বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:১১ অপরাহ্ন

কেলি মিউরিয়েটিকাম (Kali Muriaticum) বায়োকেমিক বই

আরোগ্য হোমিও হল / ২২৫ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশ কালঃ রবিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২২, ৬:৪৬ পূর্বাহ্ন

কেলি মিউরিয়েটিকাম (Kali Muriaticum)

সাধারণ নাম – ক্লোরাইড অব পটাশ

ভিন্ন নাম – পটাশিয়াম ক্লোরাইড, কেলি ক্লোরেটাম।

কেলি মিউরিয়েটিকাম ঔষধটির ক্রিয়া স্থান – বায়োকেমিষ্ট্রি বিজ্ঞান মতে পটাশ ক্লোরাইড ছাড়া কোনও সৌত্রিক পদার্থ প্রস্তুত হইতে পারে না। রক্তে যদি এই লবণ ঠিকমত না থাকে, তাহা হইলে ঐ সৌত্রিক পদার্থ রক্তে সম্পূর্ণভাবে এবং প্রয়োজন মত দ্রবীভূত থাকে না। সৌত্রিক পদার্থ প্রস্তুত হইলে অণ্ডলার মধ্যে যে ফাইব্রিনো প্লাষ্টিক নামক পদার্থ থাকে, তহার খুবই দরকার। কিন্ত ঐ দ্রব্যের সঙ্গে ক্লোরাইড অব পটাশ মিশ্রিত না হইলে সৌত্রিক পদার্থ বা ফাইব্রিন প্রস্তুত হয় না। ডা: শূসলারের মতে রক্তে এই লাবণিক দ্রব্যের অভাব হইলে রক্তস্থ ফাইব্রিন নামক পদার্থ রক্ত হইতে বাহির হইয়া যায়। শারীরিক রক্তে এই লাবণিক পদার্থ না থাকিলে মস্তিস্কের নূতন পরমানু সকল প্রস্তুত হইতে পারে না। রক্ত কণিকা, পেশী, স্নায়ু মস্তিস্ককোষ ও কোষমধ্যস্থ তরল পদার্থ মধ্যে ইহা দেখিতে পাওয়া যায়।

পুরা, প্রভৃতি প্রদাহ হইতে যে সিরাম রসস্রাব হয় তাহাতে প্রচুর পরিমাণে ফাইব্রিণ দেখা যায়। সর্বপ্রকার প্রদাহিক পীড়ার ক্ষতের স্রাবেই ইহার অস্থিত্ব পরিদৃষ্ট হয়। ফেরামের দ্বারা যেমন রক্তে অক্সিজেনের অভাব হয়, তদ্রুপ উক্ত ফাইব্রিন নির্গত হইয়া গেলেও অক্সিজেনের অভাব হইয়া থাকে। ফেরাম ফসকেলি মিউরের ভিতর এই প্রকার সাদৃশ্য বর্তমান থাকার জন্য সর্ব প্রকার পীড়ার প্রদাহিক অবস্থায় অনেক সময় উভয় ঔষধ পর্য্যয়ক্রমে দিবার প্রয়োজন হয়। ফেরাম ফস যেরুপ প্রদাহিক পীড়ার প্রথমাবস্থায় উপযোগী, কেলি মিউরও তদ্রুপ প্রদাহিক পীড়ার দ্বিতীয়াবস্থা উপযোগী।

আরও পড়ুন –  বৃদ্ধি- উপশ্রম (বায়োকেমিক রেপার্টরি)

ফুসফুস আবরণ ও পেরিটোনিয়াম অর্থাৎ অস্ত্রাচ্ছাদন আদি সিরাম গর্তের প্রদাহ হইলে তাহা হইতে যে রক্তস্রাব হয়, তথায় ফাইব্রিন যথেষ্টে পরিমাণে থাকে এবং শ্লৈম্মিক ঝিল্লীর প্রদাহের পর তত্রত্য রক্তস্রাব মধ্যে যথা – ক্রুপ, ডিপথিরিয়া, সর্দ্দি, ফুসফুস প্রদাহের রস মধ্যে ফাইব্রিন লক্ষিত হয়।

