও উদরাময়ের বৃদ্ধি হয়। গ্রীস্মকারীন উদরাময় বিশেষ উপযোগী।
২২/ শিশুর দুগ্ধ সহ্য হয় না, পেট কামড়ায় এবং সামান্য মাত্র দুগ্ধ পান করিলেও ছানার ন্যায় জমা দুগন্ধ ও অম্লগন্ধযুক্ত (নেট-ফস) বমন থাকিলে ইহা অব্যর্থ।
২৩/ শিশুরা সর্বদাই খাই খাই করে। বয়স্কদেরও অতি ক্ষধা পরিলক্ষিত হয়।
২৪/ যে সমস্ত বালিকা বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করে, তাহাদের শিরঃপীড়া।
২৫/ ধুম পানের প্রবৃত্তি পরিত্যাগের জন্য ইহার ৫ম শক্তি বিশেষ কার্যকরী।
২৬/ ইহা পিত্তশিলার উৎপত্তি নিবারণের অমোঘ।
২৭/ ইহা গণ্ডগণ্ডের প্রধান ঔষধ।
২৮/ প্রচারক, গায়ক ও বক্তাদিগের অতিরিক্ত স্বরযন্ত্রের চালনাবশতঃ স্বরভঙ্গ (ফেরাম ফস)। অবিরত গলা থাকার দিয়া গলা পরিস্কার করিতে হয়।
২৯/ শিশুর কাশিতে কাশিতে দমবন্ধ হইবার উপক্রম হয়, শ্বাস-প্রশ্বাস ঘন ও ক্ষুদ্র হয়। অত্যন্ত কষ্টকর হুর্পিং কশিতে এবং যখন কাশি কিছুতেই সারিতে চাহে না, তখন ইহার ব্যবহার বাঞ্ছনীয়।
৩০/ ছানির প্রারম্ভাবস্থায় এই ঔষধ ব্যবহার করিলে আর পীড়া বর্ধিত না হইয়া সারিয়া যায়। সমস্ত লক্ষলই দক্ষিণ চক্ষুতে বৃদ্ধি পায়, দক্ষিণ মস্তকেও শিরঃপীড়া উপস্থিত হয়।
৩১/ পলিপাস রোগে ইহা এক প্রধান ঔষধ। নাসিকায় এই রোগ হইলে রোগীর ঘ্রাণশক্তি অতিশয় দুর্বল হয়।
৩২/ ভগ্নাস্থি জোড়া লাগাইতে ইহার অদ্ভুত ক্ষমতা দৃষ্ট হয।
৩৩/ রজোদর্শনকালে বালিকারা অতিশয় শীর্ণ, ভীত ও চঞ্চল স্বভাবের হয়।
৩৪/ যে সমস্ত স্ত্রীলোক রিকেটিক সন্তান প্রসব করে, তাহাদের গর্ভবস্থায় এই ঔষধ ২/১ মাত্রা করিয়া ব্যবহার করিলে ভবিষ্যতে রিকেটিক সন্তান হওয়া দোষ নিবারিত হয় এবং শিশুর অস্থিসকলও পুষ্টি হয়।
৩৫/ পুষ্টিকর আহার্যের অভাবে, অথবা, ভূক্তদ্রব্য সমীকরণের অভাবশতঃ যে সমস্ত বালিকা রক্তহীন ফ্যাকাশে ও দুর্বল হইয়া পড়ে, তাহাদের স্বল্পরজঃ ও কষ্টরজঃ পীড়ায় ইহা বিশেষ উপযোগী। এই অবস্থায় বালিকাদের কার্যে অনুৎসহ এবং ক্লান্তির ভাব দেখা যায়।
৩৬/ ঘন ঘন অথবা বিলম্বিত রজঃস্রাব।
৩৭/ স্ত্রীলোকদিগের অস্বাভাবিক বা পাগল করা কামেচ্ছা এই ঔষধে স্রাস হয়।
৩৮/ জরায়ুর দৌর্বল্য ও শিথিলতাবশতঃ জরায়ুর নির্গমন বা স্থানচ্যুতি এবং তজ্জনিত বিবিধ যন্ত্রণা (ক্যাল্ক ফ্লোর, কেলি ফস)।
৩৯/ শ্বেতপ্রদর, কাশি, প্রমেহ, কানপাকা, চর্মপীড়া ইত্যাদিতে ইহার ২য় সংখ্যক লক্ষণে বর্ণিত স্রাব থাকিলে।
৪০/ যুবকদিগের স্বপ্নদোষ নিবারণে ইহার নিন্মক্রম বিশেষ ক্ষমতাশালী। অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ বা কাম পরিচালনজনিত বিবিধ, কুফলে, এমন কি- মৃগী ইত্যাদি হইলেও ইহার ব্যবহার স্বতঃসিদ্ধ।
৪১/ বহুমুত্ররোগে অতিশয় শীর্ণতা, অদম্য পিপাসা ও ক্ষুধাহীনতা থাকিলে ইহা অতিশয় কার্যকরী।