অপকৃষ্ট বীজাদিতে টিকা দেওয়ার জন্য অথবা টীকা দেওয়ার পর যে সকল চর্মপীড়া হয় তাহাতে কলি মিউর প্রধান ঔষধ।

পাংশু বা শ্বেতবর্ণ ময়লাযুক্ত জিহ্বা কেলি মিউরের অভাব জ্ঞাপক উৎকৃষ্ট লক্ষণ। যে কোন স্থান হইতেই স্রাব নিঃসৃত হইক না কেন, যদি ঐ স্রাব গাঢ় শ্বেতবর্ণ, আঠাযুক্ত ও সৌত্রিক পদার্থ যুক্ত হয়, তাহা হইলে ইহা বিশেষ ফলপ্রদ। চর্ম হইতে ময়দার গুঁড়ার ন্যায় পদার্থ উঠিলে এই ঔষধের বিষয় স্মরণ করা কর্তব্য। ডিপথিরিয়া, আমাশয়, উদরাময়, সর্দ্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি যে কোন পিড়ায় উক্ত প্রকার জিহ্বা ও স্রাব নিঃসরন হইলে ইহা উপকারী। সর্ব প্রকার গ্রন্থির কোমল স্ফীতিতে ও প্রদাহিত স্থানের রস সঞ্চয় বশতঃ স্ফীতি জন্মিলে কেলি মিউর উপকারী। তবে শক্ত ও কঠিন স্ফীতি হইলে ক্যাল্ক ফ্লোর আরোগ্য করে।

ডা: ক্যারে বলেন, যে কোন স্থান দগ্ধ হইয়া তথায় ফেস্কা হইলে কেলি মিউরের তাহার প্রধান ঔষধ। তিনি বলেন, উত্তাপ দ্বারা সেখানকার সৌত্রিক পদার্থ সকল পুরিয়া নষ্ট হয়। সেজন্য তথায় ফোস্কা হয়। কেলি মিউর প্রদানে তথাকার অণ্ডলালাসহ নূতন মৌত্রিক পদার্থ প্রস্তুত হইয়া তথাকার অভাব পূরণ করিয়া ফোস্কা আরোগ্য করে।

যকৃতের উপর এই ঔষধের তীব্র ক্রিয়া দৃষ্ট হয়। কেলি মিউরের কর্ণের নানা প্রকার পীড়ারও ঔষধ। বিশেষতঃ কানের সর্দ্দি প্রভৃতির দ্বিতীয় বা শেষাবস্থায় বিশেষ উপকারী।

কেলি মিউরিয়েটিকাম ঔষধটির বিশেষত্ব : এই ঔষধের বিশেষত্ব এই যে, সর্ব প্রকার প্রদাহিক পীড়ার দ্বিতীয়াবস্থায় প্রদাহ স্থান যখন স্ফীতি হয় এবং যে সকল শ্লৈম্মিক ঝিল্লী হইতে শ্বেতবর্ণ, সৌত্রিক আঠাল প্রকৃতির স্রাব নিঃসৃত হয়, তাহাতে ইহা অব্যর্থ। জিহ্বা সাদা বা পাংশু বর্ণ লেপাবৃত হওয়ায় ইহাতে নিদ্দিষ্ট এবং যে পীড়াই হোক না কেন এই প্রকার জিহ্বা লক্ষণ থাকিলে কেলি মিউর প্রয়োগ বিধেয়। চর্মে ফোস্কা পড়াও ইহার আর একটি বিশেষত্ব। সব জাতীয় পীড়াতেই সঞ্চালনে বৃদ্ধি ইহার সিদ্ধিপদ লক্ষণ।

আরও পড়ুন –  মা’জুন মুচরস (লিকুরিন)-Ma’jun Moochras (Likurin) শ্বেতপ্রদর রোধে কার্যকরী

কেলি মিউরিয়েটিকাম ঔষধটির পরিচায়ক লক্ষণাবলী :

১/ সর্বপ্রকার প্রদাহিক পীড়ার দ্বিতীয়াবস্থায় যখন প্রদাহিত স্থান স্ফীত এবং নিঃসৃত স্রাবের বর্ণ গাঢ় শ্বেত বা আঠাল ও সৌত্রিক পদার্থযুক্ত হয়, তখন ইহা অত্যুৎকৃষ্ট।

২/ যে সমস্ত পীড়ায় জিহ্বা শ্বেত বা পাংশুবর্ণ ময়লা দ্বারা আবৃত থাাকিবে।

৩/ মস্তিস্কাবরক-ঝিল্লি প্রদাহ (meningitis) ও মস্তিস্কে জল সঞ্চয় (hydrocephalus) রোহে প্রদাহের দ্বিতীয়াবস্থায় রসসঞ্চয় হইবার পূর্বে প্রদত্ত হইলে যেরুপ জল জমে না, আবার জল জমিয়া গেলেও তরুপ এই ঔষধ প্রয়োগ দ্বারা শোষিত হইয়া যায়।

৪/ সর্বপ্রকার চক্ষুপীড়া ১ম লক্ষণে বর্ণিত স্রাব থাকিলে। কর্নিয়ায় ফোসকা পড়ে।

৫/ কোমল ছানি ও আঘাত লাগাবশতঃ ছানিতে ইহা উৎকৃষ্ট।

৬/ কর্ণের বেদনা সহ কর্ণমূল স্ফীত এবং তৎসহ ১ম ও ২য় লক্ষণে বর্ণিত লক্ষণ থাকিলে।

৭/ মধ্যেকর্ণ বা ইউষ্টেসিয়ান টিউবের সর্দ্দি ও স্ফীতিবশতঃ বধিরতায় এই ঔষধ নিদিষ্ট জিহ্বার কর্ণ (২য় লক্ষণ) থাকিলে ফেরাম ফসের সহিত পর্য্যায়ক্রমে।

৮/ ইহা ডিফথিরিয়া রোগের প্রধান ঔষধ। টনসিল প্রদাহেও উত্তম। কেলি মিউর নিদিষ্ট জিহ্বার বর্ণ (২য় লক্ষণ) থাকিলে ফেরাম ফসের সহিত পর্য্যায়ক্রমে।

৯/ অজীর্ণ পীড়ায় জিহ্বার লক্ষণে সহিত সাদৃশ্য থাকিলে তৈলাক্ত দ্রব্য ও গুরুপাক খাদ্য সহ্য হয় না।

১০/ সর্বপ্রকার যকৃৎপীড়ায় জিহ্বার বর্ণের সহিত সাদৃশ্য (২য় লক্ষণ দ্রষ্টব্য) থাকিলে। কোষ্ঠবদ্ধ এবং সাদা বা ফ্যাকাশে মল দৃষ্ট হইলে। প্রস্রাবের সহিত শ্বেতবর্ণের তলানি পড়ে। যকৃৎ প্রদাহের দ্বিতীয়াবস্থায়। দক্ষিণ স্কন্ধে বেদনা।

আরও পড়ুন –  আর ৫৩ (ব্রণ ভালগারিস এবং পিম্পলস)

১১/ তৈলাক্ত বা গুরুপাক দ্রব্য ভক্ষণজনিত উদরাময়। পিত্তস্রাবের অল্পতাবশতঃ সাদা, ফ্যাকাশে, কর্দমবৎ ও হরিদ্রাভ তরল।

১২/ রক্তমাশয় রোগের প্রধান ঔষধ। উদরে কর্তনবৎ তীব্র বেদনা। অত্যান্ত কুন্থন সহ পুনঃপুনঃ মলত্যাগ। কেবল রক্ত অথবা শ্বেতবর্ণের শ্লেম্মা ভেদ।