৪২/ ভগন্দর অন্ত্র করিবার পর যে সমস্ত পীড়া হয়, তাহাতে ইহা উপযোগী। কাশি ও ভগন্দর পর্যায়ক্রমে হ্রাস বৃদ্ধি হয।
৪৩/ গুহ্যদ্বারে স্নায়ুশূল বেদনায়-সেক্রাম অস্থির বেদনা মলত্যাগের সময় হইতে রাত্রিতে শয়নকাল পর্যন্ত থাকে।
৪৪/ ঠান্ডা লাগার জন্য হস্ত পদের নানাস্থানে বেদনা হয়।
৪৫/ লাম্বাগো পীড়া প্রাতঃকালে বৃদ্ধি হইলে অতি উৎকৃষ্ট ঔষধ।
৪৬/ বাতের বেদনা স্থান হইতে স্থানান্তরে চলিয়া বেড়ায় (কেলি সালফ)। বাতক্রান্ত স্থান শীতল ও অসাড় বোধ হয়। বাতের বেদনাজনিত অস্থিরতা রাত্রিতে বৃদ্ধি পায় এবং নড়াচড়া করিলে উপশ্রম প্রাপ্ত হয়। ঠান্ডা লাগিয়া ঘাড়ের পেশীসমূহ কঠিন ও বেদনাক্রান্ত হয়।
৪৭/ এই ঔষধের সর্বপ্রকার পীড়া রাত্রিকালে, শীতলতায়,ঋতু পরিবর্তনে, জলে ভিজিলে ও নড়াচড়ায় বৃদ্ধি।
৪৮/ উষ্ণতায়, চুপচাপ থাকিলে ও গ্রীষ্মকালে সমস্ত পীড়ায়ই হ্রাস প্রাপ্ত হয়। কেবল বাতপীড়ায় নড়াচড়ায় রোগী উপশম প্রাপ্ত হয়। হ্রাস-বৃদ্ধি দৃষ্টে সমস্ত পীড়াতেই ইহা ব্যবহার করা হয়।
ক্যালকেরিয়া ফসফরিকা ঔষধটির বিশেষ বিশেষ পীড়ায় বিশেষ শক্তি ব্যবহার :
রক্তল্পতা ও শ্বাসকাশ পীড়ায় শক্তি, হস্তমৈথূন নিবারণের জন্য এবং বৃদ্ধি স্থগিত হইলে দীর্ঘদিন অন্তর 200X, একমাত্র, দুর্বলতা, স্বল্পরজঃ ব্রেন ফ্যাগ প্রভৃতি ক্ষেত্রে 6X শক্তি, বালিকাদের ব্রদ্ধতালু বন্ধ না হইলে এবং কামোন্মাদ এই দুই প্রকার অবস্থায় 30X ও 200X শক্তি, স্ক্রুফুলা জনিত ক্ষতে 12X শক্তি, এর উপর রক্তহীনতা জনিত শিরঃপীড়ায় 12X, 60X, 200X, দুগ্ধ হ্রাস হইলে 8X আহার্য্যসহ, রিকেট পীড়ায় প্রথমতঃ 2X বা 8X পরে 6X ও 12X, দন্তোদ্গম করিবার জন্য 3X দুগ্ধসহ প্রত্যাহ তিনবার, স্বপ্নদোষ পীড়ায় রাত্রিতে শয়নকালে 3X শক্তি , তামাক সেবন ত্যাগের জন্য 5X এবং দন্তোদ্গমকালীন আক্ষেপ 12X শক্তি বিশেষ ফল প্রদান করে।
ক্যালকেরিয়া ফসফরিকা ঔষধটির অন্যান্য ঔষধের সহিত তুলনা : এই ঔষধটি অনেকটা দেখিতে ক্যালকেরিয়া কার্ব্বের ন্যায়। তবে ক্যালকেরিয়া কার্ব্বে রোগীর দেহ থলথলে ও মোটা, কিন্ত ক্যালকেরিয়া ফসে দেখিতে শীর্ণ। এই ঔষধটি ক্যালকেরিয়া কার্ব্ব
ও ফসফরাস উভয়ের মধ্যবর্তী স্থান গ্রহণ করে। অস্থি পীড়া ও ফিশ্চুলায় ক্যালকেরিয়া ফ্লোর এবং সাইলিসিয়া, সন্ধি পীড়ায় কেলি ফস এবং নেট্রাম মিউর, দন্তক্ষত পীড়ায় ম্যাগ ফস ও সাইলিসিয়া, মৃগীতে ফেরামফ, কেলি ফস ও সাইলিসিয়া, বুহুমূত্রে কেলি ফস, নেট্রাম ফস, অর্শ পীড়ায় ফেরাম ফস, কৃমিতে নেট্রাম ফস, হাঁটু সন্ধিতে রস সঁঞ্চিত হইলে নেট্রাম মিউর সহ তুলনা করিয়া দেখা উচিৎ, ক্যাক্লেরিয়া ফস এবং নেট্রাম মিউর উভয়ের খুব নিকট সম্বন্ধ, তাই রক্তহীনতা ও ক্লোরোসিস রোগে এই দুইটি ঔষধটি প্রধান বিবেচ্য।