১৩/  যে কোন পীড়াই হউক না কেন, যদি বমনে চাপ চাপ কাল রক্ত অথবা গাঢ় শ্বেতবর্ণের শ্লেম্মা নির্গত হয়। জিহ্বা শ্বেত, অথবা পাংশুটে।

১৪/ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শ্বেতবর্ণের সূত্রবৎ কৃমি ও তজ্জনিত গুহ্যদ্বার চুলকানি (নেট্রাম ফস সহ পর্য্যায়ক্রমে)।

১৫/ ইহাই প্রমেহপীড়ার প্রধান ঔষধ (নেট্রাম ফস) ১ম লক্ষণে বর্ণিত লক্ষণ থাকিলে যাবতীয় মুত্রপীড়ায় ব্যবহার্য। প্রমেহ পীড়ায় হঠাৎ স্রাব রুদ্ধ হইয়া অণ্ডোকোষ প্রদাহিত হইলে।

১৬/ সফট স্যাঙ্কার পীড়ার প্রধান ঔষধ। ১ম লক্ষণে বর্ণিত লক্ষণ থাকিলে। বাগী কোমল ও স্ফীত হইলে।

১৭/ সর্বস্থানের গ্রন্থিপীড়ার যে পর্যন্ত গ্রন্থিসমূহ প্রস্তরবৎ কঠিন না হয়।

১৮/ হঠাৎ ঠাণ্ডা লাগা বা জলে ভিজিবার জন্য ঋতুবন্ধ। ঠাণ্ড লাগিয়া কষ্টরজঃপীড়া। ঋতুর রক্তে কালচে লাল অথবা কাল চাপ চাপ রক্ত। অধিক বিলম্বে অথবা শীঘ্র শীঘ্র ঋতুস্রাব।

১৯/ শ্বেতপ্রদরের ১ম লক্ষণে বর্ণিত লক্ষণ থাকিলে।

২০/ সূতিকা জ্বর ও দুগ্ধ জ্বরের প্রধান ঔষধ। প্রথম হইতেই ২/১ মাত্রা করিয়া ব্যবহার করিলে কোনও কুফল হয় না।

২১/ স্ফোটক, ব্রণ, কার্বঙ্কল, ইরিসিপেলাস, আঙ্গুলহাড়া ইত্যাদি পীড়ায় প্রদাহের দ্বিতীয়াবস্থায় যখন প্রদাহিত স্থানে রস জমিয়া স্ফীত হয়।

২২/ ইহ ঘুংড়ি (croup) ও হুপিং কাশির প্রধান ঔষধ (আক্ষেপিক হইলে ম্যাগ ফসই প্রধান ঔধধ)। এই ঔষধে প্রয়োগ করিলে গলমধ্যে সূত্রবৎ শ্লেম্মা সঞ্চিত হইতে পারে না।

২৩/ পাকস্থলী অথবা যকৃৎ বিকৃতিবশতঃ হাাঁপানি। জিহ্বা শ্বেতবর্ণ এবং শ্বেতবর্ণের আঠাল চটচটে শ্লেম্মা অতি কষ্টে কাশিয়া ফেলিতে হয়।

২৪/ বায়ুনলী ও শ্বাসনলী সংক্রান্ত যাবতীয় কাশির দ্বিতীয়াবস্থায় ১ম লক্ষণে বর্ণিত শ্লেম্মা নিঃসরণ ও ২য় লক্ষণে বর্ণিত  জিহ্বায় বর্ণ থাকিলে। অতিশয় কষ্টকর ও খুকখুকে কাশি (ফেরাম ফস সহ পর্য্যয়ক্রমে)।

২৫/ হৃৎপিণ্ডের আবরক-ঝিল্লি প্রদাহের দ্বিতীয়াবস্থায় অতি উৎকৃষ্ট।

২৬/ বাতজ্বর সহ আক্রান্ত স্থানে রসাদি সঞ্চিত হইয়া স্ফীত ও বেদনাযুক্ত হইলে। তরুণ পীড়ায় অধিক বেদনা হইলে। ফেরাম ফস সহ পর্য্যায়ক্রমে। বাতক্রান্ত স্থান সঞ্চালনে, রাত্রিকালে এবং শয্যার উত্তাপে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। ঘাড় হইতে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত বিদ্যুবৎ বেদনা।

২৭/ একজিমা বা বিখাউজে ১ম লক্ষণে বর্ণিত লক্ষণ থাকিলে উৎকৃষ্ট। ক্ষতস্থা হইতে ময়দার গুঁড়ার ন্যায় শুস্ক শ্বেতবর্ণের চূর্ণ বাহির হয়। ফোসকার ন্যায় একজিমা।

২৮/ বায়ঃব্রণে (acne) সাদা ভাতের ন্যায় পদার্থ বাহির হইলে।

২৯/ খারাপ বীজে টিকা দেওয়ার কুফলবশতঃ যে কোন প্রকার চর্মীড়া। ফোস্কাযুক্ত বিসর্প।

আরও পড়ুন –  বায়ো-কম্বিনেশন ২০ (চর্ম, ত্বক, ব্রণ, হারপিস)

৩০/ প্লেগের প্রধান ঔষধ, বিশেষতঃ স্ফীতি বর্তমানে।

৩১/ সকল প্রকার বসন্ত পীড়ার প্রধান ঔষধ। প্রথমাবস্থায় এই ঔষধ ব্যবহৃত হইলে কোন প্রকার কুফল না হইয়াই পীড়া আরোগ্য হয়।

৩২/ হামের দ্বিতীয়াবস্থায় প্রধান ঔষধ। হামের পরবর্তী কুফল জনিত সাদা বা ফ্যাকাশে রংয়ের উদরাময়, বধিরতা, কাশি অথবা কোন গ্রন্থি স্ফীত হইলে।

৩৩/ যক, মূত্রযন্ত্র ও হৃৎপিণ্ডের বিকৃতিবশতঃ শোথ। শোথাক্রান্ত স্থান উজ্জ্বল শ্বেতবর্ণ। শোথের জল, জিহ্বার ও প্রস্রাবের বর্ণ শ্বেত।

৩৪/ কোন স্থানে আঘাত লাগা, মচকাইয়া যাওয়া অথবা কাটিয়া যাইবার দ্বিতীয়াবস্থায় যখন আক্রান্ত স্থানে রস ও রক্তাদি জন্মিয়া স্ফীত হয়।

৩৫/ কোন স্থান দগ্ধ হইবার দ্বিতীয়াবস্থায় যখন ফোসকা পড়ে, তখন উৎকৃষ্ট।

৩৬/ ইহা মৃগীরোগের প্রায় অমোঘ ঔষধ। চর্মরোগাদি বসিয়া যাইবার ফলে পীড়া উদ্ভব। পুনরাক্রমণের গতিরোধ করিবার জন্য আক্রমণান্তে সেব্য। লোকিয়া স্রাব বন্ধ হইয়া সূতিকাবস্থায় ধনুষ্টঙ্কার।

৩৭/ টাইফয়েড জ্বরের প্রধান ঔষধ (প্রথমাবস্থায় ফেরাম ফস সহ পর্য্যায়ক্রমে) । জিহ্বা শ্বেত বা কটাবর্ণের লেপাবৃত। পাতলা, হরিদ্রাভ ফ্যাকাশে বা সাদাটে মলস্রাব।

৩৮/ সর্বপ্রাকার জ্বরের দ্বিতীয়াবস্থায় জিহ্বার লক্ষণ থাকিলে। প্রায়ই পুরাতন রোগীদের যকৃতাদি বিকৃতি থাকিলে ব্যবহৃত হয়। তরুণ জ্বরে বড় একটা প্রয়োজন হয় না। ইহাই আরক্ত জ্বরের প্রধান ঔষধ।