ক্যালকেরিয়া ফসফরিকা ঔষধটির ব্যবহার : বালিকাদের বায়ঃব্রনে (বালকদের ক্যালকেরিয়া টিক্রেটা), শারীরিক অতিশয় বর্ধন, অত্যাধিক পাঠ, অতিরিক্ত অনিয়িমিত নিকৃষ্ট ইন্দ্রিয় সঞ্চালন, দুঃখ শোক ভালবাসার আশা ত্যাগের জন্য পীড়া, মন্দ সংবাদ জন্য পীড়া, খিটখিটে স্বভাব বালক ও ছাত্রদিগের শিরঃপীড়া, জলে ভিজিলে ভীত চিত্ত, মুখ তাম্রবর্ণ, বড় বৃন্তযুক্ত পলিবাস, জিহ্বা স্ফীত, সকল প্রকার বাত, বেদনা, সমস্ত সন্ধি ও পেশীতে বেদনা, ঠান্ডা জল বা শীতল বায়ু অথবা শীত ঋতুতে বৃদ্ধি হইলে এবং উক্ত বেদনা, গীস্মকালে আরাম বোধ করিলে কোমর হাঁটু ও বৃদ্ধাঙ্গুলির বাত, পরিশ্রম অনিচ্ছা, শিশুদের শরীরস্থ পেশী সমূহের শুস্কতা, শীর্ণতা, এনিমিয়া, মস্তিস্ক শূন্যতা, ব্রাইট পীড়া, বালকদের ইনফেন্টাইল কলেরা, কেরিয়া, ক্ষয়, দুর্ব্বলতা, দন্তোদ্গমে বিলম্ব, বহুমূত্র, অজীর্ণ, মৃগী, অসাড়ে মুত্র ত্যাগ, ফিশ্চুলা, অস্থিভঙ্গ, গ্লীট, প্রমেহ, শিরঃপীড়া, লিউকোরিয়া, প্রস্রাব সহ ফসফেট নির্গমন, রিকেট, হস্তমৈথুন, স্বপ্নদোষ, ঘাড় টানিয়া ধরা, অন্ডোকোষের স্ফীতি, টনসিলের বৃদ্ধি, জরায়ু নির্গমন, জরায়ু মধ্যে বৃন্তযুক্ত পলিপাস, হিষ্টিরিয়া, নানা প্রকার চর্মপীড়া, শোথ, পেশীশূল বা পেশীর আক্ষেপ প্রভৃতি পীড়ায় ক্যালকেরিয়া ফস ব্যবহারিত হয়।
ক্যালকেরিয়া ফসফরিকা ঔষধটির বিশেষত্ব : সব ধরণের রোগে চিকিৎসার সময় মাঝে মাঝে ২/১ মাত্রা ক্যালকেরিয়া ফস ব্যবহার করা হইলে অন্যান্য ঔষধের ক্রিয়া বৃদ্ধি পায়। সুচির্বাচিত ঔষধে ফল না পাইলে ইহা ব্যবহার করিলে হয় তাহাতে পীড়া উপশমিত হইবে, নতুবা পূনকারায় পূর্ব নির্বাচিত ঔষধ প্রয়োগ করিলে সুফল পাওয়া যাইবে। ইহা ম্যাগ ফসের কার্য্যপূরক ঔষধ।
ক্যালকেরিয়া ফসফরিকা ঔষধটির সেবন বিধি : প্রাপ্ত বয়স্কারা ৫টি করে ট্যাবলেট দিনে ৩ অথবা ৪ বার। অপ্রাপ্ত বয়স্করা ৩টি করে ট্যাবলেট দিনে ৩ অথবা ৪ বার কুসুম কুসম গরম পানির সহিত সেবন করতে হবে অথবা রেজিষ্টার্ড হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের পরামর্শে সেনব করুন।
সমাপ্ত
আরোগ্য হোমিও হল এডমিন : এ ওয়েব সাইটের মুল উদ্দেশ্যে হচ্ছে স্বাস্থ্য সম্পের্ক কিছু দান করা বা তুলে ধরা। সাধারণ মনুষের উপকার হবে। বিশেষ করে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক ও ছাত্ররা উপকৃত হবেন। এ ওয়েব সাইটে থাকছে পুরুষ স্বাস্থ্য বা যৌনস্বাস্থ্য, গাইনি স্বাস্থ্য, শিশুস্বাস্থ্য, মাদার টিংচার, সিরাপ, বম্বিনেশন ঔষধ, বাইকেমিক ঔষধ, হোমিওপ্যাথিক বই, ইউনানি, হামদর্দ, হারবাল, ভেজষ, স্বাস্থ্য কথা ইত্যাদি। এই ওয়েব সাইটটি কে কোন জেলা বা দেশ থেকে দেখছেন “লাইক – কমেন্ট” করে জানিয়ে দিন। যদি ভালো লাগে তবে “শেয়ার” করে আপনার বন্ধুদের জানিয়ে দিন।