তৈলাক্ত ও গুরুপাক দ্রব্য ভক্ষণে যাবতীয় পেটের পীড়ায় উৎপত্তি বা বৃদ্ধি। সর্বপ্রকার বেদনারই সঞ্চালনে বৃদ্ধি। বাতব্যাধি শয্যার উত্তাপেও বৃদ্ধি হয়।

কেলি মিউরিয়েটিকাম ঔষধটির বৃদ্ধি :

তৈলাক্ত  খাদ্য, মৃত, গুরুপাক  দ্রব্য ভক্ষণে পেটের পীড়া সঞ্চালনে বেদনা, বিছানার উত্তাপে, তীব্র বায়ুর আঘ্রাণ, তীক্ষ্ণ তেজস্কর আলো।

কেলি মিউরিয়েটিকাম ঔষধটির উপশম :

মস্তিস্ক উত্তপ্ত, শুস্ক, উত্তপ্ত স্বেদ ও স্থির থাকিলে।

কেলি মিউরিয়েটিকাম ঔষধটির অনুপুরক ঔষধ :

কেলি মিউর ব্যবহারের পর অনেক সময় পীড়া সম্পুর্ণ আরোগ্য না হইলে পীড়ার অবশিষ্ট লক্ষণ সমুহ আরোগ্য করিতে কেলি সালফের আবশ্যক। প্রদাহিক পীড়া সকল ক্ষেত্রেই ফেরাম ফসের পর কেলি মিউর প্রয়োজন হয়।

কেলি মিউরিয়েটিকাম ঔষধটির শক্তি :

সব সময় 3X এবং 6X শক্তি ব্যবহৃত হয়, তবে পুরাতন পীড়ায় 12X, 24X, 30X ও 200X ব্যবহৃত হয়।

আরও পড়ুন –  বায়ো কম্বিনেশন ১১ (জ্বর)

কেলি মিউরিয়েটিকাম ঔষধটি যে সকল পীড়ায় ব্যবহৃত হয় :

ব্রঙ্কােইটিস, সর্দ্দি, বৃদ্ধঙ্গুলির প্রদাহ ও স্ফীতি, পীকার পর চর্মপীড়া, ক্যাটারাক্ট, স্ফোটক, জ্বর, প্লেগ, আমাশয়, শোথ, ডিপথিরিয়া, নিউমোনিয়ার দ্বিতীয়াবস্থা, একনি, বাঘী, কোন স্থান গদ্ধা হইলে, ছানি, চিলব্রেন, কোষ্ঠবদ্ধ, উদরাময়, কর্ণপীড়া, একজিমা, ইউষ্টেকিয়ান নলের পীড়া, চক্ষু পীড়া, গ্রন্থি স্ফীতি, অর্শ, হৃদপিণ্ডের পীড়া, নখবৃদ্ধি, কামলা, সন্ধিতে করকরানি শব্দ, শ্বেত প্রদর, প্রমেহ, বাত, হাম বসন্ত, তরুণ ও পুরাতন উপদংশ পীড়া, আঁচিল, টাইফয়েড জ্বর, যকৃত ও প্লীহা বিবৃদ্ধি, উদরে জল সঞ্চয়, স্বরভঙ্গ, কার্ব্বংকল প্রভৃতিতে ইহা ব্যবহৃত হয়।

ক্যাল্লেরিয়া ফস, ক্যাক্লেরিয়া ফ্লোর ও ফেরাম ফসের পর ইহার ব্যবহার হয়। কেলি মিউরের পর কেলি সালফ ও ক্যাক্লেরিয়া সালফ ভাল ঔষধ। সাইলিসিয়ার পূর্বে ইহা ব্যবহৃত হয়।

কেলি মিউরিয়েটিকাম ঔষধটির তুলনা :

প্রদাহিক পীড়া দ্বিতীয়াবস্থায় কেলি মিউরের ন্যায় ব্রায়োনিয়া, মার্কুরিয়াস, পালসেটিলা, সালফার প্রভৃতি ঔষধ ব্যবহৃত হয়। কেলি মিউরের অনেক লক্ষণই ব্রায়োনিয়াতে দেখা যায়। তবে ব্রায়োনিয়া অপেক্ষা কেলি মিউর অনেক গভীর ক্রিয়াশীল ঔষধ। সিফিলিস পীড়ায় কেলি মিউরের পর কেলি সালফসাইলিসিয়া ব্যবহৃত হয়। প্রায়ই কেলি মিউরের পর ক্যাল্কেরিয়া সালফ ব্যবহৃত হয়, আবার কেলি মিউরের পূর্বে প্রায়ই ফেরাম ফস প্রয়োগ করা হয়।

কেলি মিউরিয়েটিকাম ঔষধটির মন্তব্য :

ডা: শুসলারের মতে কেলি মিউরের কার্য্য খুব দৃঢ় ও স্থায়ী। ইহা সেবনে নানা প্রকার পীড়া সমূলে বিনষ্ট হয়। অন্যান্য ঔষধের ক্রিয়া করার পথও ইহা সেবনে পরিস্কার হয়। তাই অনেক পীড়ায় মাঝে মাঝে ইহা ব্যবহার করা উচিত।

কেলি মিউরিয়েটিকাম ঔষধটির  প্রমেহ পীড়ায় ইহাই প্রধান ঔষধ বিশেষতঃ

যখন প্রমেহ পীড়া সহ স্ফীতি বর্তমান থাকে। সেখানে স্ফীতি বর্তমান থাকে না যেরুপ প্রমেহ পীড়ায় নেট্রাম ফস প্রধান ঔষধ। এই ঔষধটি সর্দি, ক্রুপ, ডিপথিরিয়া প্রভৃতি স্রাব আরোগ্য করিয়া থাকে। সিরাস ঝিল্লীর প্রদাহের দ্বিতীয়াবস্থায় যখন চটচটে স্রাব নিঃসৃত হইতে থাকে, অথবা যখন তাহা শুস্ক হইয়া এক প্রকার সাদা সাদা গুঁড়া পদার্থ দেখা যায়। সেই সকল ক্ষেত্রেই কেলি মিউর সেবন ও বাহ্যিক ব্যাবহার প্রয়োজন।

কেলি মিউরিয়েটিকাম ঔষধটির সেবন বিধি : প্রাপ্ত বয়স্কারা ৫টি করে ট্যাবলেট দিনে ৩ অথবা ৪ বার। অপ্রাপ্ত বয়স্করা ৩টি করে ট্যাবলেট দিনে ৩ অথবা ৪ বার কুসুম কুসম গরম পানির সহিত সেবন করতে হবে অথবা রেজিষ্টার্ড হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের পরামর্শে সেনব করুন।

সমাপ্ত

আরোগ্য হোমিও হল এডমিন : এ ওয়েব সাইটের মুল উদ্দেশ্যে হচ্ছে স্বাস্থ্য সম্পের্ক কিছু দান করা বা তুলে ধরা। সাধারণ মনুষের উপকার হবে। বিশেষ করে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক ও ছাত্ররা উপকৃত হবেন। এ ওয়েব সাইটে থাকছে পুরুষ স্বাস্থ্য বা যৌনস্বাস্থ্য, গাইনি স্বাস্থ্য, শিশুস্বাস্থ্য, মাদার টিংচার, সিরাপ, বম্বিনেশন ঔষধ, বাইকেমিক ঔষধ, হোমিওপ্যাথিক বই, ইউনানি, হামদর্দ, হারবাল, ভেজষ, স্বাস্থ্য কথা ইত্যাদি। এই ওয়েব সাইটটি কে কোন জেলা বা দেশ থেকে দেখছেন “লাইক – কমেন্ট” করে জানিয়ে দিন। যদি ভালো লাগে তবে “শেয়ার” করে আপনার বন্ধুদের জানিয়ে দিন।


এ জাতীয় আরো খবর.......
Design & Developed BY FlameDev